ময়মনসিংহের ত্রিশালে জুবায়েদ আহমেদ (৩১) নামে এক মোটরসাইকেল চালককে ভাড়া করে নিয়ে হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতরারের পাশাপাশি নিহত চালকের মোটরসাইকেলটিও উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (০৯ জানুয়ারি) পিবিআই থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- নাজমুল ইসলাম (৩০), আবুল কাশেম ওরফে সোনা মিয়া (৫৫), আব্দুল আজিজ ওরফে আনিছ (২৪)।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পিবিআই জানিয়েছে, গত ৩০ ডিসেম্বর সকালে ত্রিশাল উপজেলার বৈলর ইউনিয়নের বৈলর কামারপাড়া এলাকার একটি পুকুরপাড়ে অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তির মরদেহ পড়ে থাকার খবর পায় পিটিআই। পরে পিবিআইয়ের ক্রাইম সিন ইউনিট ডিজিটাল ফিঙ্গার প্রিন্টের মাধ্যমে ওই ব্যক্তির পরিচয় শনাক্ত করে। নিহত জুবায়েদ আহমেদ নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ থানার সুয়াইর ইউনিয়নের বাসিন্দা সামাদ তালুকদারের ছেলে। এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই আজহারুল ইসলাম বাদী হয়ে ত্রিশাল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
পিবিআই আরও জানায়, মামলা হওয়ার পর পিবিআইয়ের এডিশনাল আইজিপি মো. মোস্তফা কামালের তত্ত্বাবধানে ও ময়মনসিংহ জেলার পুলিশ সুপার মো. রকিবুল আক্তারে সহযোগিতায় উপ-পরিদর্শক (এসআই) অমিতাভ দাস তদন্ত শুরু করেন। এরপর তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় মাত্র ৯ দিনের মধ্যেই হত্যাকাণ্ডে জড়িত আসামিদের পরিচয় শনাক্ত করেন তিনি।
গত সোমবার (৭ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে জামালপুর বকশীগঞ্জের বাট্টাজোড় এলাকা থেকে খুনের ঘটনায় জড়িত নাজমুল ইসলাম, সোনা মিয়া ও আনিছকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের দেখানো ও শনাক্ত মতে নিহত যুবকের মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতার ব্যক্তিদের মঙ্গলবার (৮ জানুয়ারী) আদালতে সোপর্দ করা হলে দুজন ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।
পিবিআইয়ের ময়মনসিংহ জেলার পুলিশ সুপার মো. রকিবুল আক্তার জানান, চাঞ্চল্যকর ও ক্লুলেস এই হত্যা মামলার আসামি নাজমুলের বাড়ি ত্রিশালের বৈলরে। দীর্ঘ পাঁচ-ছয় বছর ধরে তিনি টঙ্গীতে ওয়েলডিংয়ের কাজ করতেন। নিহত জুবায়েদের বাড়ি নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ। তিনি মিরপুরের শিয়ালবাড়ী থেকে বাইক রাইডার হিসেবে কাজ করতেন। গত ২৯ ডিসেম্বর বিকেলে জুবায়েদ ভাড়ার জন্য টঙ্গী স্টেশন রোডের মাথায় দাঁড়ালে সেখানে নাজমুলের সঙ্গে দেখা হয়। নাজমুল টঙ্গী থেকে ময়মনসিংহ শহরে আসা-যাওয়ার কথা বলে জুবায়েদের মোটরসাইকেল ভাড়া করেন।
পুলিশ সুপার আরও জানান, বৈলরে পৌঁছানোর পর নাজমুল তার চাচাতো ভাইয়ের কাছ থেকে পাওনা টাকা নেয়ার কথা বলে জুবায়েদকে নিয়ে ঘটনাস্থলে যায়। একপর্যায়ে নাজমুল বাইক রাইডার জুবায়েদের গলায় থাকা চাদর পেঁচিয়ে তাকে হত্যা করেন। পরে জুবায়েদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ও মোটরসাইকেল নিয়ে চলে যান নাজমুল। মোবাইলটি ধানিখোলা বাজারে খোকন মেকারের কাছে ২০০ টাকায় বিক্রি করেন আর মোটরসাইকেল জামালপুরের বকশীগঞ্জ থানাধীন বাট্টাজোড় এলাকায় পরিচিত ব্যক্তি সোনা মিয়ার কাছে বিক্রি করেন। সোনা মিয়া সেই মোটরসাইকেলটি ভাতিজি জামাই আনিছের হেফাজতে রাখেন।
এআই