আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে আটকা দুই নভোচারীকে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনতে অভিযান শুরু করেছে মার্কিন প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্কের মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্স। ড্রাগন ক্যাপসুল নামে একটি মহাকাশযান পাঠানো হয়েছে যা শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) ফ্লোরিডার কেপ ক্যানাভেরাল থেকে উৎক্ষেপণ করা হয়েছে।
কিন্তু তাদের বহনকারী মহাকাশযানটিতে ত্রুটি দেখা দেয়ায় মহাকাশে আটকে পড়েন দুই নভোচারী। স্টারলাইনার মহাকাশযান মেরামতের বিভিন্ন উদ্যোগ ব্যর্থ হয়। ফলে অনিশ্চিত হয়ে পড়ে প্রত্যাশিত সময়ের মধ্যে তাদের প্রত্যাবর্তন।
গত প্রায় চার মাস ধরে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে পৃথিবীতে ফেরার অপেক্ষায় দিন কাটছে সুনিতা উইলিয়ামস ও বুচ উইলমোরের। এবার তাদেরকে ফেরাতে ড্রাগন ক্যাপসুল মহাকাশযান পাঠিয়েছে ইলন মাস্কের মালিকানাধীন স্পেসএক্স।
নাসার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যে বোয়িং স্টারলাইনার মহাকাশযানটিতে করে সুনিতা ও উইলমোর আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (আইএসএস) গিয়েছেন, সেটি ‘কোনো নভোচারী ছাড়াই’ পৃথিবীতে ফিরে আসবে।
সুনিতা ও উইলমোরকে নিয়ে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে যাওয়ার সময়ই স্টারলাইনার মহাকাশযানটিতে বেশ কিছু গোলযোগ দেখা দেয়। যেমন সেটিতে ফুটো হয়ে হিলিয়াম গ্যাস ছড়িয়ে পড়ে। ইঞ্জিনেও গোলযোগ দেখা দেয়।
গত ৫ জুন মার্কিন উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িংয়ের তৈরি স্টারলাইনার মহাকাশযানে চড়ে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে যান নাসার দুই নভোচারী সুনিতা উইলিয়ামস ও বুচ উইলমোর। আট দিনের মধ্যেই তাদের পৃথিবীতে ফিরে আসার কথা ছিল।
গত বৃহস্পতিবারই (২৬ সেপ্টেম্বর) মহাকাশযানটি মহাকাশে উৎক্ষেপণ করার কথা ছিল। কিন্তু হারিকেন হেলেনের কারণে উৎক্ষেপণ সময় পিছিয়ে দেয়া হয়।
শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকালে ক্যাটাগরি ৪ হারিকেন হিসেবে ফ্লোরিডার বিগ বেন্ড এলাকায় আঘাত হানে হারিকেন হেলেন। এরপর উত্তর জর্জিয়া হয়ে টেনেসি ও ক্যারোলিনার ওপর দিয়ে যাওয়ার সময় ধ্বংসযজ্ঞ চালায়।
আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় শনিবার উৎক্ষেপণ করা হয় ড্রাগন ক্যাপসুল। মহাকাশযানটিতে রয়েছেন নাসার নভোচারী নিক হেগ ও রাশিয়ান নভোচারী আলেকজান্ডার গরবুনভ। তবে এতে সুনিতা উইলিয়ামস ও বুচ উইলমোরের জন্য আরও দুটি আসন রয়েছে।
মহাকাশ স্টেশনে আটকা দুই নভোচারীকে নিয়ে ফিরতে ড্রাগন ক্যাপসুলের কয়েক মাস সময় লেগে যেতে পারে। এটি আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে পৃথিবীতে ফিরে আসবে বলে জানানো হয়েছে।
নাসার নভোচারী সুনিতা উইলিয়ামস ও বুচ উইলমোর স্টারলাইনারের প্রথম যাত্রী হিসেবে মহাকাশে ভ্রমণ করছেন। তারা এখন আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে অবস্থানকারী অন্য নভোচারীদের সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের গবেষণামূলক কাজ সম্পন্ন করেছেন।
এবি