উপমহাদেশের বিখ্যাত সংগীতশিল্পী রাহাত ফতেহ আলী খান। গতকাল রাতে রাজধানীর আর্মি স্টেডিয়ামে 'ইকোস অব রেভল্যুশন' কনসার্টে মঞ্চ মাতান পাকিস্তানের বিখ্যাত এ সংগীতশিল্পী।
কনসার্টটিতে অংশ নিতে একদিন আগে গত শুক্রবার রাত ১১.৪৫ মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান তিনি।
কনসার্টটি আয়োজন করেছে শিক্ষার্থীদের প্লাটফর্ম 'স্পিরিট অব জুলাই'।
আগেই জানানো হয়, এ কনসার্ট থেকে আয় হওয়া সব অর্থ ছাত্র আন্দোলনে শহীদ ও আহত ব্যক্তিদের পরিবার নিয়ে কাজ করা কল্যাণমূলক সংস্থা 'জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন'-এ দেয়া হবে। রাহাত ফতেহ আলী খানের দলসহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও সংস্থা সম্পূর্ণ বিনা পারিশ্রমিকে এ আয়োজনে সহযোগিতা করেছে।
গতকাল কনসার্ট ভেন্যু বাংলাদেশ আর্মি স্টেডিয়ামের গেট বেলা ২টায় খুলে দেয়া হয়। তারপর বিকাল ৪টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যান্ড সিলসিলার কাওয়ালি গানের মাধ্যমে কনসার্ট শুরু হয়।
এরপর মঞ্চে আসেন 'আওয়াজ উডা' গানের জন্য পরিচিত র্যাপার হান্নান। শুরুতে র্যাপটি গানটি পরিবেশন করেন তিনি। হান্নানের পরিবেশনার পর মঞ্চে আসেন আরেক আলোচিত র্যাপার সেজান। 'কথা ক' গান দিয়ে সাধারণ শ্রোতাদের মাঝে পরিচিতি পেয়েছেন সেজান। বিরতির পর সাড়ে ৫টার দিকে মঞ্চে ওঠেন রক ব্যান্ড আফটারম্যাথ। শুরুতেই ব্যান্ডটি গেয়েছে তরুণদের মধ্যে আলোচিত গান 'অধিকার'। এরপর 'উৎসর্গ', 'মাটির রোদ'সহ আরো কয়েকটি গান পরিবেশন করেছে ব্যান্ডটি।
আফটারম্যাথের উন্মাদনা ছড়ানোর পর আর্মি স্টেডিয়ামে সুরের মূর্ছনা ছড়ায় জনপ্রিয় ব্যান্ড চিরকুট। দেশাত্মবোধক গান 'ধনধান্য পুষ্পভরা' দিয়ে পরিবেশনা শুরু করেন ব্যান্ডের ভোকালিস্ট সুমি। এরপর 'মরে যাব', 'জাদুর শহর', 'আহারে জীবন'-এর মতো গানগুলো পরিবেশন করেন। চিরকুটের পর আর্টসেল মঞ্চে গান পরিবেশন করে । এরপর সেই কাঙ্ক্ষিত রাহাত ফতেহ আলী খান মঞ্চে ওঠেন রাত ৯টা ৫০ মিনিটে। একের পর এক গান পরিবেশন করেন। জনপ্রিয় সেসব গানের মধ্যে 'মেরে রিশকে কামার, আফরিন আফরিন, ওরে পিয়ারে, তুম জো আয়ে, দিল লাগি, আস পাস খুদা, তেরে মাস্ত মাস্ত দোনে, সানু ইক পাল চ্যায় না, দিল দিয়া গাল্লাসহ নিজের সব জনপ্রিয় গানের সুষমায় ধ্রুপদী করে তোলেন পৌষের রাতকে।
দর্শক তার গলায় গলা মিলিয়ে একই তালে গান গাইতে থাকেন। রাহাত ফতেহ আলীর গানে দর্শক ছিলেন ব্যাপক উচ্ছ্বসিত। উপচে পড়া দর্শক-শ্রোতার উপস্থিতি ছিল বাংলাদেশ আর্মি স্টেডিয়ামে। সংগীত ছাড়াও কনসার্ট ইভেন্টে জুলাই বিপ্লব-সংক্রান্ত গ্রাফিতি প্রদর্শন করা হয়।
যাদুকরি কণ্ঠের অনন্য গায়কীতে কানায় কানায় পরিপূর্ণ রাতের আর্মি স্টেডিয়ামে মায়ার জাল ছড়িয়ে দেন ২০০৩ সালে "পাপ" সিনেমার "মন কি লাগান" গানের মাধ্যমে বলিউডে প্লেব্যাকে নিজের অভিষেক ঘটানো এই গানওয়ালা। দর্শক শ্রোতাদের "ওয়ান মোর ওয়ান মোর" ধ্বনিতে গানের আবেদন আর অনুরোধে কণ্ঠ থেকে সুর ছড়াতে কার্পণ্য করেননি পাকিস্তানের পাঞ্জাবে জন্ম নেওয়া এই সুফি শিল্পী। কাওয়ালি ও বলিউড সিনেমার গানের সংমিশ্রণে ভিন্ন এক আবহ তৈরি করেন আর্মি স্টেডিয়ামে।