জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা গয়ারডোবা খালের উপর নির্মিত সরু সেতুটি চলাচলের জন্য অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিন ধরে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই প্রতিনিয়ত চলাচল করছে মানুষ ও বিভিন্ন যানবাহন। সেতুতে ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যানসহ যেকোনো ধরনের গাড়ি উঠলেই অপর প্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকে অন্য সকল গাড়ি। একদিকে গাড়ি উঠলে অপরদিক থেকে না দেখা যাওয়ায় মাঝেমধ্যেই সেতুর মাঝামাঝি এসে বাকবিতন্ডায় লিপ্ত হয় গাড়ি চালকরা। এতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসী ও সেতু দিয়ে যাতায়াতকারী যাত্রীদের।
এলজিইডির তথ্যমতে ২০০৬ সালে ৩৫ লাখ ২৫ হাজার ৫৯৭ টাকা ব্যয়ে গয়ারডোবা খালের ওপর পথচারী সেতু নির্মাণ করা হয়। সেতুটি নির্মাণের সময় দুই পাশে সরু কাঁচা রাস্তা ছিল। ২০১৭ সালে কাঠারবিল থেকে সানন্দবাড়ী পর্যন্ত পাকা সড়ক হলে সেতু দিয়ে যান চলাচল শুরু হয়।
এলাকাবাসীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, 'দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন মহলে ঝুঁকিপূর্ণ সেতুর বিষয়টি জানালেও আজ পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপই নেওয়া হয়নি। সেতুটির প্রশস্ততা বৃদ্ধিসহ যানবাহন পারাপারের উপযোগী সেতু নির্মাণের দাবি কর্তৃপক্ষের কাছে।'
স্থানীয় বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম জানান, এই সেতুটির বেহাল দশা গাড়ি চলাচল করতে সমস্যা হয়, আমি একজন ব্যবসায়ী দোকানের মালামাল আনতে পারি না, এতে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে পথযাত্রীরা। তাই আমি দাবি রাখছি সেতুটি দ্রত নতুন করে তৈরি করার জন্য ।
অটোবাইক চালক মহির জানান, ব্রীজটির রেলিং ও পাটাতন ভেঙে যাওয়া ব্রীজটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ব্রীজের ওপর অটোবাইক উঠালে ভয়ে ভয়ে চালাতে হয়। যে কোন সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। তবুও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমাদের যাতায়াত করতে হচ্ছে ।
শিক্ষার্থীরা জানান আমারা প্রতিদিন কলেজে যাই কিন্তু এক পাশে গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকলে অপর পাশে গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। কারন সেতুটি প্রস্থ কম মনে হয় কখন যেন নিচে পড়ে যাই এবং ভয় ভয় লাগে।
চর আমখাওয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ জিয়াউল হক জিয়া বলেন, কাঠারবিল-সানন্দবাড়ী সড়কের গয়ারডোবা সেতুটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট মহলের নিকট জোড়ালো দাবি জানানো হবে, যাতে অতিসত্বর সরু এ সেতুটি পুনর্নির্মাণের পদক্ষেপ নেওয়া হয়।' এবং সবাই যেন যাতায়াত করতে পারে ।
এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ তোফায়েল আহমেদ বলেন, 'গয়ারডোবা ব্রীজটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এটি আমাদের এলজিইডির আওতাধীন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় অবস্থিত। এ ব্রীজটি ভেঙে এখানে ১০০ মিটার বা তদূর্ধ্ব দৈর্ঘ্যের সেতু নির্মাণে অগ্রাধিকার তালিকায় আমাদের সদর দপ্তরে একটি প্রস্তাবনা প্রেরণ করা হয়েছিলো। সেতুটি নতুন করে নির্মানের জন্য সার্ভে করা হয়েছে। সার্ভে শেষে নতুন নকশা অনুমোদন হলে ঐ স্থানে সড়কের উপযোগী নতুন সেতু নির্মান করা হবে।
উল্লেখ্য যে, বারো বছর আগে থেকে গয়ারডোবা ব্রীজটির রেলিং ভাঙতে শুরু করে। চার-পাঁচ বছর আগে থেকে ভাঙতে শুরু করে পাটাতন। তখন থেকেই সেতুটির ওপর দিয়ে প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে শত শত যানবাহন চলাচল করছে। রৌমারি, রাজীবপুর ও সানন্দবাড়ি এলাকার ঢাকায় যাতায়াতকারী ট্রেন যাত্রীদের বেশিরভাগই এ সেতু দিয়ে যাতায়াত করে থাকে। অত্র এলাকার কষ্ট লাঘবে শীঘ্রই নতুন একটি ব্রীজ নির্মাণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এমনটাই দাবি সর্বস্তরের জনগণের।
এইচএ