জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আবাসিক হলে ৪টি লিফটের মধ্যে ২টি দীর্ঘদিন ধরে বিকল থাকায় আবাসিক শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। দুইটি সচল লিফটের উপর নির্ভর করেই প্রতিদিন দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে বাধ্য হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, হলের ৪টি লিফটের মধ্যে একটি সবসময় বন্ধ থাকে। বাকি যে ৩টি সচল থাকার কথা, সেগুলোর সেন্সর সঠিকভাবে কাজ করে না। এতে প্রায়ই লিফটের দরজা বন্ধ হতে দেরি হয় বা ফ্লোরে ঠিকমতো থামে না।
বিশেষ করে ক্লাস চলাকালীন সময় এবং শুক্রবার জুমার নামাজের সময় লিফট ব্যবহার করতে শিক্ষার্থীদের দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। অনেকেই অভিযোগ করেছেন, অতিরিক্ত চাপের কারণে সচল থাকা লিফটগুলোরও কার্যক্ষমতা কমে গেছে।
২০১৯ সালে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৫টি লিফট কেনা হয় সুইজারল্যান্ডের ৫৫০ ব্র্যান্ডের। বঙ্গবন্ধু হল, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ এবং সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদে লিফট স্থাপন করা হয়। এই প্রকল্পে ১৩ কোটি ৬ লক্ষ টাকা ব্যয় হয়।
লিফট কেনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্যসহ ৯ জন শিক্ষক ইউরোপ সফরে যান। এই ১০ দিনের সফরের যাবতীয় ব্যয় বহন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিয়েটিভ ইঞ্জিনিয়ার্স টিম।
দিনের বেলায় চারটি লিফট সচল থাকার কথা থাকলেও, রাতে সব লিফট বন্ধ রাখা হতো। তবে শিক্ষার্থীদের মেডিকেল জরুরি সেবা নিশ্চিত করতে প্রশাসন গত ২১ আগস্ট থেকে একটি লিফট সারারাত সচল রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু দিনে একটি লিফট বন্ধ রাখার কারণে দিনের ব্যস্ত সময়ে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি কমছে না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, "কিছুদিন ধরে হলে ২টি লিফট চালু আছে। ক্লাস বা অন্যান্য কাজে যাওয়ার সময় লিফটের সামনে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হয়, যা আমাদের সময় নষ্ট করে। এছাড়া লিফটের সেন্সর সঠিকভাবে কাজ না করায় সমস্যায় পড়তে হয়।"
এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু হলের হাউজ টিউটর তারিফুল ইসলাম বলেন, "রাতে সারারাত লিফট চালু রাখতে একটি লিফট দিনে বন্ধ রাখা হয়। অন্য একটি লিফট টেকনিক্যাল ত্রুটির কারণে বন্ধ। আমরা দ্রুতই লিফটটি মেরামতের ব্যবস্থা নিচ্ছি।"
শুধু বঙ্গবন্ধু হল নয়, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ভবনের লিফটগুলোর অবস্থাও দুর্দশাগ্রস্ত। তিনটি লিফটের মধ্যে একটি দীর্ঘদিন ধরে বিকল। বাকি দুটিতেও প্রায়ই সেন্সর সমস্যার কারণে শিক্ষার্থীরা লিফটে আটকা পড়েন। কখনো কখনো দরজা হঠাৎ বন্ধ হয়ে আহত হওয়ার ঘটনাও ঘটে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা লিফট সমস্যার দ্রুত সমাধান চান। তাদের মতে, লিফটের টেকনিক্যাল ত্রুটিগুলো সঠিকভাবে মেরামত না করা হলে দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থেকে যাবে।
এমআর