২৪-এর গণ অভ্যুত্থান পরবর্তি রাজনীতি আর বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট নিয়ে আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ মন্তব্য করেছেন- ‘পরিবর্তন হয়েছে সরকার, চাঁদাবাজ কিন্তু চাঁদাবাজি পরিবর্তন হয় নাই’।
ব্যারিষ্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন,সব জায়গায় শুধুমাত্র চাঁদাবাজদের তালিকা পরিবর্তন হয়েছে ভাগাভাগি করে আমরা তোমরা ভাই ভাই করে ভাগ করে নিয়েছে এই আর কি? দেখবেন রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় সারা বাংলাদেশের হাট-ঘাট,মাঠ, বাসস্ট্যান্ড, ফেরিঘাট, হকার সব দখল হয়ে গেছে। এই যে দখল এটা তো রাজনীতি না।
রোববার (১৭ নভেম্বর) দুপুরে রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি হলরুমে মহানগর এবি পার্টির আয়োজনে “মিট দ্যা প্রেস” সাংবাদিকদের এসব মন্তব্য করেন তিনি।
ব্যারিষ্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ উল্লেখ করেন, ‘ঢাকায় হকাররা বিভিন্ন জায়গা থেকে এসে অফার দিয়েছে আমাদেরকে। যে ভাই এই রাস্তাটা যদি আমাদেরকে নিয়ে দিতে পারেন আমি ৯ কোটি টাকা ১০ কোটি টাকা দিব আপনাকে। আমি বললাম যে আমার কাছে কেন আসছেন? তখন তারা বললো শুনলাম যে আপনার অনেক সুনাম আছে পুলিশ আপনার কথা বললে ডিস্টার্ব করবে না। আমি বললাম যে ঠিক আছে দেখা যাক। দুই সপ্তাহ পরে উনার সাথে আমার রাস্তায় দেখা- বলে ভাই আপনি দায়িত্ব নিলেন না তো। অন্য একজন বড় রাজনৈতিক দলের বড় রাজনৈতিক নেতা সাবেক এমপি-মন্ত্রী তার কথা বললো। উনি দায়িত্ব নিছে উনাকে তারা নয় কোটি টাকা দিছে। এই হচ্ছে বাংলাদেশের রাজনীতি। কিন্তু আমাদের রাজনীতিটা হচ্ছে কোন ব্যবসায়ী হকার হতে পারবে না। রাস্তায় ব্যবসা করতে পারবে না। এটা নাগরিকদের জন্য ক্ষতিকর দেশের জন্য ক্ষতিকর।’
নির্বাচন আয়োজনে অন্তর্বর্তী সরকারকে সময় দেওয়ার ব্যাপারে এবি পার্টির যুগ্ম মহাসচিব বলেন, এই সরকারকে সময় দেওয়ার ব্যাপারে আমরা উদার। অন্তর্বর্তী সরকার কিন্তু নির্বাচনকালীন সরকার নয়। সরকার যদি পারফরম্যান্স করতে না পারে, তখন আমরা দাবি তুলবো, নির্বাচন দিয়ে সরে যান। কোনো রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বে জুলাই-আগস্ট বিপ্লব হয়নি। যদিও রাজনৈতিক দল ও তাদের নেতাকর্মীরা এ আন্দোলনে অংশ নিয়েছে।
যে ছয় কোটি তরুণ জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছে, তারা কেউ এখনো নির্বাচনের দাবি তোলেনি। তাহলে এই সরকারের ম্যান্ডেট আমাদের বোঝা দরকার যে তরুণদের সরকার, তরুণরা কী চান? তারা অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্ষমতায় থেকে ইচ্ছামতো যা করবে, তা কিন্তু না। এ জন্য এ সরকার ‘ইলেকশন প্লাস ম্যান্ডেট’।
তিনি মনে করেন, সরকার সংস্কার করে তরুণ, যুবক, রাজনৈতিক দলসহ সব স্টেকহোল্ডার ও সুশীল সমাজের সঙ্গে পরামর্শ করে একটা সময়ের পর নির্বাচনের দিকে এগোবে। তারা যদি ভালো পারফরম্যান্স করতে না পারে, যখন দেখবেন তারা আসলে দেশ চালাতে পারছে না, তখন আমরা দাবি তুলবো যে আপনারা চালাতে পারছেন না, নির্বাচন দিয়ে সরে যান। আর পারফরম্যান্স ভালো করলে তাদের শান্ত পরিবেশে কাজ করতে দিতে হবে।
সরকারের প্রশংসা করে তিনি বলেন, জুলাই-আগস্টে আমাদের প্রশাসন যেভাবে ভেঙে পড়েছে, ১৯৭১ সালের যুদ্ধেও এভাবে ভেঙে পড়েনি। বাংলাদেশের কোনো পরিবর্তনের সময় দেশের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান এভাবে ভেঙে পড়েনি। কোনো প্রতিষ্ঠান এখন ফাংশনাল না। দেশে নির্বাচিত কোনো প্রতিনিধি নেই। তো সে রকম একটা বাস্তবতায় এ সরকার ক্ষমতা নিয়েছে, বুঝতে হবে কী পরিমাণ ভাঙা পাহাড় পাড়ি দেওয়ার চ্যালেঞ্জ নিতে হবে। সেটাকে বিবেচনা করে সরকারের পারফরম্যান্স খুব খারাপ বলা যাবে না।
এবি পার্টি রংপুর জেলার সদস্য সচিব এনামুল হকের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক আনোয়ার সাদাত টুটুল, সহকারী সদস্য সচিব সানী আব্দুল হক, রংপুর মহানগর আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আব্দুর রউফ ও সদস্য সচিব মাহবুবুর রহমানসহ অন্যরা।
এমআর