'আমার আর কিছুই রইলো না ভাই, এই ১০ বছরের বাচ্চাকে নিয়ে আমি এখন কিভাবে বাকী জীবন পার করবো। আমার ছেলে এখন কাকে মা ডাকবে ভাই৷ আমার অনাগত বাচ্চাটাকেও আমার দেখা হলো না।' — এই কথা বলেই ঢুকরে কেঁধে উঠলেন কুমিল্লার বুড়িচংয়ের বাকশিমূল মহাজের পাড়া এলাকার বাসিন্দা মনির হোসেন। রেল দূর্ঘটনায় স্ত্রী ও অনাগত সন্তানকে হারিয়ে এখন পাগলপ্রায় তিনি।
শাহিনূর আকতার (৩০)। ১০ বছর আগে বিয়ে হয় মনির হোসেনের সঙ্গে। মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) সকালে ডাক্তার দেখানোর জন্য বাড়ি থেকে বের হন তিনি। অটোরিক্সায় চড়ে যাবেন গাজীপুর এলাকায়। এরইমধ্যে একটি ট্রেন কেড়ে নিলো শাহিনূর আর তার অনাগত শিশুর প্রাণ। ৮ মাসের গর্ভবতী ছিল শাহিনূর। তার ১০ বছরের এক ছেলেও রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে জানা গেছে, বুড়িচং থেকে কালিকাপুর সড়কের রেলক্রসিংয়ে সকালে চট্টগ্রামমুখী মহানগর প্রভাতি নামের একটি ট্রেন ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সাকে ধাক্কা দিলে অটোরিক্সায় থাকা চালকসহ ৬ যাত্রী নিহত হয়। এসময় শাহিনূর ঘটনাস্থলেই মারা যায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা আরো জানায়, শাহিনূরের লাশ ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় এবং এক পর্যায়ে তার পেট ছিঁড়ে বাচ্চাও বের হয়ে আসে।
বুড়িচং থানার অফিসার ইনচার্জ আজিজুল হক বলেন, মরদেহগুলো পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ তদন্ত করবে এই বিষয়ে।
উল্লেখ্য, কুমিল্লার বুড়িচংয়ে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৬ জন। আহত হয়েছেন আরও ৩ জন। মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) সকাল ১০টায় উপজেলার বাকশিমূল ইউনিয়নের কালিকাপুর রেলক্রসিংয়ে চট্টগ্রামগামী মহানগর প্রভাতি ট্রেন একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাকে ধাক্কা দিলে এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে।
এইচএ