পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এস এম মহসিনের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। চেয়ারম্যানের বাড়িতে হামলার খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়রা প্রতিরোধ গড়ে তুলে। পরে জনরোষে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। একই ইউনিয়ন বিএনপির সাধারন সম্পাদক মো. এনায়েত হোসেন ওরফে এনায়েত মেম্বারের ছেলে সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে এ হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সোমবার (২৬ নভেম্বর) রাত ১০টার দিকে উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের রামনগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এহামলার প্রতিবাদে মঙ্গলবার বিকেলে মানববন্ধন করেছেন স্থানীয়রা। চেয়ারম্যান বাড়ির সামনের সড়কে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে হামলার প্রতিবাদ ও জড়িতদের বিচারের দাবি জানান মানববন্ধনে অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা।
ইউপি চেয়ারম্যান মহসিন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ছিলেন। ২০২২ সালে ইউপি নির্বাচনে নৌকার বিপক্ষে চশমা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তখন তাকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করে উপজেলা আওয়ামী লীগ।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ঘটনার দিন রাত ১০টার দিকে ২০/২৫ জনের একটি দল দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে চেয়ারম্যানের বাড়িতে হামলা চালায়। হামলায় বাড়ির দরজা- জানালা ভাঙচুর করা হয়। পরে চেয়ারম্যানের বাড়িতে হামলা খবর চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে শতাধিক স্থানীয় বাসিন্দারা জড়ো হয়ে হামলাকারীদের ধাওয়া দেয়। এসময় হামলাকারীরা জনগণের প্রতিরোধে পালিয়ে যায়। একই ইউনিয়ন বিএনপির সাধারন সম্পাদকের ছেলে সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে এ হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগে করেছেন স্থানীয়রা।
ইউপি চেয়ারম্যান মহসিন জানান, ক্ষমতার পালাবদলের পর গত ৫ আগস্ট তার বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। পরে তার তাকে মিথ্যা চাঁদাবাজি মামলায় আসামি করা হয়। সেই মামলায় তিনি কারাগারে ছিলেন।
সোমবার তিনি জামিনে বের হয়ে বাড়িতে আসেন। রাতেই তার বাড়িতে হামলা করা হয়। ইউনিয়ন বিএনপির সাধারন সম্পাদকের ছেলে সাইফুল, মামুন মৃধা, খোকন ও আব্বাসের নেতৃত্বে মামলা চালানো হয়। একই ব্যক্তিরা গত ৫ আগস্ট তার বাড়িতে হামলা ও লুটপাট করেছিলেন বলে দাবি করেছেন চেয়ারম্যান মহসিন।
এবিষয়ে নাজিরপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারন সম্পাদক এনায়েত হোসেনের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে তার ছেলে সাইফুল ইসলাম বলেন,‘ আমি এ ঘটনার সাথে জড়িত না। আরেক অভিযুক্ত আব্বাস বলেন, আমি ঢাকাতে আছি। এ বিষয়ে কিছু জানিনা।
বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। তার আগেই হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। এবিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে, সরকার পতনের পর নাজিরপুর ইউনিয়নে বিএনপি নেতা এনায়েত ও তার ছেলে সাইফুলের বিরুদ্ধে ব্যাপক হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, চাঁদাবাজি ও দখলবাজির অভিযোগ উঠে। এতে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে তাকে শোকাজ করে উপজেলা বিএনপি। অভিযুক্ত সাইফুলের বিরুদ্ধে মাদকসহ একাধিক মামলাও চলমান রয়েছে।
এআই