এইমাত্র
  • আইনজীবী সাইফুল হত্যায় জড়িত সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসীদের কঠোর শাস্তি হবে
  • আইনজীবী সাইফুল ইসলাম হত্যার প্রতিবাদে চবিতে বিক্ষোভ
  • 'স্বাভাবিক মৃত্যু'কে ফরেনসিকের কারিশমায় হত্যা প্রমাণের অভিযোগ
  • অবশেষে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হিজবুল্লাহ-ইসরায়েল
  • চিন্ময় দাসের গ্রেপ্তার নিয়ে ভুল তথ্য ছড়াচ্ছে ভারত: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
  • কর্মসূচি দিলো ছাত্রশিবির
  • আইনজীবী সাইফুলকে যেভাবে হত্যা করা হয়
  • আইনজীবী হত্যার ঘটনায় প্রধান উপদেষ্টার নিন্দা, তদন্তের নির্দেশ
  • অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তার, বিচার নিশ্চিতের দাবি হাসনাত ও সারজিসের
  • সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের আহ্বান উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের
  • আজ বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৭ নভেম্বর, ২০২৪
    দেশজুড়ে

    ইতালির কথা বলে মাফিয়াদের কাছে বিক্রি, ২৭ লাখেও মিলেনি মুক্তি

    নয়ন দাস, শরীয়তপুর প্রতিনিধি প্রকাশ: ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১:১৭ পিএম
    নয়ন দাস, শরীয়তপুর প্রতিনিধি প্রকাশ: ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১:১৭ পিএম

    ইতালির কথা বলে মাফিয়াদের কাছে বিক্রি, ২৭ লাখেও মিলেনি মুক্তি

    নয়ন দাস, শরীয়তপুর প্রতিনিধি প্রকাশ: ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১:১৭ পিএম

    শরীয়তপুরে এক তরুণকে ইতালি পাঠানোর প্রলোভন দিয়ে লিবিয়া নিয়ে মাফিয়াদের কাছে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক দালাল চক্রের বিরুদ্ধে। পরে দালাল চক্রের মাধ্যমে লিবিয়ার মাফিয়ারা তাকে আটকে রেখে নির্যাতন ও পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণ হাতিয়ে নেয় বলেও অভিযোগ ভুক্তভোগী পরিবারের। দালালের মাধ্যমে ২৭ লাখ টাকা দিলেও ওই তরুণের মুক্তি দেয়নি মাফিয়াচক্র। তরুণকে ফিরে পেতে সকলের সহযোগিতা দাবী ভুক্তভোগী পরিবারটির।

    পুলিশ ও ভুক্তভোগীদের পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের আগস্টে লিবিয়া দিয়ে ইতালিতে পাঠানোর কথা বলে শরীয়তপুর জাজিরা উপজেলার বিকেনগর (বড় কৃষ্ণনগর) ইউনিয়নের ছোবান্দি মাদবর কান্দি এলাকার আইয়ুব আলী মোল্লার ছেলে তরুণ রফিক মিয়ার পরিবারের কাছে থেকে ৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় একই উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের বাচ্চু মাতুব্বর কান্দি এলাকার দালাল জসিম মাতুব্বর। পরে প্রথমে লিবিয়া নিয়ে যায়। সেখানে তাদের রিসিভ করে ‘মানব পাচারকারী চক্রের’ বাংলাদেশি দুই সদস্য শফিক ও সালাম।

    তাঁরা লিবিয়া থেকে ইতালিতে পাঠানোর কথা বলে দালাল চক্র জসিম মাতুব্বর মাধ্যমে ভুক্তভোগী রফিক মিয়ার পরিবারের কাছ থেকে বিভিন্ন মাধ্যমে মোট ২৭ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। পরে দালাল জসিম মাতুব্বর ও তাঁর সঙ্গীরা মিলে ওই তরুণকে মাফিয়াদের কাছে বিক্রি করে দেয়।

    মাফিয়ারা তরুণ রফিককে জিম্মি করে লিবিয়ার একটি স্থানে ১ মাস ৪ দিন ধরে আটকে নির্যাতন করছে। এখন আরও ৬ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করছে মাফিয়া চক্র। ওই টাকার জন্য মাফিয়া চক্র বাংলাদেশে রফিক মিয়ার পরিবার ও তাঁর আত্মীয় স্বজনরাদের মোবাইলফোনের মাধ্যমে ভিডিও কল করে জিম্মিদশা ও নির্যাতনের দৃশ্য দেখাচ্ছেন। এঘটনায় ভুক্তভোগী রফিক মিয়ার বাবা আইয়ুব আলী মোল্লা বাদি হয়ে জাজিরা থানায়, র‍‍্যাব, সেনাবাহিনী, আইন উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টা বরাবর অভিযোগ দায়ের করেছেন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবার সংবাদ সম্মেলন করে সন্তানের মুক্তি দাবি করেছেন।

    ভুক্তভোগী রফিক মিয়ার বাবা আইয়ুব আলী মোল্লা কান্না করে বলেন, দালাল জসিম মাতুব্বরের খেলনার দোকান ছিল। আমি তাঁর থেকে খেলনার মাল কিনে বিক্রি করতাম। একদিন জসিম মাতুব্বর বললো তিনি লিবিয়া লোক নেন! আমাকে বিভিন্নভাবে বুঝিয়ে ছেলেকে লিবিয়া পাঠানোর জন্য বললেন। আমিও রাজি হয়ে দালাল জসিম মাতুব্বরকে ৫লাখ টাকার দিয়ে ছেলেকে লিবিয়া পাঠিয়েছি। পরে আমাকে তিনি বলেন লিজুবিয়া থেকে ইতালি পাঠাবে আবার ৮লাখ টাকা নেন তিনি।

    পরে দালালরা লিবিয়ার মাফিয়ার কাছে বিক্রি করে দেয় ছেলেকে। মাফিয়ারা আমার ছেলেকে জিম্মি করে রেখে নির্যাতন করে, সেই দৃশ্য মোবাইলের মাধ্যমে ভিডিও করে আমাদের কাছে পাঠায়। তা করুন দৃশ্য সহ্য করার মতো না। মাফিয়ার সদস্যদের কাছ থেকে ছেলেকে ছাড়াতে দালাল জসিম মাতুব্বরের মাধ্যমে আরও দিয়েছি ১৪ লাখ। এই টাকা দিতে ফসলি জমি, বসতভিটা সব বিক্রি করেছি। সুদে ও ব্যাংক-এনজিও থেকে ঋণ করেছি। এখন আবার মাফিয়ারা ৬ লাখ টাকা চায়। সব শেষ এখন ৬ লাখ টাকা পাব কোথায়? আমি আমার ছেলেকে ফিরে পেতে চাই। তা না হলে আমি বাঁচবো না!

    স্থানীয় ইউপি সদস্য জসিম মৃধাসহ এলাকাবাসী জানায়, ভুল পথে দালালদের মাধ্যমে বিদেশ গিয়ে অসহায় পরিবারটি জমি, বসতভিটা সব বিক্রি করেছে। তাছাড়া সুদ ও এনজিওর কাছ থেকে ঋণ এনে এখন পরিশোধ করতে পারছেন না। তাই দলালদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। এ ছাড়া ভুক্তভোগী রফিক মিয়াকে ফিরিয়ে আনাসহ পরিবার যেন সব অর্থ ফেরত পায় তাঁর দাবি করছি।

    তবে এ ব্যাপারে অভিযুক্ত দালাল জসিম মাতুব্বর বলেন, আমি রফিক মিয়াকে বিদেশ নেইনি। তবে আমার কাছে রফিক মিয়ার বাবা আইয়ুব আলী মোল্লা টাকা জমা রেখেছিলেন। কারণ তিনি আমার হকার ছিলেন। তারা এখন আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছেন। আমি কোন দালাল না এবং কোন মাফিয়ারও সঙ্গে জড়িত না।

    জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল-আমিন বলেন, আমরা একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

    এমআর

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    সর্বশেষ প্রকাশিত

    Loading…