কিশোরগঞ্জের ভৈরবে দুই সন্তানসহ স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। এই ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে ভৈরব শহরের রানী বাজার শাহী মসজিদ সংলগ্ন এলাকার শাহজাহান মিয়া বিল্ডিংয়ের ৭ম তলার একটি রুমে এই ঘটনাটি ঘটেছে।
নিহতরা হলেন- নরসিংদী জেলার রায়পুরা থানার আনারবাগ এলাকার গৌরাঙ্গ চন্দ্র বিশ্বাসে ছেলে জনি চন্দ্র বিশ্বাস (৩৫) , তার স্ত্রী নিপা মল্লিক (৩০), তাদের ছেলে ধ্রুব চন্দ্র বিশ্বাস (০৭), মেয়ে কথা চন্দ্র বিশ্বাস (০৫)।
স্থানীয় ও পুলিশ সুত্রে জানা যায়, ভৈরব শহরের বাগানবাড়ির মিজান মিয়ার ওয়ার্কসপে কাজ করতেন জনি চন্দ্র বিশ্বাস। তিনি স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে ভাঁড়া বাসায় থাকতেন। গতকাল সোমবার তার পৈতৃক বাড়ি নরসিংদীর রায়পুরার আনারবাগ এলাকায় দুই সন্তানসহ স্ত্রীকে নিয়ে বেড়াতে যান। সেখান থেকে রাতে ফিরে তাদের রুমে প্রবেশ করার পর আর দরজা খুলেননি। পরবর্তীতে তার ওয়ার্কসপের এক কর্মচারী তার খোঁজ নিতে এসে জানতে পারে তাদের রুমের দরজা সকাল থেকে খুলছে না। পরে তারা তাদের রুমের দরজা ভেঙ্গে ভিতরে দেখতে পায় দুই সন্তান ও স্ত্রীর রক্তাক্ত মরদেহ বিছানায় পড়েছিলো। জনি চন্দ্র বিশ্বাস বাসার সেলিং ফ্যানের সাথে ঝুলছিলো। এই খবর পেয়ে ভৈরব থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই সন্তানসহ স্বামী ও স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার করেন।
নিহত জনি চন্দ্র বিশ্বাসের মা শিখা রানী বিশ্বাস বলেন, গতকাল আমাদের বাড়িতে পরিবারের সবাইকে নিয়ে বেড়াতে গিয়েছিলো। সেখান থেকে হাসি খুশিভাবে ফিরে এসেছেন। আজ মঙ্গলবার দুপুরের দিকে ফোনে খবর পেলাম আমার ছেলে মারা গেছে। এখন এসে দেখি আমার ছেলেসহ পুরো পরিবারই শেষ হয়ে গেছে।
ভবনের মালিক শাহজাহান মিয়ার স্ত্রী রিনা বেগম জানান, তিন মাস হলো আমার বিল্ডিংয়ের ৭ম তলার একটি ফ্ল্যাটে দুই সন্তানসহ স্বামী স্ত্রী ভাড়ায় থাকতেন। আজ বিকালে ভবনের এক ভাড়াটিয়া ফোনে জানান তাদের রুমের দরজা খুলছে না। পরে লোকজন মিলে তাদের রুমের দরজা ভেঙ্গে ভিতরে তাদের মরদেহ দেখতে পায়।
এ বিষয়ে ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ভারপ্রাপ্ত মো.শাহিন মিয়া জানান, শহরের রানী বাজার এলাকার ৭ম তলা ভবনের একটি বাসার রুমের ভিতর থেকে একই পরিবারের স্বামী স্ত্রীসহ দুই সন্তানের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে স্বামী জনি বিশ্বাস তার দুই সন্তান ও স্ত্রীকে হত্যা করে নিজে ফ্যানের সাথে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে। এই ঘটনাটি তদন্ত করে প্রকৃত কারণ উদথাটন করা হবে বলে তিনি জানান।