একসময় আবহমান গ্রাম বাংলায় বিয়েতে বরকে কনের বাড়িতে আনা নেওয়ার জন্য পালকি ও ঘোড়ার গাড়ির প্রচলন ছিলো৷ আবার গরুর গাড়িতে চড়ে নববধূ যেতো নায়র ( বেড়ানো)। বরযাত্রীরা পায়ে হেটে যেতেন বিয়ে বাড়িতে৷ যুগের পরিবর্তনের ফলে এমন দৃশ্য এখন কেবলই স্মৃতির গল্পে।
উজানভাটির জেলা কিশোরগঞ্জ ও বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলে এর প্রচলন ছিলো ব্যাপক। তখন বিয়ের মধ্যে আনন্দ এবং সামাজিক ঐক্যের বন্ধন ছিলো সুদৃঢ়। একটি বিয়ে হলে কয়েকটি গ্রাম জুড়ে আনন্দ ও আলোচনা শুরু হতো৷ ঘোড়ার গাড়ি ও পালকি চড়ে বর আসলে ছোট থেকে শুরু করে সববয়সী মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়তো দেখার জন্য৷ কলাগাছ, খেজুর পাতা দিয়ে তৈরি হতো একাধিক গেইট৷ গুড়, চিনি, বাতাসা দিয়ে তবেই হাসিমুখে বরযাত্রা করতেন।
আধুনিকতার এই সময়ে পুরনো সবকিছু বিলুপ্তির পথে। হারানো ঐতিহ্যকে স্বরণ করে কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে ঘোড়ার গাড়ি চড়ে হয়েছে বরযাত্রা।
আজ বুধবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে বরের ইচ্ছে পুরণে ঘোড়ার গাড়ি সাজসজ্জা করে বন্ধুদের নিয়ে কনের বাড়িতে গিয়েছে বর৷ কটিয়াদী পৌর এলাকার পূর্ব পাড়া মহল্লার আফজাল হোসেনের ছেলে রনি পাশের এলাকা চর-নোয়াকান্দি গ্রামের ফালান মিয়ার কন্যা সাইফা আক্তারকে বিয়ে করেন।
কিশোরগঞ্জ জেলার বিভিন্ন এলাকায় মাঝেমধ্যেই ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে বিয়ে হচ্ছে৷ পূর্বের এই ঐতিহ্যকে এখনো ধারণ করেন অনেকেই। সাধারণ মানুষের মধ্যে এটি আকর্ষণ হয়ে ওঠে৷
বরযাত্রী হাফেজ মো. আবুল কালাম বলেন, 'ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে বিয়েটা আমাদের হারানো ঐতিহ্যকে ফুটিয়ে তুলছে। আমরা বরযাত্রীরা আনন্দের সাথেই গিয়েছি।'
এইচএ