বিভিন্ন গার্মেন্টস থেকে নিয়ে আসা পরিত্যক্ত কাপড়ের অবশিষ্ট অংশ ঝুট থেকে তুলা তৈরি করছেন মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার বামন্দী এলাকার স্কুল শিক্ষক শাহেদ হোসেন।
ইউটিউবে ঝুট থেকে তুলা তৈরির ভিডিও দেখে তিনি আগ্রহী হন। একটি মিনি ফ্যাক্টরিতে কয়েকজন শ্রমিক দিয়ে শুরু করেন কাজ। এখন তার ফ্যাক্টরিতে কাজ করছে আটজন নারীপুরুষ শ্রমিক। শাহেদ হোসেনের
ফ্যাক্টরিতে মাসে উৎপাদিত হয় কয়েক লাখ টাকার তুলা। খরচ বাদ দিয়ে তার আয় দাঁড়ায় ৪০-৫০ হাজার টাকার কাছাকাছি।
মেহেরপুর ছাড়িয়ে আশপাশের বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে এই ঝুট থেকে তৈরি তুলা। তোশক, লেপ, বালিশ, মেটসহ বানানো হচ্ছে বিভিন্ন পণ্য। আসন্ন শীত মৌসুমে অন্তত ১০ লাখ টাকার ব্যবসা হবে বলে আশা করছেন তিনি। গার্মেন্টস থেকে কাপড়ের পরিত্যক্ত টুকরা বা ঝুট কিনে এনে তুলা উৎপাদন করে কপাল খুলেছে তার। বড় আকারে কারখানা খোলার স্বপ্ন দেখছেন তিনি।
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার বামন্দী গ্রামের শাহেদ হোসেন স্কুল শিক্ষকতার পাশাপাশি নিজ এলাকায় তৈরি করেন ঝুট থেকে তুলা তৈরির কারখানা। ৫ লাখ টাকা দিয়ে মেশিন ক্রয় করেন, ঢাকা থেকে গার্মেন্টসের ঝুট কিনে এনে কয়েকজন কর্মচারী নিয়ে শুরু করেন তুলা তৈরির কাজ। প্রথম কয়েক মাস তেমন একটা লাভের মুখ না দেখলেও পরবর্তীতে লাভের মুখ দেখতে শুরু করেন তিনি। তার কারখানায় মাসে ১২ হাজার কেজি তুলা উৎপাদিত হয়। যার বাজার মূল্য আড়াই লাখ টাকার অধিক।
তুলা কারখানার মালিক শাহেদ হোসেন বলেন, বর্তমানে একটি মেশিন দিয়ে তুলা উৎপাদন করে যাচ্ছি। সরকারি সাহায্য-সহযোগিতা পেলে বড় পরিসরে তুলা কারখানা তৈরি করার ইচ্ছা রয়েছে। বর্তমানে কারখানা থেকে আমি বার্ষিক সাড়ে পাঁচ লাখ থেকে ছয় লাখ টাকা লাভ করছি। কারখানা বড় করতে পারলে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি আয়ও বৃদ্ধি হবে বলে জানান তিনি।
তুলা কারখানার কর্মচারী মাজেদুর ইসলাম বলেন, এর আগে আমি ফরিদপুর জেলার একটি ভুলা কারখানায় কাজ করতাম। যা বেতন পেতাম তাতে অর্ধেকের বেশি বেতন খাওয়া-দাওয়া ও বাড়ি ভাড়ায় শেষ হয়ে যেত। এখন নিজ এলাকায় কাজ করি। যা বেতন পাই তা দিয়ে খুব ভালো মতো সংসার চলছে।
অপর কর্মচারী সাবিনা খাতুন বলেন, সাহেদের দেখাদেখি অনেকেই আগ্রহ প্রকাশ করেছেন ঝুট থেকে তুলা উৎপাদনে। অনেকেই আসছেন কারখানা দেখতে, পরামর্শ নিতে। এখানে স্বল্প পুঁজিতে অধিক পরিমাণে মুনাফা অর্জন করা যায়।
এইচএ