কিশোরগঞ্জের ভৈরবে শামীমা আক্তার নামে একজন দন্ত চিকিৎসককে গ্রেপ্তার করেছে থানা পুলিশ।
গতকাল শনিবার (০৭ ডিসেম্বর) রাতে ভুল চিকিৎসার অভিযোগে শহরের নিউ টাউন এলাকার নাফিসা ডেন্টাল থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত শামীমা আক্তার পৌর শহরের জগন্নাথপুর দক্ষিণপাড়া এলাকার মৃত মাহমুদ হোসেনের মেয়ে। ভুক্তভোগী ইটালি প্রবাসী মো. হাবিবুর রহমান। তিনি শহরের জগন্নাথপুর কান্দারহাটি এলাকার বাসিন্দা।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত (২৬ আগস্ট) ভৈরব শহরের জগন্নাথপপুর কান্দার হাটি এলাকার বাসিন্দা ইটালি প্রবাসী মো. হাবিবুর রহমান নামে এক প্রবাসী দাঁতের চিকিৎসা নিতে ডেন্টিস্ট শামীমা আক্তার মালিকাধীন নাফিসা ডেন্টাল কেয়ারে যান। তিনি নিজেকে ডেন্টাল সার্জন বলে হাবিবুর রহমানের নিকট পরিচয় দিয়ে বিশ্বাস স্থাপন করে। সেখানে যাওয়ার পর ৯০ হাজার টাকার বিনিময়ে প্রবাসীর দাঁত পরীক্ষা করে সামনের ৩টি দাঁতে ছিদ্র করে ক্যাপ পড়িয়ে দেন। পরবর্তীতে দেখতে পায় চিকিৎসক তাকে ভুল চিকিৎসা করে ৩টি দাঁতের পরিবর্তনে তার ভালো দাঁতসহ ১৪টি দাঁত ঘষিয়ে ক্যাপ করে দেয়। দাঁতের ক্যাপ খুলে যাওয়ার পরবর্তীতে দাঁতে সমস্যা দেখা দিলে আবারও তার কাছে গেলে তিনি এ বিষয়ে কোন সদোত্তর দিতে পারেনি। তিনি পুণঃ চিকিৎসা দিতে গেলে তখন তার দাঁতের মাড়িসহ মুখ ফুলে অবস্থা খুব খারাপ হয়ে যায়।
পরবর্তীতে আরেক জন দন্ত চিকিৎসকের কাছে গেলে তিনি জানান, পূর্বের ভুল চিকিৎসায় দাঁতে মারাত্মক সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। এতে ১৪টি দাঁত পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই ঘটনায় ভুক্তভোগী মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ভুল চিকিৎসা জনিত কারণে গুরুত্বর অসুস্থ ও ১৪টি দাঁত হারানোর কারণে তিনি বাদী হয়ে শামিমা আক্তারের নামে একটি মামলা দায়ের করেছেন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী মো. হাবিবুর রহমান গত (২০ অক্টোবর) শামীমা আক্তারের নামের একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার পর থেকে তিনি দীর্ঘদিন পলাতক ছিলেন। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে তার চেম্বার থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সূত্রে জানা যায়, শামীমা আক্তার ডেন্টিস্ট নন। তিনি শহরের কমলপুর এলাকার ডেন্টিস্ট শফিউল্লাহ’র সহকারী ছিলেন। সেখান থেকে এসেই তিনি বনে গেছেন ডেন্টিস্ট। তার কোন মেডিকেলে পড়াশোনারও সার্টিফিকেট নেই, নেই বিডিএস ডিগ্রীও।
ভুক্তভোগী মো. হাবিবুর রহমান বলেন, আমি একজন ইটালি প্রবাসী। বিদেশ থেকে আসার পর আমার দাঁত ব্যথা দেখা দেয়। আমি প্রবাসী হওয়ায় দন্ত চিকিৎসালয় সম্পর্কে আমার ভালো ধারণা নাই। আমার বাড়ি ও শামীমা আক্তারের বাড়ি একই এলাকায় হওয়ায় সে আমাকে দন্ত চিকিৎসক বলে নিজেকে পরিচয় দেয়। তার ভুল চিকিৎসায় আমার মুখের ১৪টি দাঁত হারালাম। পরবর্তীতে আমি তার কাছে এই কর্মকাণ্ডের বিষয় জানতে গেলে সে আমাকে বিভিন্ন কথা বলে এবং হুমকি, ধামকি প্রদান করে। আমি আমার অঙ্গহানী ও সঠিক বিচারের আশায় থানায় মামলা দায়ের করেছি।
ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহিন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, নিরাপত্তার স্বার্থে আজ রবিবার (০৮ ডিসেম্বর) বিকেলে তাকে কিশোরগঞ্জ সদর থানায় পাঠানো হয়েছে।
এফএস