ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিতে পোষ্য ও খেলোয়াড় কোটার বিধান কেন বাতিল ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মুবিনা আশরাফের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রুল জারি করেন। দুই সপ্তাহের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্টদের এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তিতে পোষ্য ও খেলোয়াড় কোটা বাতিলের দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে রিট দায়ের করা হয়। রিটটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সোলায়মান তুষারসহ আরও কয়েকজন। এর আগে ৫ নভেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্টদের উদ্দেশ্যে আইনি নোটিশ প্রদান করা হয়।
নোটিশে উল্লেখ করা হয়, মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনাদের সন্তানদের জন্য ৫ শতাংশ কোটা, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জন্য ১ শতাংশ এবং শারীরিক প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের জন্য ১ শতাংশ কোটা বহাল রেখে বাকি সব কোটা বাতিল করতে হবে। তবে পোষ্য ও খেলোয়াড় কোটার বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় আদালতের শরণাপন্ন হন রিটকারীরা।
রিটকারীদের পক্ষে ব্যারিস্টার হুমায়ুন কবির পল্লব বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সন্তানরা পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত নয়। তাদের জন্য পোষ্য কোটা সংরক্ষণ করা সংবিধানের ২৮ (৪) অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
তিনি আরও বলেন, খেলোয়াড় কোটার ক্ষেত্রেও অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে, যা স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতির সুযোগ সৃষ্টি করে। সংবিধানে সংজ্ঞায়িত পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠীর অধীনে খেলোয়াড়দের অন্তর্ভুক্ত করা যুক্তিসঙ্গত নয়।
আদালত বলেন, একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি প্রক্রিয়া মেধার ভিত্তিতে হওয়া উচিত। পোষ্য ও খেলোয়াড় কোটার মাধ্যমে সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতি বৈষম্য করা হচ্ছে। ফলে এই বিধানগুলো বাতিলের যৌক্তিকতা পর্যালোচনার জন্য সংশ্লিষ্টদের কাছে জবাব চাওয়া হয়েছে।
এই রুলের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি নীতিতে মেধার ভিত্তিতে পরিবর্তন আনার বিষয়টি সামনে এসেছে। পোষ্য ও খেলোয়াড় কোটার যৌক্তিকতা নিয়ে বিতর্ক দীর্ঘদিনের। আদালতের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি প্রক্রিয়ায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে পারে।
সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে দ্রুত জবাব প্রদান করা হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
এসএফ