সিলেট জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় বন্যা প্রবণ এলাকায় দুর্যোগ সহনশীলতা বৃদ্ধি ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে। ইসলামিক রিলিফ বাংলাদেশের বাস্তবায়নাধীন এবং ইউএস ইসলামিক রিলিফের অর্থায়নে পরিচালিত সুপ্রিম এশিয়া প্রকল্পের আওতায় ৬টি ইউনিয়ন যথাক্রমে ১নং পশ্চিম ইসলামপুর,২নং পূর্ব ইসলামপুর,৩নং তেলিখাল, ৪নং ইছাকলস,৫নং উত্তর রণিখাই ও ৬ দক্ষিণ রণিখাইয়ে ১০০টি নারী দলে খাদ্য ব্যাংক প্রতিষ্ঠা ও প্রতিটি নারী দলে ১০০ কেজি ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন ড্রাম ও প্রতি দলে ৫০ কেজি চাল প্রদান করা হয়েছে।
মোট ৫০০০ কেজি চাল এই প্রকল্পের অধীনে বিতরণ করা হয় খাদ্য ব্যাংক ও চাল বিতরণ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন দক্ষিণ রণিখাই ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. জামাল উদ্দিন। খাদ্য ব্যাংক প্রতিষ্ঠা কর্মসূচীর আওতায় নারী সদস্যরা সাপ্তাহিক ভিত্তিতে ২৫০ গ্রাম চাল খাদ্য ব্যাংকে জমা দেবে, যা পরবর্তীতে প্রয়োজনে ধার নেওয়া ও পরিশোধের মাধ্যমে কার্যক্রম চালু থাকবে এই কার্যক্রমের ফলে দলগুলো দুর্যোগকালীন খাদ্য সংকট মোকাবেলায় আত্মনির্ভরশীল হবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্যানেল চেয়ারম্যান মো. জামাল উদ্দিন বলেন,খাদ্য ব্যাংকের মতো উদ্যোগ এ অঞ্চলে প্রথম। কোম্পানীগঞ্জের মতো বন্যাপ্রবণ এলাকায় দুর্যোগের পর বিশেষ করে দরিদ্র জনগোষ্ঠী সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই উদ্যোগ নারীদের ও তাদের পরিবারের দুর্যোগ সহনশীলতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। নারীরা নিজেদের নেতৃত্বে দুর্যোগকালীন সময়ে খাদ্যের সংকট মোকাবেলা করতে সক্ষম হবে।
এসময় সুপ্রিম এশিয়া প্রকল্পের কর্মকর্তা গাজিউর রহমান, সহকারী প্রকল্প কর্মকর্তা মোং আব্দুর রাজ্জাক, এবং প্রকল্পভুক্ত নারী দলের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।খাগাইল উত্তরপাড়া দলের নেত্রী বাহারুন বলেন,“খারাপ সময়ে বা বাড়িতে অতিথি এলে আমরা বড় অসুবিধায় পড়ি। এই খাদ্য ব্যাংক আমাদের সেই সমস্যা কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করবে। পাশাপাশি, বন্যার সময় খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেও এটি কার্যকর ভূমিকা রাখবে।”
খাগা্লে্ইল পশ্চিমপাড়া নেত্রী স্বপ্না উল্লেখ করেন, আমরা শুধু আমাদের দলের সদস্যদের নয়, সমাজের অন্য প্রান্তিক লোকজনকেও এই খাদ্য ব্যাংক থেকে সহায়তা দিতে পারব। এটি সমাজের দরিদ্র জনগণের দুর্ভোগ লাঘব করবে।
সুপ্রিম এশিয়া প্রকল্পের আওতায় নারী নেতৃত্বাধীন এই খাদ্য ব্যাংকগুলো শুধুমাত্র দুর্যোগকালীন তাত্ক্ষণিক সহায়তা নয়, বরং দীর্ঘমেয়াদি দুর্যোগ প্রস্তুতি ও স্থানীয় পর্যায়ে সম্প্রদায়ভিত্তিক সহনশীলতা বৃদ্ধি করার একটি মডেল হিসেবে কাজ করবে।
প্রকল্প কর্মকর্তা গাজিউর রহমান বলেন, এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য নারীদের নেতৃত্বে দুর্যোগ মোকাবেলার টেকসই ব্যবস্থা তৈরি করা। এই খাদ্য ব্যাংকগুলো বন্যা এবং অন্যান্য দুর্যোগে খাদ্য সরবরাহের একটি নির্ভরযোগ্য উৎস হিসেবে কাজ করবে এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।
উল্লেখ্য, ইসলামিক রিলিফের এই উদ্যোগ স্থানীয় পর্যায়ে জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (SDG) অর্জনে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে, বিশেষ করে এসডিজি-১ (দারিদ্র্য বিমোচন)।
এমআর