উপকূলীয় জেলা ভোলার ২০ লক্ষ মানুষের চিকিৎসা সেবার একমাত্র ভরসাস্থল ভোলা ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল। কিন্তু হাসপাতালই যখন অসুস্থ হয় তখন রোগীরই বা কি চিকিৎসা পাবে? অব্যবস্থাপনায় ডুবে আছে ভোলা সদর হাসপাতালটি। ময়লার স্তুপ আর পোকামাকড়ের আশ্রয় কেন্দ্রই যেনো হয়ে উঠেছে ভোলার ২০ লক্ষ মানুষের একমাত্র চিকিৎসা কেন্দ্রটি।
দূরদূরান্ত থেকে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগী ও রোগীর স্বজনরা অতিষ্ঠ হয়ে উঠছেন হাসপাতালের বেডের নিচে থাকা ছাড়পোকার যন্ত্রণায়। ছাড়পোকার কামরে শয্যায় থাকতে পারছেন না রোগী ও স্বজনরা।
সোমবার (০৪ জানুয়ারি) সকালে হাসপাতালটিতে গিয়ে দেখা যায় খাবারের প্লেট থেকে শুরু করে প্রতিটি বেডের নিছে কিলবিল করছে ছাড়পোকা, তেলাপোকায়। ফ্লোরের পাশে সানসেটে পরে রয়েছে ময়লার স্তুুপ। ময়লার স্তুুপ থেকে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ ।
এ বিষয়ে জেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা সেবা প্রত্যাশী কয়েকজন রোগীর স্বজনদের সাথে কথা বলেছে সময়ের কন্ঠস্বর।
দৌলতখান থেকে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা ফারহানা বেগম জানান, ৪ দিন হয়েছে তার বাচ্চাকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। চিকিৎসা সেবা কিছুটা পেলেও ছাড়পোকার যন্ত্রণায় ভুকছেন তিনি। ছাড়পোকার কামরে বাচ্চা নিয়ে ঘুমাতে পারছেন না। পোশাক পরিচ্ছেদ থেকে খাবারের প্লেটে দল বেঁধে হাটচে ছাড়পোকার দল।
রোগীর স্বজন রাবেয়া বেগম বলেন, হাসপাতালে এসেছি চিকিৎসা নিতে। কিন্তু এখানে রোগী নিয়ে থাকার কোন উপায় নেই। অপরিছন্ন পরিবেশ আর চারপাশে ময়লার দুর্গন্ধ ও ছাড়পোকার কামরে থাকা দায়। এখানে এসে আমরা নিজেরাই অসুস্থ হয়ে পরেছি।
ইব্রাহিম নামের অপর এক রোগীর স্বজন জানান, নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত ২ বছরের শিশু হুমায়রাকে নিয়ে ২ দিন আগে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তিনি। ভর্তি হওয়ার পর থেকেই ছাড়পোকার কামরে অতিষ্ঠ। বাচ্চার কানে ছাড়পোকা ঢুকে যেতে পারে এমন শঙ্কায় বাচ্ছাকে বেডে রাখছেন না। বালাইনাশক ঔষধ না ছিটানোর ফলে ছাড়পোকার এমন উপদ্রব দেখা দিয়েছে বলে দাবী করেন তিনি।
অব্যবস্থাপনা ও ছাড়পোকার বিষয়ে দায় স্বীকার করে ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক শেখ সুফিয়ান রুস্তম জানান, হাসপাতাল কতৃপক্ষের পাশাপাশি রোগীর সাথে আসা অভিভাবকদেরও সচেতন হতে হবে। অনেক সময় দেখা যায় অভিবাকরা বাসা থেকে নোংরা কাপর ছোপর নিয়ে আসে সেগুলো থেকেও এই পোকার বিস্তার হতে পারে। এছাড়াও বেড পুরাতন হয়ে গেলে বা একই বেড দীর্ঘ সময় ব্যবহার করলে এ ধরনের পোকার কিছুটা উপদ্রব হতে পারে। তবে শীতকালে এধরনের পোকার প্রার্দুভাব বেশি দেখা যায়। গরম কালে তেমন একটা এই পোকা থাকে না বলেও জানান তিনি।
এ দিকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল এই হাসপাতালটির নতুন ভবনের ৫ম তলায় শিশু ওয়ার্ড। এই ওয়ার্ডে শিশুদের শয্যা সংখ্যা ২৫টি। শয্যা সংখ্যা সংকুলান না থাকায় একই শয্যায় ২-৩ জন করে শিশু রোগী রেখে তাদেরকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। শীতকালীন রোগ সর্দি কাশি ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া রোগীর বাড়তি চাপ থাকায় ফ্লোরের মেঝেতে অনেক রোগীকে বিছানা বিছিয়ে চিকিৎসা সেবা নিতে দেখা গেছে। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রোগী ও রোগীর স্বজনা।
এআই