এইমাত্র
  • ফুলবাড়ীতে বিএনপি প্রার্থীর নির্বাচনী গণসংযোগ ও জনসভা
  • বাংলাদেশের কাছে হারের পর যা বলছে ভারতীয় গণমাধ্যম
  • শততম টেস্টে ফিফটি তুলে নিলেন মুশফিক
  • দেশের সব মোবাইল ফোন বিক্রির দোকান বন্ধের ঘোষণা
  • নারীদের পেছনে রেখে আমরা পুরুষরা এগিয়ে যেতে পারবে না: ধর্ম উপদেষ্টা
  • রমজানের আগেই বাড়ছে ছোলা-খেজুরসহ ৬ ভোগ্যপণ্যের আমদানি
  • পল্লবীতে যুবদল নেতা কিবরিয়া হত্যা: পাতা সোহেল ও সুজন গ্রেপ্তার
  • সাংবাদিককে ডিবি তুলে নেয়ার সঙ্গে আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই: ফয়েজ তৈয়্যব
  • ঘরে বসেই মেট্রোরেলের কার্ড রিচার্জ করা যাবে ২৫ নভেম্বর থেকে
  • ডিবি থেকে ছাড়া পেয়ে যা বললেন সাংবাদিক সোহেল
  • আজ বুধবার, ৫ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ | ১৯ নভেম্বর, ২০২৫
    দেশজুড়ে

    কিশোর গ্যাং ও রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের দাপট, পারিবারিক দ্বন্দ্বে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ

    এম ফেরদৌস, উখিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি প্রকাশ: ১২ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:২৯ পিএম
    এম ফেরদৌস, উখিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি প্রকাশ: ১২ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:২৯ পিএম

    কিশোর গ্যাং ও রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের দাপট, পারিবারিক দ্বন্দ্বে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ

    এম ফেরদৌস, উখিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি প্রকাশ: ১২ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:২৯ পিএম

    উখিয়ার ঘাট কাস্টমস ঘুমধুম সীমান্তবর্তী এলাকায় গাছের ডাল কাটাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় কিশোর গ্যাং ও ভাড়াটিয়া রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী মিলে নুরুল বশির নামে এক ব্যক্তির পরিবারের ওপর হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে।

    বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) দিনদুপুরে দা, বটি, কিরিচ ও লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালায় একদল রোহিঙ্গা দুর্বৃত্ত, যার মূল লক্ষ্য ছিল ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের প্রাণে মেরে ফেলা। এমন অভিযোগ তুলে পার্শ্ববর্তী ঘুমধুম পুলিশ ফাঁড়িতে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগীর পরিবার।

    অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উখিয়ার ঘাট এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা নুরুল বশির ও মৃত মনজুর আলমের স্ত্রী রহিমা বেগম—দুই পরিবারের বসতভিটা পাশাপাশি এবং একই সীমানায় অবস্থিত। ফলে এক পরিবারের গাছের ডালপালা প্রায়ই অন্য পরিবারের বাড়ির উঠানে ঢুকে পড়ে।

    সম্প্রতি রহিমা বেগমের একটি গাছের ডালপালা নুরুল বশিরের ঘরের চালের ক্ষতি করে। বিষয়টি নিয়ে নুরুল বশিরের ছেলে রবিউল গাছের মালিক রহিমার অনুমতি নিয়ে গাছের ডাল কেটে ফেলেন। স্থানীয়রা জানান, গাছ কাটার সময় কোনো ধরনের বাধা বা বিরোধ সৃষ্টি হয়নি।

    তবে ঘটনার পর রহিমার ছেলে স্থানীয়ভাবে পরিচিত মাদক কারবারি বাপ্পারাজের স্ত্রী রোহিঙ্গা রোজিনা আকতার ক্যাম্প থেকে ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী এনে নুরুল বশিরের ছেলে রবিউলের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। প্রাণে বাঁচতে রবিউল পালিয়ে যান।

    পরে হামলাকারীরা রবিউলকে না পেয়ে তার মা মনোয়ারার ওপর চড়াও হয় এবং ঘরে ঢুকে লুটপাট চালায়।

    প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা জানান, পারিবারিক সীমানায় উঠা গাছের ডাল কাটার জন্য অনুমতি দেয় গাছের প্রকৃত মালিক মৃত মনজুর আলমের স্ত্রী রহিমা। গাছের ডাল কাটার পর বিষয়টি নিয়ে বিরোধে জড়িয়ে পড়ে তার ছেলে বাপ্পারাজের স্ত্রী রোহিঙ্গা নারী রোজিনা। এ ঘটনায় তাদের পরিবারের আরেক সদস্য রোহিঙ্গা রোজিনার দেবর কিশোর গ্যাংয়ের অন্যতম সদস্য ইমনকেও ডেকে আনা হয়। অভিযোগ রয়েছে, এরপরই তারা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ইমনের কিশোর গ্যাং ও রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের এনে হামলা চালায় নুরুল বশিরের পরিবারের ওপর।

    হামলাকারীরা সরাসরি দা-কিরিচ নিয়ে আক্রমণ চালালে ভুক্তভোগী পরিবারের একাধিক সদস্য প্রাণে বাঁচতে দিক-বেদিক ছুটে যায়। যা ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

    এলাকাবাসী জানান, এ ধরনের হামলা কেবল পারিবারিক দ্বন্দ্ব নয়, বরং স্থানীয়ভাবে গড়ে উঠা রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী চক্রের অপতৎপরতার বড় উদাহরণ। দিনের আলোয় প্রকাশ্যে এমন হামলায় পুরো এলাকায় চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।

    স্থানীয় এক বাসিন্দা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, 'রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়া হয়েছিল মানবিক কারণে, কিন্তু এখন তারা অস্ত্র হাতে সাধারণ মানুষকে ভয় দেখাচ্ছে। প্রশাসনের উচিত কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া।'

    এ ঘটনার বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত রোহিঙ্গা তরুণী রোজিনা ও তার দেবর ইমনের সাথে কথা বলার চেষ্টা করলে মিডিয়ার সামনে কথা বলতে অনিহা প্রকাশ করেন তারা।

    এ বিষয়ে ঘুমধুম পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জাফর ইকবাল বলেন, 'ঘটনার তদন্ত চলছে। যারা হামলায় জড়িত, তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে। এলাকাবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।'

    এদিকে উখিয়ার ঘাট কাস্টমস এলাকা এবং আশপাশে রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে পালিয়ে লোকালয়ে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা তরুণ-তরুণীরা বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। এতে একদিকে যেমন বাড়ছে আইনশৃঙ্খলার অবনতি, অন্যদিকে দিন দিন বিপাকে পড়ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

    সচেতন মহল বলছে, রোহিঙ্গা তরুণীরা মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে স্থানীয় যুবকদের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। পরে এই বৈবাহিক সম্পর্ককে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে সীমান্তবর্তী এলাকায় শুরু করে চোরাচালান, মাদক পাচার, অবৈধ ব্যবসা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডসহ নানা অপরাধমূলক তৎপরতা।

    অভিযোগ রয়েছে, পারিবারিক কোনো বিরোধ বা ছোটখাটো ঘটনা ঘটলেই রোহিঙ্গা তরুণীরা ক্যাম্প থেকে সংঘবদ্ধ রোহিঙ্গা গোষ্ঠী ডেকে এনে স্থানীয় এলাকায় অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করে। হুমকি-ধমকি, সংঘর্ষ ও হামলার মতো ঘটনা দিন দিন বাড়ছেই। তার বড় উদাহরণ হিসেবে নুরুল বশিরের পরিবারের ওপর ঘটে যাওয়া ঘটনা।

    স্থানীয় সচেতন মহল মনে করছেন, রোহিঙ্গাদের এমন অপকর্ম বন্ধে প্রশাসনের কঠোর নজরদারি ও নিয়মিত অভিযান প্রয়োজন। পাশাপাশি লোকালয়ে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের চিহ্নিত করে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে ভবিষ্যতে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।

    এই ধরনের প্রতারণা ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের ফলে অনেক স্থানীয় পরিবারে তৈরি হয়েছে পারিবারিক অশান্তি। একই সঙ্গে বাড়ছে সামাজিক অস্থিরতা।

    এসআর

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    চলতি সপ্তাহে সর্বাধিক পঠিত

    Loading…