র্যাগিং এক ধরনের ফৌজদারি অপরাধ বলে মন্তব্য করেছেন ময়মনসিংহ জেলার পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলম। তিনি শিক্ষার্থীদের এ ধরনের কর্মকাণ্ড থেকে সম্পূর্ণ বিরত থাকার আহ্বান জানান।
বুধবার (৮ জানুয়ারি) বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ফজলুল হক হলে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে ভর্তিকৃত স্নাতক শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ফজলুল হক হল গ্রাম-ঘেঁষা নিরিবিলি পরিবেশে অবস্থিত একটি অনন্য আবাসিক হল। এই হলের অর্জিত শিষ্টাচার শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিত্ব গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। জীবনে সফল হতে হলে সমস্ত প্রতিকূলতা সাহসিকতার সঙ্গে মোকাবিলা করতে হবে এবং জ্ঞান অর্জনের জন্য বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। পাশাপাশি, মাদক থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দেন তিনি। হলের শৃঙ্খলা বজায় রেখে শিক্ষার্থীরা যাতে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে বসবাস করার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তোফাজ্জল হোসেন হাওলাদারের সভাপতিত্বে এবং কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের শিক্ষার্থী শেখ মাজহারুল ইসলাম লিঙ্কনের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি ছিলেন ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল হক।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরদার, প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আবদুল আলীম, এগ্রোমেটিওরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. আহমদ খায়রুর হাসান, ময়মনসিংহ জেলার পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলম, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. হেলাল উদ্দিন এবং ভারপ্রাপ্ত লাইব্রেরিয়ান কৃষিবিদ বোরহান উদ্দিন। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন হলের হাউস টিউটর সাহাবুদ্দীন আহমেদ, ফখরুল হাসান ও মো. অলিয়ার রহমান, বিশ্ববিদ্যালয়ের পুলিশ ক্যাম্পের সদস্যবৃন্দ এবং হলের বিভিন্ন সংগঠনের শতাধিক শিক্ষার্থী।
নবীন শিক্ষার্থী মোহাইসিউ জৌবিয়ার ভুবন তার অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, “আজকের এই অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। ছোটবেলা থেকে আমার স্বপ্ন ছিল কৃষি গবেষক হওয়া। বাকৃবির মতো স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে সেই স্বপ্ন পূরণের পথে এগোতে পেরে আমি গর্বিত। শুরুতে ধারণা ছিল হলে র্যাগিং হয় এবং পড়াশোনা করতে দেওয়া হয় না। কিন্তু এখানে এসে দেখেছি, বড় ভাইদের আচরণ অত্যন্ত আন্তরিক এবং সহযোগিতামূলক। তারা যে কোনো সমস্যায় সাহায্য করছেন, এমনকি তাদের সঙ্গে খেলাধুলাও করছি। আশা করি, ভবিষ্যতেও তাদের দিকনির্দেশনা পাব।”
অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল হক বলেন, “এই হলের একটি গৌরবময় ঐতিহ্য রয়েছে। একসময় এই হল থেকেই অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগ দিয়েছেন। গণরুম না থাকায় শিক্ষার্থীদের জন্য এখানে স্বাচ্ছন্দ্যের পরিবেশ বিদ্যমান। শিক্ষার্থীদের এমন কোনো সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হওয়া উচিত নয়, যা দেশ ও জাতির জন্য ক্ষতিকর। দেশসেরা গবেষক হয়ে দেশের সেবা করবে এবং জাতিকে গৌরবান্বিত করবে—এটাই আমার প্রত্যাশা।”
পিএম