এইমাত্র
  • মিরাজের রক্তমাখা শার্ট নিয়ে তথ্য উপদেষ্টার সঙ্গে বাবার সাক্ষাৎ
  • হামাস ‘সন্ত্রাসী’ নয়, ‘স্বাধীনতাকামী’ সংগঠন: এরদোগান
  • হঠাৎ মিমকে হারুনের ফোন, সরে দাঁড়াতে বলেন যে সিনেমা থেকে
  • লেবাননে পৌঁছেছে তুরস্কের ৩০ টন মানবিক সহায়তা
  • বৃষ্টিতে ভেসে যেতে পারে কানপুর টেস্টের প্রথম দিন!
  • শ্রীলংকার নতুন প্রধানমন্ত্রী হরিণী অমরাসুরিয়া
  • কৃষিকে কৃষকবান্ধব করতে হবে: উপদেষ্টা
  • ঢাকা জেলার সাবেক ডিসির বিরুদ্ধে হত্যা মামলা
  • দেশে স্বর্ণের দাম বেড়ে ইতিহাসের সর্বোচ্চ
  • নিষিদ্ধ জামাতুল আনসারের ৩২ জনের জামিন বাতিল
  • আজ বৃহস্পতিবার, ১০ আশ্বিন, ১৪৩১ | ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
    দেশজুড়ে

    পুলিশের গুলিতে সন্তান হারিয়ে দিশেহারা ৩ পরিবার

    রবিউল আউয়াল, ময়মনসিংহ প্রতিনিধি প্রকাশ: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:০১ পিএম
    রবিউল আউয়াল, ময়মনসিংহ প্রতিনিধি প্রকাশ: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:০১ পিএম

    পুলিশের গুলিতে সন্তান হারিয়ে দিশেহারা ৩ পরিবার

    রবিউল আউয়াল, ময়মনসিংহ প্রতিনিধি প্রকাশ: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:০১ পিএম

    ছেলের কবরের পাশে দাঁড়িয়ে অঝোরে কাঁদছে বাবা, কান্না যেন থামছেই না। কথা বলার শক্তিও হারিয়ে ফেলেছেন তিনি। পড়াশোনার পাশাপাশি তেলের মিলে শ্রমিকের কাজ করে সংসারের হাল ধরেছিলেন বিপ্লব। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ছেলেকে হারিয়ে দিশেহারা পুরো পরিবার।

    গত ২০ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে কারফিউয়ের প্রথমদিন ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার ডৌহাখলা ইউনিয়নের কলতাপাড়া এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয় বিপ্লব হাসান (২০)- সহ আরও দুই তরুণ।

    নিহত বিপ্লব হাসানের বাবা বাবুল মিয়া ছেলে হত্যার বিচার দাবি করে বলেন, আমার ছেলে আমার সংসারের একমাত্র অবলম্বন ছিল, যারা আমার ছেলেকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক।

    জীবনের স্বল্প সময়ে যে ভাই আবদার পূরণ করতো আদরের ছোটবোনের। সেই ভাইকে হারিয়ে নির্বাক ছোটবোন জান্নাতুল। তিনি বলেন, আমার ভাই সবসময় আমার খেয়াল রাখতো, আমি একদিন পড়াশোনা ঠিকভাবে না করলে রাগারাগি করতো, এখন কে আমার খবর নিবে, কে আমার আবদার পূরণ করবে।

    নিহত বিপ্লবের ছবি বুকে নিয়ে স্তব্ধ হয়ে আছেন মা বিলকিস আক্তার, এভাবে ছেলেকে হারাতে হবে কোনদিনও ভাবতে পারেননি। তিনি বলেন, আমার ছেলে পুরো সংসার চালাতো, আমার দুই মেয়ের পড়াশোনার খরচ চালাতো, সেই ছেলে আমার কবরে চিরনিদ্রায় শুয়ে আছে, এখন আমাদের ভবিষ্যৎ কি হবে জানিনা।

    এমন ঘটনায় নূরে আলম সিদ্দিকী রাকিব (২০) ও জোবায়ের আহমেদ (২১)- এর পরিবারও বাকরুদ্ধ। চারমাসের অন্তঃসত্তা স্ত্রী রেখে রাকিবের এভাবে চলা যাওয়ার কষ্ট কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না পরিবার। পুলিশকে দায়ী করে ছেলে হত্যার বিচার চান বাবা-মা।

    নিহত রাকিবের বাবা আবদুল হালিম বলেন, আমার একমাত্র ছেলে ছিল, পুলিশের গুলিতে আমার ছেলে নিহত হয়েছে, আমি এখন নিঃস্ব, আমার এখন কিছু করার নেই, সন্তানের লাশ কাঁধে নিয়ে কবর দিতে হয়েছে, এই যন্ত্রণা সইবার মতো শক্তি নেই আমার।

    নিহত জুবায়েরের বাবা মাদরাসা শিক্ষক আনোয়ার উদ্দিন বলেন, আমার ছেলের স্বপ্ন ছিল সুন্দর একটি বাংলাদেশের, কিন্তু সেই স্বপ্ন সে দেখে যেতে পারেনি।

    পুলিশের গুলিতে নিহতের ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করে গৌরীপুর উপজেলার সমন্বয়ক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আজ পর্যন্ত কেন্দ্রীয়ভাবে নিহতদের পরিবারের সাথে কেউ কোন যোগাযোগ করেনি। তাদের দুইটি পরিবারের দুইটি সন্তানই ছিল একমাত্র সম্বল, তারা কোন পক্ষ থেকেই কোন সাহায্য সহযোগিতা পায়নি। আন্দোলনে অংশগ্রহণ করতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এই মামলাগুলো অন্যদিকে ধাবিত হচ্ছে। আসলে যারা প্রকৃত অপরাধী তাদেরকে একধরণের দায়মুক্তি দেয়ার চেষ্টা হচ্ছে। মূলত পুলিশের গুলিতে ৩ তরুণের মৃত্যু হয়েছিল, পুলিশকে দায়ী না করে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করার জন্য বিভিন্নজনকে আসামি করা হচ্ছে।

    নিহতদের লাশ উত্তোলনে পরিবারের সহযোগিতা চেয়ে ময়মনসিংহের রেঞ্জ ডিআইজি ড. মো. আশরাফুর রহমান জানান, যে ছাত্রগুলো মারা গিয়েছে, তাদের পোস্টমর্টেম করা হয়নি, এটি একটি তদন্তের ত্রুটি, অতএব এই ত্রুটিগুলোকে যদি এড্রেস করতে হয়, তাহলে অবশ্যই লাশ উত্তোলন করে একটি পোস্টমর্টেম রিপোর্ট নিতে হবে। যদি পরিবারের পক্ষ থেকে সহযোগিতা না করে, তাহলে বিচারকার্যক্রমে যে ভবিষ্যৎ কি হবে তা এই মুহূর্তে বলা যাবে না। তাই পরিবারকে সার্বিক সহযোগিতা করতে হবে।

    এমআর

    ট্যাগ :

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    চলতি সপ্তাহে সর্বাধিক পঠিত

    সর্বশেষ প্রকাশিত

    Loading…