চলতি মৌসুমে ভারি বৃষ্টিপাতে যশোর জেলার সর্ববৃহৎ এড়োলের বিলে মাঠের পর মাঠ ধান নষ্ট হয়ে গেছে। আবাদী জমিতে বর্তমানে ঘাস জন্মেছে। জলাবদ্ধতায় কারনে মারাত্নক ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে চাষিরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। দীর্ঘদিন খনন না করা, পানি নিষ্কাশনে ধীরগতি জলাবদ্ধতা সৃষ্টির প্রধান কারণ বলে ধান চাষিরা জানিয়েছেন।
সূত্রে জানা গেছে, যশোর সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের দোগাছিয়া, আহসাননগর, বাগডাঙ্গা, ঝাউদিয়া, বাদিয়াটোলা, সাজিয়ালী, শ্যামনগর, ভাগলপুর, কমলাপুর, জগহাটি, গোবিলা, ইসলামপুর, ঝিকরগাছা উপজেলার, কালেমখোলা, চৌগাছার দশ পাকিয়া বাড়িয়ালী, রাণীয়ালী, দুড়িয়ালী, সলুয়া, মাছরাঙা, গোবিন্দপুর গ্রামের সহস্রাধিক কৃষক এড়োলের বিল সংলগ্ন প্রায় ৩শ’ একর জমিতে ধানের আবাদ করে। সবচেয়ে বেশি ধানের আবাদ করে থাকে সদরের দেয়াড়া মডেল ইউনিয়নের চাঁন্দুটিয়া, আরিচপুর ছোট গোবিন্দপুর, ঝাউদিয়া ইসলামপুর, দৌগাছিয়া চৌগাছা উপজেলার পাশাপোল, ফুলসারা গ্রামের চাষিরা।
চান্দুটিয়া গ্রামের চাষি শফিকুল ইসলাম জানান, আমন মৌসুমে তিনি ৪ বিঘা জমিতে ধানের আবাদ করেছিলেন। দুই দফায় টানা বর্ষণে তার ধান পানির নিচে তলিয়ে যায়। গড়ে ১ বিঘার একটু বেশি জমির ধান ভালো আছে। বাকি ধান নষ্ট হয়ে গেছে।
আরেক চাষি শামসুর রহমান জানান, জলাবদ্ধতায় তার ৩ বিঘা জমির ধান নষ্ট হয়ে গেছে। এতে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছেন।
ফুলসারা গ্রামের মতিয়ার রহমান জানান, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে তার ধান নষ্ট হয়েছে। এতে তিনি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন।
চান্দুটিয়ার কয়েকজন কৃষক জানিয়েছেন, তাদের গ্রামের চাষিরা বেশির ভাগ ধানের আবাদ করে এড়োলের বিল সংলগ্ন খালের ওপারে। এটি হলো বিলের সংযোগ খাল। এবারও হাজার হাজার বিঘা জমিতে ধানের আবাদ করেছেন। এড়লের বিলে যখন জলাবদ্ধতা দেখা দেয় তখন ধান ক্ষেতের সাথে খালটিও পানি ভর্তি হয়ে পড়ে। চলতি মৌসুমে ভারি বর্ষণে মাঠের পর মাঠ ধান পানিতে তলিয়ে যায়। পানি নিষ্কাসনের কোন ব্যবস্থা না থাকায় ক্ষেতের পানি সরতে দীর্ঘ সময় লাগে। ততক্ষণে ধানের গাছ নষ্ট হয়ে যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বৃহৎ বিল এড়োলের পানি নিষ্কাশনের জন্য বিলের ভেতর দিয়ে প্রায় ১২ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি সংযোগ খাল রয়েছে। কিন্তু সংস্কারের অভাবে পানি নিষ্কাশন ব্যাহত হওয়ায় বিলের ৩৬৫টি মৌজার বিস্তীর্ণ এলাকায় ফসল উৎপাদন ব্যাহত হয়। সমস্যা সমাধানে ২০১১-১২ সালে বিএডিসির মাধ্যমে ১ কোটি টাকা ব্যয়ে খালটি পুনঃ খনন করা হয়। এরপর কৃষকরা কিছুটা সুফল পাচ্ছিলেন। দীর্ঘদিন খাল খনন না করায় একটু ভারি বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর যশোরের উপ পরিচালক ড. সুশান্ত কুমার তরফাদার জানান, ভারি বর্ষণে এড়োলের বিল এলাকার অনেক জমির ধান নষ্ট হয়ে গেছে। এটা সত্যিই দুঃখজনক।
এইচএ