ময়মনসিংহের ত্রিশালে বিসিএস কনফিডেন্স কোচিং সেন্টারের শাখা পরিচালক মেহেদী হাসানের বিরুদ্ধে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। স্পেশাল ব্যাচের কথা বলে বিপুল পরিমাণ টাকা নেওয়ার পর কোর্স সম্পন্ন না করেই কোচিং সেন্টার বন্ধ করে দেন তিনি।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাককানইবি) পাশে এবং ত্রিশাল বাজারে দীর্ঘদিন ধরে বিসিএস কনফিডেন্সের শাখা পরিচালনা করে আসছিলেন মেহেদী। তবে নভেম্বরের শুরুতে ক্লাস বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর থেকে তিনি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করেছেন বলে জানা গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী লিমা আক্তার জানান, “আমি গত জুন মাসে ১১ হাজার ২০০ টাকা দিয়ে স্পেশাল ব্যাচে ভর্তি হই। প্রথমদিকে ক্লাস চললেও কোরবানি ঈদের পর থেকে ক্লাস অনিয়মিত হয়ে যায়। নভেম্বরের ১ তারিখ থেকে কোচিং পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকেও বের করে দেওয়া হয়েছে। এখন টাকাও ফেরত দিচ্ছে না।”
স্থানীয় সরকার ও নগর উন্নয়ন বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রেহানা চৈতির অভিজ্ঞতাও একই। তিনি বলেন, “দশ হাজার ২০০ টাকা দিয়ে ভর্তি হয়েছিলাম। ভর্তি হওয়ার সময় এক্সট্রা ক্লাস ও পরীক্ষার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। কিন্তু নরমাল ক্লাসও ঠিকমতো পাইনি। টাকা দিতে দেরি হলে ভর্তি আইডি বন্ধ করার হুমকি দেওয়া হয়। পরে টাকা দিলেও কোনো সার্ভিস পাইনি।”
অর্থনীতি বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ফাহিম হোসেন বলেন, “সেপ্টেম্বরে ৪৭তম বিসিএস প্রস্তুতির জন্য সাত হাজার টাকা দিয়ে ভর্তি হই। এক মাসের মধ্যে শিট ও ক্লাসের কথা বললেও কিছুই পাইনি। নিম্নমানের শিক্ষকের ক্লাস করানো হয়। নভেম্বরে ক্লাস বন্ধ করে দেওয়ার পর আমাদের গ্রুপ থেকেও রিমুভ করে দেওয়া হয়। কেউ কেউ বারো হাজার টাকাও দিয়েছে।”
পপুলেশন সায়েন্স বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তুমেল তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, “পরিচিত হওয়ার সুবাদে ১১ হাজার টাকা দিয়ে ভর্তি হই। মেহেদী ভাই ক্লাস ও অন্যান্য সুবিধার প্রতিশ্রুতি দিলেও কোনো কিছু ঠিকভাবে পাইনি। পরে আমাদের বিসিএস কনফিডেন্স গ্রুপ থেকেও বের করে দেওয়া হয়। আমরা প্রতারিত হয়েছি।”
এ বিষয়ে মেহেদী হাসানের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার সঙ্গে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।
বিসিএস কনফিডেন্সের প্রধান শাখার এক কর্মকর্তার কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমরা অভিযোগ পেয়েছি এবং বিষয়টি তদন্ত করে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।”
প্রতারিত শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, মেহেদী হাসান দ্রুত টাকা ফেরত না দিলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবেন। শিক্ষার্থীদের এ অভিযোগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্বচ্ছতা ও বিশ্বস্ততার বিষয়টি নতুন করে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। বিষয়টি দ্রুত সমাধানের দাবি জানিয়ে প্রতারিতরা এখন প্রশাসনের সহযোগিতা প্রত্যাশা করছেন।
এইচএ