পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশে শিয়া ও সুন্নি মতাবলম্বীদের মধ্যে সহিংসতায় এ পর্যন্ত ৮২ জন নিহত হয়েছে। গত তিন দিন ধরে চলা এই সহিংসতায় আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১৫৬ জন। সংঘাত বন্ধ করতে দুই মতাবলম্বীদের নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন প্রশাসনিক কর্মকর্তারা।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, রোববার প্রদেশের স্থানীয় এক কর্মকর্তা এসব তথ্য জানিয়েছেন। তবে আলোচনায় এখনো কোনো সমাধান আসেনি বলে জানা যায়। কী আলোচনা হয়েছে তা নিয়েও কিছু জানা যায়নি।
পাকিস্তানে শিয়া-সুন্নির বিরোধ দীর্ঘদিনের। তবে চলতি বছরের জুলাই থেকে সেই বিরোধ সহিংস রূপ নিয়েছে। প্রাণ গেছে বেশ কয়েকজনের। গত বৃহস্পতিবার খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশে শিয়া যাত্রীবাহী গাড়িতে বন্দুকধারীদের হামলায় ৪৩ জনের প্রাণহানির পর সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে।
শনিবার প্রদেশের কুররাম জেলার প্রায় ৩০০ পরিবার তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। ওইদিন গভীর রাত পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন এলাকায় হালকা ও ভারী অস্ত্র নিয়ে সংঘাতে জড়িয়েছেন স্থানীয়রা। তবে রোববার সকালে নতুন করে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় ওই কর্মকর্তা বলেছেন, কুররাম জেলাজুড়ে মোবাইল নেটওয়ার্ক স্থগিত করা হয়েছে এবং প্রধান সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
সুন্নি-সংখ্যাগরিষ্ঠ পাকিস্তানে উপজাতীয় ও পারিবারিক বিবাদের ঘটনা প্রায়ই ঘটে। দেশটিতে শিয়া সম্প্রদায় সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে বৈষম্য ও সহিংসতার শিকার হয়ে আসছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। প্রদেশে পৃথক ঘটনায় সেনাবাহিনীর অন্তত ২০ সেনার প্রাণহানির মাত্র কয়েকদিন পর সর্বশেষ এই সাম্প্রদায়িক সংঘাতের সূত্রপাত হয়েছে।
এ পর্যন্ত নিহতদের মধ্যে কতজন শিয়া এবং কতজন সুন্নি তা কর্তৃপক্ষ জানায়নি। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যক্তি বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, নিহতদের মধ্যে ১৬ জন সুন্নি ও ৬৬ জন শিয়া। আর বৃহস্পতিবারের হামলায় নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশু রয়েছে।
স্থানীয় এক নিরাপত্তা কর্মকর্তার বরাতে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, সমঝোতা করানোর জন্য এরই মধ্যে হেলিকপ্টার এসেছে। কিন্তু সেটি অবতরণ করার আগেই তাতে হামলা করা হয়।
তবে, খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের তথ্যমন্ত্রী মুহাম্মদ আলি সাইফ বলছেন, আলোচনা চলছে। সমাধান আসবে।
এফএস