চট্টগ্রামের রাউজানে ২০০২ সালের চাঞ্চল্যকর জ্ঞান জ্যোতি ভিক্ষু হত্যা মামলার আসামি মো. আজিজুল হককে গ্রেফতার করেছে র্যাব। রবিবার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম মহানগর জেলার দায়রা জজ আদালতে হাজিরা দিতে আসলে তাকে গ্রেফতার করে র্যাব-৭ এর একটি অভিযানিক দল। ২০০৩ সালে ১৫ জুন গহিরা ব্রিক ফিল্ড রাস্তার মাথায় চেয়ারম্যান সিরাজুল হক হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।
গ্রেফতার মো.আজিজুল হক রাউজানের হিংগলা ইউনিয়নের আব্দুল মোনাফের ছেলে। তার বিরুদ্ধে রাউজান থানায় হত্যা, অস্ত্র আইন, অপহরণ, ডাকাতিসহ ১২টির অধিক মামলা রয়েছে। রাউজান থানার তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী হিসেবে ও তার নাম রয়েছে। আজিজুল হক রাউজান উপজেলা বিএনপি নেতা গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী অনুসারী বলেও জানা যায়।
জানা যায় ২০০৪ সালের রাউজানের ডাবুয়া রাবার বাগান এলাকা থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্রসহ সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাকে গ্রেফতার করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। অনেকদিন কারাগারে থাকার পর প্রভাবশালী রাজনৈতিক মহলের ছাত্র ছায়ায় আবার বের হয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সাথে লিপ্ত হয় আজিজুল।
সরকার পতনের পর রাউজান থানার অস্ত্র লুট করে প্রকাশ্য দিবালোকে চাঁদাবাজিসহ প্রবাসীদের উপর চাঁদাবাজির বিস্তর অভিযোগ রয়েছে।
রাউজান থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ১১ এপ্রিল ২০০২ সালের রাউজানের হিংগলায় বৌদ্ধ আনাত আশ্রম এর পরিচালক জ্ঞান জ্যোতি ভিক্ষুককে তার স্বয়ং কক্ষে জবাই করে হত্যা করে আজিজুল। যে কারণে তখনকার সময় চীন জাপানের সাথে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের উপরে বিরূপ প্রভাব পড়ে।
এছাড়াও রাউজানের ডাবুয়ায় দুই সহোদর স্কুল ছাত্র টিটু বিটুকে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা, পূর্ব গুজরা ইউনিয়নের তৎকালীন চেয়ারম্যান আক্তার হোসেন রাজু, জাহাঙ্গীর আলম মেম্বার, ইদ্রিস মাস্টার, এমদাদ, মোঃ মিয়া, নাসিম, মহরম, রফিক, কৃষ্ণ দত্ত, ইকবাল হোসেন গিয়াস উদ্দিন জামিল সোহেল, রিটন, ফারুকসহ এলাকায় অসংখ্য হত্যাকাণ্ডের সাথে সরাসরি জড়িত।
২০০৩ সালে ১৫ জুন গহিরা ব্রিক ফিল্ড রাস্তার মাথায় একটি দোকানে বসা অবস্থায় গহীরা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সিরাজুল হককে প্রকাশ্য দিবালোকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করে তখন মারাত্মক আহত হয়ে সিরাজুল হকের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে পরে তার পা দুটি কেটে ফেলা হয় এবং একপর্যায়ে মৃত্যুবরণ করেন।
রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল হারুন বলেন, রাউজানের চিহ্নিত আজিজুল হকের বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্র আইন, অপহরণ, ডাকাতির একাধিক মামলা রয়েছে। দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর হাজিরা দিতে এসে র্যাবের হাতে আটক হয়। র্যাব রাউজান থানায় হস্তান্তর করার পর আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এমআর