বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, শেখ হাসিনার পতন একেবারেই মেনে নিতে পারছে না ভারত, তাই বাংলাদেশ নিয়ে মিথ্যাচার করছে বিজেপি ও তার মিডিয়া।
বুধবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ মিছিল পূর্ব সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার আমলে সংখ্যালঘুরা সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হয়েছে। কিন্তু ভারত তখন কোনো প্রতিবাদ করেনি। আর এখন ছাত্র-জনতার বিপ্লবকে ধু্লিসাৎ করতে বাংলাদেশ নিয়ে মিথ্যাচার করছে ভারত। এ সময় লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে দিল্লির দ্বাসত্ব রুঁখে দেয়ার হুঁশিয়ারি দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বললেও মনে মনে গভীর কট্টরপন্থি হিন্দুত্ববাদ পোষণ করেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
রিজভী বলেন, আমার কাছে অবাক লাগে, যে ভদ্র মহিলার (কলকাতার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা ছিল। অসাম্প্রদায়িক, সেকুলার হিসেবে যে রাজনীতিবিদকে চিনতাম তাকেও মনে হলো রাজনীতির জন্য অসাম্প্রদায়িকতার কথা বলতে। ধর্ম নিরপেক্ষতার কথা বলতেন তিনি কিন্তু তার গভীরে ছিল কট্টর হিন্দুত্ববাদ। যে কোনো আদর্শের কট্টরবাদ মানবতার পরিপন্থী। যে কোনো ধর্ম সম্প্রদায়ের কট্টরবাদ মানবতার বিরুদ্ধে যায়।
তিনি বলেন, দেশকে রক্ষা ও মুক্তির জন্য সিরাজ উদ দৌলা ও মোহনলাল যদি একসঙ্গে লড়াই করতে পারে, ঠিক একইভাবে আমরা হিন্দু-মুসলমান একসঙ্গে লড়াই করব। দিল্লির দাসত্বকে খান খান করে দিবো।
তিনি আরো বলেন, এই দেশে যারা ইসলামী রাজনীতি করেন তারাও কিন্তু সাম্প্রদায়িক কথা বলেন না। অন্য ধর্মের প্রতি আক্রমণ করে কোনো কথা বলেন না। এটাই আমাদের ঐতিহ্য।
আপনারা আগরতলায় সহকারী হাইকমিশনে ঢুকে আমাদের পতাকা টেনে নামিয়ে ছিড়েছেন, এটা তো প্রচণ্ড আঘাত। করোনার আঘাতের চেয়ে বড় আঘাত দিয়েছেন ভারতের শাসকগোষ্ঠী। এটা আমরা কখনো ভুলে যাবো না।
ভারত বলে সেকুলার দেশ, ধর্মনিরপেক্ষ দেশ, আজকে তাদের মিডিয়া খেয়ে না খেয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছে। সুবেন্দু বাবুদের তল্পিবাহক হয়েছে বলেও যোগ করেন রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, শ্বেতপত্রে জানা গেছে ২৮ লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। এই টাকা কত টাকা পেয়েছেন সুভেন্দু বাবুরা এটাও আপনারা বলুন, না হলে কেউ কিন্তু বলে দিবে। পৃথিবীর কোন কোন নেতা পেয়েছেন শেখ হাসিনার ২৮ লাখ কোটি টাকার ভাগ। এটা কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ জেনে গেছে এবং হয়তো একদিন আনুষ্ঠানিকভাবে বলে দিবে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের মানুষের দেশরক্ষার অন্তর্নিহিত শক্তি, প্রাণের উম্মাদনা এটা কখনোই ভারত টের পায়নি৷ আপনাদের যদি অশুভ ইচ্ছা থাকে তাহলে আমরাও বলবো, আমাদের নবাবের এলাকা বাংলা, বিহার ও উরিষ্যা আমরা দাবি করবো যদি আপনারা একের পর এক আগ্রাসী ভূমিকা পালন করেন।
আজকে সারা বাংলাদেশের মানুষ জাগরিত উল্লেখ করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, তাদের মনের যে জাগরণ দেশ মাতৃকা রক্ষার জন্য, এখানে হিন্দু মুসলমান এই মাতৃকায় যাদের জম্ম এই মাটির সন্তান তারা। এখানে আমাদের সবার জন্ম। তারা এই দেশকে অন্যের গোলামীর কাছে বিক্রি করবে কেন?
তিনি বলেন, আমরা এখানে যারা আছি তারাতো সিরাজ উদ দৌলা, মোহনলাল, মীর বদনের উত্তরসূরী। তাই ভারতীয় আগ্রাসনের জন্য আমরা লড়বো। এটা আমাদের ঐতিহ্যের মধ্যে আছে। আপনারা আগরতলা সহকারী হাইকমিশনে আমাদের পতাকা নামিয়ে ছিড়েছেন। এটাতো প্রচন্ড আঘাত। এটা আমরা কোনদিনও ভুলে যাবো না।
এইচএ