দেশের টেলিভিশনগুলোতে কর্মরত ১৫০ জনের বেশি সাংবাদিককে চলতি বছর চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। ৩৫ শতাংশ টেলিভিশনে (টিভি) বেতন হয় অনিয়মিত। আর ২০ শতাংশ টিভিতে কর্মীদের বেতন ২ থেকে ৫ মাস পর্যন্ত বকেয়া রেখে দেওয়া হয়। দেশের ৩০টি টিভির ওপর এই জরিপে সম্প্রচার সাংবাদিকদের সংগঠন ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টারের (বিজেসি) জরিপে এই চিত্র উঠে এসেছে।
গতকাল শনিবার (২১ ডিসেম্বর) রাজধানী ঢাকার সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে সংগঠনটির পঞ্চম সম্প্রচার সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জরিপের ফল তুলে ধরেন বিজেসির নির্বাহী ও সম্প্রচার সম্মেলনের যুগ্ম আহ্বায়ক শাহনাজ শারমীন।
জরিপে আরও উঠে এসেছে, আইনি বাধ্যবাধকতা থাকলেও ৪৮ শতাংশের বেশি টেলিভিশনে চাকরিচ্যুতির সুবিধা দেওয়া হয় না।
এ ছাড়া, ৪৪ দশমিক আট শতাংশ টেলিভিশনে চাকরিচ্যুতির জন্য যে নোটিশ সময় দেওয়ার কথা, তা দেওয়া হয় না।
এতে আরও দেখা গেছে, অর্ধেকেরও কম টেলিভিশন চ্যানেল তাদের কর্মীদের সময় মতো বেতন দেয়। ২০ শতাংশ টেলিভিশনে কর্মীদের বেতন দুই থেকে পাঁচ মাস পর্যন্ত বকেয়া রেখে (এরিয়ার) দেওয়া হয়। ৩৫ শতাংশ টেলিভিশনে বেতন অনিয়মিত এবং ভেঙে ভেঙে পরিশোধ করে।
২০০৯ সালে হাইকোর্ট রুল জারি করে নির্দেশনা দিয়েছিলেন, প্রতিটি কর্মক্ষেত্র ও প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি থাকতে হবে। তবে বিজেসির জরিপে দেখা গেছে, ৮২ শতাংশ টেলিভিশনে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি নেই।
স্বল্প সংখ্যক টেলিভিশন চ্যানেলে স্বাস্থ্য বিমা সুবিধা দেয়—মাত্র প্রায় ২০ শতাংশ চ্যানেলে এই সুবিধা রয়েছে। জীবনবিমা নেই ৭২ দশমিক চার শতাংশের। প্রভিডেন্ট ফান্ড ও গ্র্যাচুইটির চিত্র আরও করুণ। প্রায় ৯০ শতাংশ টেলিভিশনেই এই সুবিধা নেই। মাত্র প্রায় এক-চতুর্থাংশ চ্যানেল প্রভিডেন্ট ফান্ড ও ১০ শতাংশ চ্যানেল গ্র্যাচুইটি সুবিধা দিয়ে থাকে।
প্রায় ৯০ শতাংশ টেলিভিশনে ইনক্রিমেন্ট অনিয়মিত। সরকারি ছুটির দিনে অতিরিক্ত সময় কাজের মজুরি বা ওভারটাইম দেয় না ৭২ দশমিক চার শতাংশ টেলিভিশন।
পত্রিকার সাংবাদিকদের জন্য এসব সুবিধা সম্বলিত জাতীয় বেতন কাঠামো থাকলেও সম্প্রচার সাংবাদিকদের জন্য এই ধরনের কোনো সুবিধা নেই।
এইচএ