পটুয়াখালীর গলাচিপায় আন্তঃ ক্যাডার বৈষম্য নিরসনের দাবিতে অফিস ছেড়ে বাইরে গিয়ে এক ঘণ্টার কলম বিরতি পালন করেছেন চারজন ক্যাডার কর্মকর্তা। সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত গলাচিপা কেন্দ্রীয় স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। কর্মসূচি চলাকালে অফিসের কার্যক্রম সাময়িকভাবে ব্যাহত হয়। কেন্দ্রীয় কর্মসূচি অনুযায়ী, ২৪ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এক ঘণ্টার কলম বিরতি পালনের ঘোষণা ছিলো।
এর আগে গত শনিবার (২১ ডিসেম্বর) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় অনুষ্ঠিত সভা থেকে আন্তঃ ক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের অন্তর্ভুক্ত ২৫টি ক্যাডারের কেন্দ্রীয় নেতাদের এক মতবিনিময় সভায় ৫ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। কর্মসূচিগুলো হলো
সোমবার ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪: প্রতিটি ক্যাডার এসোসিয়েশন থেকে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিবৃতি প্রদান, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪: সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এক ঘণ্টার কলম বিরতি, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪: সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত স্ব-স্ব কর্মস্থলের সামনে মানববন্ধন, বিভাগীয় সমাবেশ আয়োজন এবং জনসম্পৃক্ততা বাড়ানো, ৪ জানুয়ারি ২০২৫: ঢাকায় সমাবেশ আয়োজন এবং পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা।
আন্তঃ ক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও প্রশাসন ক্যাডার ছাড়া অন্যান্য ক্যাডারের কর্মকর্তারা বৈষম্যের শিকার। সঠিক সময়ে পদোন্নতি না হওয়া, যোগ্যতা অনুযায়ী সুযোগ-সুবিধা না পাওয়া এবং ২৫% কোটার সঠিক বাস্তবায়ন না হওয়া তাদের প্রধান অভিযোগ।
কলম বিরতিতে অংশ নেন গলাচিপা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. জহিরুন্নবী, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আরজু আক্তার, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সজল দাস, এবং অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা মো. আকরামুজ্জামান।
কলম বিরতিতে মৎস্য কর্মকর্তা মো. জহিরুন্নবী বলেন, "আমাদের দাবি, ক্যাডারভিত্তিক মন্ত্রণালয় প্রথা চালু করা হোক এবং উপসচিব থেকে তদূর্ধ্ব পদে শতভাগ মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ নিশ্চিত করা হোক। বর্তমানে একটি প্রোমোশনের জন্য ১০-১৫ বছর অপেক্ষা করতে হয়, যা অত্যন্ত অযৌক্তিক। আমরা সব ক্যাডারের জন্য সমান সুযোগ চাই।"
তিনি আরও বলেন, "বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে সব ক্যাডারের মধ্যে সমতা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে পদোন্নতি ও পদায়ন নিশ্চিত করা জরুরি।"
বক্তারা সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে দ্রুত সমাধানের আহ্বান জানান। কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া কর্মকর্তারা ন্যায্য দাবির বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
উল্লেখ্য, গত ১৭ ডিসেম্বর সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী জানান, উপসচিব পদে পদোন্নতিতে প্রশাসন ক্যাডারের ৫০ শতাংশ এবং অন্য সব ক্যাডার থেকে ৫০ শতাংশ কোটা রাখার সুপারিশ করবেন তারা। ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সরকারের কাছে এই কমিশনের প্রতিবেদন দেওয়ার কথা রয়েছে। তবে বর্তমান বিধিমালা অনুযায়ী, উপসচিব পদে প্রশাসন ক্যাডারের ৭৫ শতাংশ এবং অন্য সব ক্যাডারের ২৫ শতাংশ কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দেওয়া হয়।
এফএস