এইমাত্র
  • নৌযান শ্রমিক ধর্মঘট স্থগিত
  • এটা মুজিববাদের কবরের ঘোষণা: হাসনাত
  • রংপুর বিভাগে ২৪ ঘন্টায় বৃষ্টির সম্ভাবনা, জানাল আবহাওয়া অফিস
  • ২০২৬ সালের এসএসসির সিলেবাস ও মানবণ্টন প্রকাশ
  • দয়া করে আমার প্রতি একটু ইহসান করুন: মিজানুর রহমান আজহারী
  • কী হতে যাচ্ছে ৩১ ডিসেম্বর?
  • বাসের ছিল না ফিটনেস, চালকের লাইসেন্স মেয়াদোত্তীর্ণ
  • বিমানবন্দরে অর্ধ লক্ষাধিক নেতাকর্মীর ভালোবাসায় সিক্ত কায়কোবাদ
  • বিপিএলে জামাই-শ্বশুর দ্বৈরথ নিয়ে যা বললেন আফ্রিদি
  • মিরপুরে পা রেখেই তাসকিন-নাহিদের প্রসংশায় ভাসালেন আফ্রিদি
  • আজ রবিবার, ১৫ পৌষ, ১৪৩১ | ২৯ ডিসেম্বর, ২০২৪
    দেশজুড়ে

    আশুলিয়ায় তিতাসের অভিযানের নামে চলে ভেল্কিবাজি

    শামীম হাসান সীমান্ত, আশুলিয়া প্রতিনিধি প্রকাশ: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:০৪ পিএম
    শামীম হাসান সীমান্ত, আশুলিয়া প্রতিনিধি প্রকাশ: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:০৪ পিএম

    আশুলিয়ায় তিতাসের অভিযানের নামে চলে ভেল্কিবাজি

    শামীম হাসান সীমান্ত, আশুলিয়া প্রতিনিধি প্রকাশ: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:০৪ পিএম

    আশুলিয়ার বিভিন্ন এলাকায় অবৈধ গ্যাস সংযোগে কাজ করছে ঠিকাদার পরিচয়ের আড়ালে একটি চক্র। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি ও তিতাস গ্যাসের কিছু অসাধু কর্মকর্তাও এর সঙ্গে জড়িত।

    আশুলিয়ার ঘোষবাগ, কাঠগড়া, জিরাবো,জামগড়া,পুকুরপাড়, গোরাট ধনাইদ এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দিনের বেলায় তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিলেও রাতের বেলায় টাকার বিনিময়ে আবার গ্যাস চলে আসে সেই চুলায়। এরপর তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ আবার অভিযান চালিয়ে গ্যাসের রাইজার খুলে নিয়ে গেলে সেই চক্র সেখানে নিম্নমানের রাইজার লাগিয়ে মালিকদের কাছ থেকে টাকা ওঠায়। অনেকে আবার আবাসিক হিসেবে গ্যাসের সংযোগ নিয়ে বাণিজ্যিকভাবে গ্যাসের ব্যবহার করছেন এমন অভিযোগও উঠে এসেছে। কোনো কোনো ভবনে হয়ত ৮টি আবাসিক চুলার অনুমোদন রয়েছে কিন্তু সেখানে ২৩টি চুলাও জ্বলতে দেখা গেছে।

    অবৈধ সংযোগের ব্যাপারে অনেকে জানলেও ওই চক্রের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পান না কেউ। কুরগাও এলাকার নতুন মসজিদ সংলগ্ন একটি ভবনে তিতাস গ্যাসের অবৈধ সংযোগ রয়েছে। এটা জেনেও সাভার তিতাস গ্যাস কতৃপক্ষের পক্ষ থেকে কোন অভিযান পরিচালনা করা হয় নাই। এছাড়াও কাশিমপুর এলাকায় দিনে অভিযান পরিচালনা করলেও রাতেই আবার সেখানে পুনরায় সংযোগ দেয় একটি চক্র।

    একটি ভবনের বাসিন্দা জানান, তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ একাধিকবার অভিযান চালিয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে। কিন্তু সকালে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করলেও রাতের আঁধারে পুনরায় দেওয়া হয় সংযোগ।

    আশুলিয়া ও কাশিমপুরের গ্রাহকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এরকম আরও অনেক ভবন আছে। সবাই জানলেও এ নিয়ে কেউ প্রকাশ্যে মুখ খুলতে রাজি না। তাদের ভাষ্য, এই সিন্ডিকেটের সদস্যরা বিভিন্ন এলাকায় অবৈধ সংযোগ প্রদানের পাশাপাশি বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে ঘুরে ঘুরে বিল বই চেক করে থাকে। এ সময় অতিরিক্ত চুলা পেলেই প্রতি চুলার জন্য এক বছরের জরিমানা করে সংযোগ বিচ্ছিন্নের হুমকি দিয়ে মোটা অঙ্কের অর্থ আদায় করে থাকে।

    আশুলিয়ার বিভিন্ন এলাকার লোকজনের দাবি, গত এক বছরে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ অভিযান চালিয়ে যতগুলো রাইজার কেটে নিয়েছে তার বেশিরভাগই পুনরায় অবৈধভাবে সংযোগ দেওয়া হয়েছে। বাসা বাড়ির পাশাপাশি বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানও রয়েছে অবৈধ গ্যাস সংযোগ।তিতাস কতৃপক্ষের পক্ষ থেকে একবার অভিযান পরিচালনা করলেও পরের দিন আবার পুনরায় সংযোগ হয়ে যায়।

    লাখ লাখ টাকা ব্যয় করে অভিযান পরিচালনা করলেও কোনো সুফল আসে না। যেই লাউ সেই কদু। একটি অভিযান পরিচালনায় পুলিশ পাহারা লাগে, লেবারদের জন্য আলাদা বাজেট করতে হয়। এছাড়াও কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং বিভিন্ন বিভিন্ন প্রতিনিধি তাদের আপ্যায়ন ও যাতায়াত থেকে শুরু করে সমস্ত খরচ কর্তৃপক্ষকে বহন করতে হয়। কিছু গ্রাহককে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জরিমানা করা হলেও তার পরিমাণ খুবই কম হওয়ায় অন্যরা অবৈধ সংযোগ নিতে সাহস দেখায়।

    অবৈধ সংযোগের সঙ্গে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজশের কথা অনেকে বললেও প্রতিষ্ঠানটি সাভার ও আশুলিয়া অঞ্চলে নিয়মিতই অভিযান পরিচালনা করে থাকে।

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মচারী বলেন, “সংযোগ বিচ্ছিন্নকালে দুই কিলোমিটার পাইপ তুলতে গিয়ে দেখতে পাই নিম্নমানের ২ ইঞ্চি অথবা ১ ইঞ্চি পাইপ দিয়ে সংযোগ নিয়েছে। এটা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।”

    এক দশকের বেশি সময় ধরেই দেশে নতুন আবাসিক সংযোগ দেওয়া বন্ধ রয়েছে। নতুন ভবনের মালিকদের এখন সিলিন্ডারের এলপি গ্যাসই ব্যবহার করতে হয়। কিন্তু এই সময়েও টাকার বিনিময়ে গ্যাস সংযোগ দেওয়ার অভিযোগ আছে মেহেদী নামের একজন ঠিকাদারের বিরুদ্ধে।

    তবে ঠিকাদার মেহেদী এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আগে কিছু সংযোগ ছিল। এখন কোনো কাজকর্ম নেই। আমার বিরুদ্ধে যারা অভিযোগ তুলেছে, সব মিথ্যা। আমি এখন আর কোনো অবৈধ গ্যাস সংযোগের সঙ্গে জড়িত নই।”

    তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের আশুলিয়া জোনাল অফিসের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আবু সালেহ মোহাম্মদ খাদেমুদ্দীন বলেন, রাতের আঁধারে যদি কেউ পুনরায় সংযোগ দেয় তা দেখবে প্রশাসন আমাদের কাজ নয় তাদের খোঁজ নেওয়া। একটি উচ্ছেদ অভিযানে কত টাকা ব্যয় হয় এই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা আপনার জানার বিষয় নয় এটা ম্যানেজমেন্টের বিষয়।

    আশুলিয়াতে কতগুলো বৈধ গ্রাহক এবং কতগুলো অবৈধ গ্রাহক আছে এই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তা এই মুহূর্তে আমার জানা নাই। আদমশুমারির মত কতগুলো বৈধ কতগুলো অবৈধ তা জানা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।

    এইচএ

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    Loading…