বাংলাদেশ-মিয়ানমার টেকনাফ সীমান্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন অন্তবর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফট্যানেন্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
এসময় উপদেষ্টার সফর সঙ্গী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান ছিদ্দিকীসহ কক্সবাজার ও টেকনাফে কর্মরত সীমান্ত প্রহরী বিজিবির সিনিয়র কর্মকর্তারা।
পরিদর্শন শেষে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে মিলিত হয়ে উক্ত সীমান্ত এলাকার বিভিন্ন সমস্যার সফলতা আর ব্যর্থতার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরেন।
একপর্যায়ে ব্রিফিংয়ে উপস্থিত হওয়া গণমাধ্যমকর্মীরাও টেকনাফে বৈধ ব্যবসার দ্বার উন্মোচন করার দাবি করার পাশাপাশি লাগাতার অপহরণ, মাদক, রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের সমস্যা নিয়ে নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। মাদক এটা অনেক পুরাতন সমস্যা। মাদক টেকনাফের জন্য বিখ্যাত বলে আখ্যায়িত করেন।
মাদক, মানব, অপহরণ দমন করার লক্ষ্যে অত্র এলাকার জণগণকে সচেতন হয়ে সংশ্লিষ্ট আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদেরকে সহযোগিতা করার আহ্বানও জানান।
প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি আরো বলেন, এখনো সীমান্তে গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। তবে সীমান্তবাসীর নিরাপত্তায় বিজিবি ও কোস্টগার্ড পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। এতে সীমান্তবাসীর আতঙ্ক হওয়ার কারণ নেই। সীমান্ত সম্পূর্ণভাবে আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সীমান্তে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছি। সীমান্তে সব বাহিনীর জনবল বৃদ্ধি করা হয়েছে।
উপদেষ্টা বলেন, সীমান্ত বাহিনীর অগোচরে ৬০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশ অনুপ্রবেশ করেছে। কিছু অসাধু বাংলাদেশি দালাল রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করাচ্ছে। এ দালালচক্রকে প্রতিহত করতে সবার সহযোগিতা দরকার। না হলে এরা ভয়ংকর হয়ে উঠবে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনুস সবশেষ জাতিসংঘ সম্মেলনে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য বিশ্ব নেতৃবৃন্দের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। পরিস্থিতি যাই হোক অবৈধ অনুপ্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের সীমানা ঘেঁষা মিয়ানমারের আরাকান রাজ্য এখন বিদ্রোহী গোষ্ঠী নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর থেকে, দেশের সীমান্তবর্তী এলাকায় শান্তি-শৃংখলা সম্প্রীতি বজায় রাখতে সেদেশের বিপ্লবী গোষ্ঠী এবং জান্তা সরকারের সঙ্গেও বাংলাদেশ সরকারের যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সোমবার দুপুরের দিকে হেলিকপ্টরযোগে ঢাকা থেকে টেকনাফ এসে পৌঁছান। পরে কক্সবাজার টেকনাফে কর্মরত বিজিবি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এরপর টেকনাফ ২ বিজিবির কয়েকটি বিওপি ও সীমান্ত এলাকার বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট পরিদর্শন করে সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন।