এইমাত্র
  • সুবাতাস বইছে ঢাকা-দিল্লি সম্পর্কের পালে
  • মেসিকে রাষ্ট্রপতি পদক দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র
  • নির্বাচনের দুটি সম্ভাব্য সময় জানালেন প্রধান উপদেষ্টা
  • জম্মু ও কাশ্মীরে ৩ ভারতীয় সেনা নিহত
  • বাধ্যতামূলক ছুটিতে ফার্স্ট সিকিউরিটির এমডি
  • আজহারীর মাহফিল শেষে থানায় জিডির হিড়িক!
  • ৩২ বছর গোসল না করে রেকর্ড ভারতীয় সাধক গঙ্গাপুরির
  • দেশটাকে পুটলা করেছে হাসিনা পরিবার: জামায়াত আমির
  • টেকনাফের নাফনদে কোস্টগার্ডের সাথে গোলাগুলি
  • দেশে নতুন করে ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত সৃষ্টি হয়েছে: মির্জা ফখরুল
  • আজ রবিবার, ২১ পৌষ, ১৪৩১ | ৫ জানুয়ারি, ২০২৫
    দেশজুড়ে

    নওগাঁয় বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনা, গত এক বছরে নিহত ৬৭

    আব্দুল মান্নান, নওগাঁ প্রতিনিধি প্রকাশ: ২ জানুয়ারি ২০২৫, ০২:৩৭ পিএম
    আব্দুল মান্নান, নওগাঁ প্রতিনিধি প্রকাশ: ২ জানুয়ারি ২০২৫, ০২:৩৭ পিএম

    নওগাঁয় বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনা, গত এক বছরে নিহত ৬৭

    আব্দুল মান্নান, নওগাঁ প্রতিনিধি প্রকাশ: ২ জানুয়ারি ২০২৫, ০২:৩৭ পিএম

    দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের জেলা নওগাঁয় বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনা। গত এক বছরে এ জেলায় অন্তত ৬৭ জন নিহত হয়েছে। আহত কমপক্ষে অর্ধশতাধিক মানুষ। দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে যানবাহনের বেপরোয়া গতি, অদক্ষ চালক আর ওভারটেকিং প্রবণতাকে দায়ী করা হচ্ছে।

    জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয় সুত্রে জানা গেছে, সদ্য বিদায়ী ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাস থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থানে ৪৮টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। এতে নিহত হয় ৫৩ জন আর আহত হয় ৩৪ জন। এছাড়াও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত খবর অনুযায়ী ডিসেম্বর মাসেই বেশ কিছু সড়ক দুর্ঘটনায় আরও ১৪ জন মৃত্যুর মিছিলে যুক্ত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ১৫ জনের মতো। এবং বছরের শুরুতেই ১ জানুয়ারি নিহত হয়েছে ২ জন, আহত প্রায় ৪ জন।

    জানা যায়, নওগাঁয় ভটভটি, নসিমন-করিমন, বালুর ট্রাক এবং ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এসব যানবাহন নিয়ে যারা সড়কে নামছেন, তারা অধিকাংশই অদক্ষ চালক। এর ফলে কখনো নিজেই মৃত্যুমুখে পতিত হচ্ছেন, আবার কখনো অন্যকে মারছেন।

    এছাড়াও সড়কে আইন না মানা, যানবাহনের বেপরোয়া গতি, অদক্ষ চালক, ওভারটেক প্রবণতায় আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনা। সড়কে অবৈধ যানের অবাধে চলাচল, সিএনজি, ব্যাটারি চালিত অটোরিশা, বালুবাহী ট্রাক, ইটভাটার ট্রাক্টর ও পাওয়ার টিলারের বেপরোয়া চলাচল দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। রয়েছে ট্রাফিক পুলিশের অব্যবস্থাপনাও বলে মনে করছেন সচেতন মহল।


    তবে মূল অভিযোগ যাদের বিরুদ্ধে তারা দায় চাপাচ্ছেন একে অপরের উপর। বাস চালকদের দাবি সড়কে সিএনজি, নসিমন, করিমন, ভটভটিসহ অন্যান্য যানবাহন দূর্ঘটনার জন্য দায়ী।

    পুলিশের দেওয়া তথ্যের ভিওিতে মামলার পূর্নবিবরণে কারণ হিসেবে দেখা যায়, বিভিন্ন ধরনের পরিবহন দূর্ঘটনা কবলিত হলেও অধিকাংশ দূর্ঘটনা মোটরসাইকেল কেন্দ্রিক। তারপরেই রয়েছে ট্রাক-বাস, সিএনজি-ইজিবাইক সহ অন্যান্য পরিবহন। সেই সাথে জেলার সড়ক দূর্ঘটনা প্রবন কিছু এলাকা রয়েছে সেগুলোতে বেশি দূর্ঘটনা হয় তার মধ্যে নওগাঁ-রাজশাহী মহাসড়কের জলিল চত্বর হতে হাঁপানিয়া, চকগৌরী, নওহাটা চৌমাশিয়া মোড় উল্লেখযোগ্য।

    নওগাঁ শহরের বালুডাঙ্গা বাস ট্রামিনালে কয়েকজন বাস চালকের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, সড়ক দুর্ঘটনার মূল কারণ হলো সড়কে অবৈধভাবে ভটভটি, নসিমন, সিএনজি ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল। এসব যানবাহনের চালকরা ডান-বাম বুঝে না। তাদের কোন প্রশিক্ষন নেই। সাইড চাইলেও দেয় না। আবার কোনরকম সাইড দিলেও অনেক সমস্যাই পড়তে হয়। এজন্য দুর্ঘটনারোধে এসব অবৈধ যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করতে হবে।

    সমাজকর্মী নাইস পারভীন বলেন, নওগাঁয় সড়ক দুর্ঘটনার মূল কারণ হলো অবৈধ যানবাহন চলাচল। এই অবৈধ যানবাহন চলাচলের কারণে সড়ক দুর্ঘটনা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। প্রতিদিন সড়কে যেভাবে মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে এতে পরিবারগুলো নি:স্ব হয়ে যাচ্ছে। সড়ক দুর্ঘটনার বিষয়গুলো খতির দেখা জরুরী। বিশেষ করে যারা ট্রাফিকের দায়িত্বে রয়েছেন তারা তাদের দায়িত্ব যে স্থানে, যে সময়ে হওয়ার কথা সেটি হয়ে থকে না। এজন্য সড়ক দুর্ঘটনার রোদে সরকারিভাবে আরও সচেতন হওয়া দরকার।


    সিনিয়র সাংবাদিক কায়েস উদ্দিন বলেন, সড়কের যানবাহন চালাতে গেলে যে নিয়ম সেগুলো চালকরা কেউই মেনে গাড়ি চালায় না। প্রশাসনেরও খুব একটা নজর নেই। ট্রাফিক আইনটা যথাযথভাবে কার্যকর করতে হবে। অবৈধ যে সকল যানবাহন রয়েছে সেগুলো আইনের আওতায় আনতে হবে। সড়ক দুর্ঘটনার পেছনে যারা দায়ী তাদেরকে আইনের আওতায় এনে শাস্তি কার্যকর করতে হবে। না হলে সড়কের যে মৃত্যুর মিছিল সেটি কখনোই বন্ধ হবে না।

    নিরাপদ সড়ক চাই নওগাঁ জেলা শাখার সভাপতি এএসএম রায়হান আলম বলেন, আমাদের সবাইকে ট্রাফিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে নিজ নিজ জায়গা থেকে সচেতন হতে হবে। নিরাপদ ড্রাইভিংয়ের জন্য যা সবচেয়ে বড় প্রয়োজন সেটি হলো মনোযোগ। যখনই গাড়ি চালানো হয় তখন খেয়াল রাখা উচিত মনোযোগ যেন গাড়ি এবং রাস্তার দিকেই থাকে। কখনই গাড়ি এবং রাস্তা থেকে মনোযোগ সরানো উচিত না। এটি মাথায় রেখে গাড়ি চালালে দুর্ঘটনা কমে যাবে বলে মনে করেন তিনি।

    বিআরটিএ নওগাঁ সার্কেল এর ভারপ্রাপ্ত সহকারী পরিচালক আফতাবুল ইসলাম বলেন, দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে দেখলে অপ্রাপ্ত বয়স্কদের হাতে গাড়ি দেওয়া, অধিক গতিতে গাড়ি চালানো, নেশাগ্রস্থ অবস্থায় গাড়ি চালানো সহ ওভারটেক করা। দুর্ঘটনা এড়াতে চাইলে অবশ্যই প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত চালক হতে হবে, ট্রাফিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। সেই সাথে গাড়ির ফিটনেস সহ নানামুখী জনসচেতনতা কার্যক্রম বাড়াতে হবে। আমি নওগাঁতে নতুন, তবে বিআরটিএ সকল বিধিমালা অনুযায়ী আমার কার্যক্রম অব্যাহত আছে এবং থাকবে।

    নওগাঁর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাফিউল সারোয়ার বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা রোদে লাইসেন্সবিহীন চালক ও অনিবন্ধিত যানবাহন চলাচল বন্ধে পুলিশ অভিযান পরিচালনা করে থাকে। এছাড়াও চালক, হেলপার ও জনগণনের সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

    সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিনিয়ত মৃত্যুর মিছিলে ছাত্র, যুবক, বৃদ্ধবণিতা এমনকি বাদ নেই মায়ের কোলের নিষ্পাপ শিশুটিও। হৃদয়কে আরো শিহরিত করে যখন একই পরিবারে ৪/৫ জন নিহত হয়। আর কত দেখতে হবে এই চিত্র? এখান থেকে প্রতিকার প্রতিরোধে করণীয় কী, একই প্রশ্ন সকল শ্রেণী পেশা মানুষের।

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    Loading…