কিশোরগঞ্জের ভৈরবে চলছে সরিষার মৌসুম। হলদে ফুলে ঢেকে গেছে ফসলে মাঠ। আর এই ফুল থেকে মৌমাছির মাধ্যমে মধু সংগ্রহে ব্যস্ত মৌ খামারিরা। বছরের এই সময়ে প্রচুর পরিমাণে মধু সংগ্রহ করে বাজারজাত করেন তারা।
ফলে এলাকার চাহিদা মিটিয়ে ঔষধি গুণাগুণ সমৃদ্ধ রোগ নিরাময়কারী এই মধু রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে রপ্তানি করছে মৌ খামারিরা।
স্থানীয় কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর ব্যাপক হারে সরিষার আবাদ করা হয়েছে। ফলে নীল আকাশের নিচে এখন ফসলের মাঠে হলুদ গালিচায় অপরুপ দৃশ্য। প্রৃকতির এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে মৌ খামারিরা জমির পাশে পোষা মৌমাছি নিয়ে শত শত বাক্স স্থাপন করে মধু সংগ্রহ করছেন।
ডিসেম্বরের থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পুরো ৩ মাস খামারিরা মধু সংগ্রহের কাজে ব্যস্ত থাকেন। এক একজন ক্ষুদ্র চাষী ৩০ থেকে ৫০ টিরও বেশি বাক্স নিয়ে মৌমাছি পালনের পাশাপাশি মধু আহরণ করছেন। সপ্তাহে প্রতিটি বাক্স থেকে ৪ থেকে ৫ কেজি আর মাসে ১৪ থেকে ১৬ কেজি মধু সংগ্রহ হয়। চলতি মাসে ১৫০০ কেজি মধু সংগ্রহ হবে বলে আশাবাদী চাষীরা।
এছাড়া কেউ কেউ এক'শ থেকে দেড়'শ বাক্স নিয়ে মধু আহরণ করছেন। প্রতি কেজি মধু ৬শত থেকে ৭০০ টাকা দরে বাজারে বিক্রি হচ্ছে। তাদের এ মধুচাষ দেখতে আশপাশের অনেকে ছুটে আসে।তাছাড়া সরিষা মৌসুমের মধুর গুণাগুণ অটুট থাকায় এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এতে একদিকে যেমন সুস্বাদু ও ঔষধি গুণ সম্পন্ন মধু পাওয়া যায়। অন্যদিকে, তেমনি মৌমাছির মাধ্যমে ফসলের পরাগায়নের ফলে জমিতে অধিক ফলন উৎপাদন হয়।
মৌ খামারি সরুত আলী,আরমান,রায়হান, সাইফুল,সাইমন জানায়, মধু ছাড়াও মূল্যবান ফলেন ও রয়েল জেলি সংগ্রহ করে অধিক দামে বাজারে বিক্রি করতে পারেন তারা। সরকারি ও বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে মধু, ফলেন ও রয়েল জেলি সংগ্রহ করে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করে প্রচুর পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে পারেন তারা। সেই সাথে অধিক পরিমাণে লাভবান হবেন মৌ খামারিরা।
জানতে চাইলে ভৈরব উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আকলি বেগম বলেন, এতে একদিকে যেমন সরিষা ফুল থেকে সু-স্বাদু ও ঔষধি গুণ সম্পন্ন মধু পাওয়া যায়। তেমনি অন্যদিকে মৌমাছির মাধ্যমে ফসলের পরাগায়নের ফলে জমিতে সরিষার অধিক ফলন উৎপাদন হয়। যদি এই অপার সুযোগটি কাজে যুব সমাজ লাগাতে পারে, তাহলে সমাজে বেকারত্বের হার দিন দিন কমে আসবে।
এআই