কিশোরগঞ্জ শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জন্মদিন পালন করেছে ছাত্রদল সমর্থিতরা কিছু শিক্ষার্থীরা। এসময় ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের কথা বলায় মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের উপর ছাত্রদলের হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় দুই শিক্ষার্থী আহত হয়েছে।
এ হামলার প্রতিবাদে মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) দুপুর ১২ টার দিকে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ নজরুল চত্বরে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে একটি মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এসময় মানববন্ধন করতে শিক্ষার্থীদের বাধা দেয় শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ও ভারপ্রাপ্ত ভাইস প্রিন্সিপাল একরাম হাসান জুয়েল। এ ঘটনায় কলেজ ক্যাম্পাসে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এর আগে, গতকাল সোমবার (২০ জানুয়ারি) রাত ১১ টার দিকে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজের ক্যাম্পাসে এই ঘটনা ঘটে। আহত দুই শিক্ষার্থী অধ্যাপক ডা: মনসুর খলিল ছাত্রাবাসের শিক্ষার্থী। আহতরা হলেন এমবিবিএস প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ইকরামুল হক খান (১৯), সাজ্জাদ হোসাইন নাদিম (১৯)। আক্রমণকারীরা হলেন, সৈয়দ নজরুল মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী নাবিল, মোবারক, সিয়াম, আরাত, অপূর্ব ও জাহিদ।
জানা গেছে, কিশোরগঞ্জ শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠা তারপর থেকে ছাত্ররা রাজনীতি নিষিদ্ধ। কিন্তু গত (১৯ জানুয়ারি) রাত ১২টার পর অধ্যাপক ডা. মনসুর খলিল হলের একটি কক্ষে গোপনে মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রদলের ব্যানারে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জন্মদিন পালন করেন কয়েকজন শিক্ষার্থী। এই ঘটনার জানাজানি হলে শিক্ষার্থীরা ফুঁসে উঠে।
এ ঘটনায় গতকাল সোমবার (২০ জানুয়ারি) রাত ১১টার দিকে হলের সকল শিক্ষার্থীরা জরুরি আলোচনায় বসে। এই আলোচনার একপর্যায়ে ছাত্রদল সমর্থিতরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে বাঁকতান্ডায় জড়িয়ে পড়ে। এসময় ছাত্রদল সমর্থিত নাবিল, মোবারক, সিয়াম, আরাত, অপূর্ব ও জাহিদের নেতৃত্বে হামলা চালিয়ে সাজ্জাদ হুসাইন নাদিম ও ইকরামুল খান নামে প্রথম বর্ষের দুই শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে আহত করে। পরে আহতদের উদ্ধার করে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানেও বহিরাগত ছাত্রদল ও যুবদলের নেতাকর্মী গিয়ে আহতদেরকে হুমকি দিয়ে আসে। অভিযোগ রয়েছে যারা বিগত দিনে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলো তারাই এখন ছাত্রদলের ব্যানারে রাজনীতি করার চেষ্টা করতেছে।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থী এস এম রাকিবুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। যারা হামলা করেছে তারা এর আগে আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় ছিল তখন ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল বর্তমানে ছাত্রদলের সাথে জড়িত। ছাত্রদলের কমিটি আনার পায়তারা করছে।
শিক্ষার্থী নাজমুল বাশার নাঈম বলেন, বিগত হাসিনা সরকারের আমলে আমরা দেখেছি ছাত্রলীগের নির্যাতন। আমরা আর ক্যাম্পাসের ছাত্র রাজনীতি চাই না। এজন্য আমরা আজকে মানববন্ধনে উপস্থিত হয়েছি। কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি যারা ছাত্র রাজনীতি আনার পায়তারা করতেছে তাদের যেন রুখে দেওয়া হয়। এ বিষয়ে হল সুপারকে অবগত করেছি। উনি কোন আশ্বাস না দিয়ে অভিভাবক কল করবে বলে জানিয়েছেন।
অধ্যাপক ডা. মনসুর খলিল হলের হল সুপার মীর নুরউস সাদ সৈকতের কাছে এইসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এইসব ঘটনা জানেননা বলে জানান।
এ বিষয়ে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা: মো: মজিবর রহমান বলেন, এখানে সকল দলের রাজনীতি নিষিদ্ধ। বিষয়টি জানার পর দুপক্ষকেই আমরা ডেকে নিয়ে বসেছিলাম। ভবিষ্যতে যেন এমন ঘটনা না ঘটে সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখা হবে।
এবি