কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে সিএনজি অটোরিকশা চালকের মৃত্যুর ঘটনায় কটিয়াদী মডেল থানার ওসিসহ ৫ পুলিশের নামে আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। মারা যাওয়া চালকের নাম ইয়াসিন মিয়া (৪০) তাঁর বাড়ি নরসিংদী সদরে। স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে তিনি কটিয়াদীর জালালপুর ইউনিয়নের চর ঝাকালিয়া গাইনবাড়ি গ্রামে থাকতেন।
মামলার বাদী নিহত ইয়াছিনের মেয়ে মরিয়ম আক্তার। গত রোববার কিশোরগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নং ০৫ এ মামলাটি দায়ের করেন। যার সি আর মোঃ নং ৩৭, তাং ১৯/০১/২০২৫ ইং।
অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যরা হলেন, কটিয়াদী মডেল থানার ওসি মো. তরিকুল ইসলাম, এসআই কামাল হোসেন, এসআই মস্তোফা মিয়া, এএসআই নাহিদ হাসান, কনস্টেবল আশরাফুল ইসলাম। মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য আদালত সোমবারে পিবিআই কে নির্দেশ প্রদান করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ০৬ জানুয়ারি সোমবার রাতে উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের চর ঝাকালিয়া গ্রামে ওসি তরিকুল ইসলামের নির্দেশনায় এস আই কামালসহ চারজন পুলিশ মাদক বিরোধী অভিযানের নামে সিএনজি অটোরিকশা চালক ইয়াসিন মিয়াকে এলোপাথারী কিল, ঘুষি, বুটজুতা পরিহিত পা দিয়ে গোপনাঙ্গে, বুকে,পাঁজরে লাথি মারে ও বেধড়ক পিটিয়ে হত্যা করেন। এরপর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রেরণ করা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহতের স্ত্রী ও পরিবারের লোকজনের অভিযোগ, পুলিশের মারধরে ইয়াসিন মিয়ার মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনার পর অভিযান পরিচালনাকারী চার পুলিশ সদস্যকে কিশোরগঞ্জ পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার করা হয়।
পুলিশের দাবি, এক মাদক ব্যবসায়ীকে ধরতে অভিযানের সময় দৌড়ে পালাতে গিয়ে অচেতন হয়ে মারা যান ওই ব্যক্তি। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় উপজেলার ফেকামারা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ জানায়, লিটনের বাড়িতে মাদকের একটি বড় চালানের খবরে অভিযান চালানো হয়। তবে অভিযানের সময় কোনো মাদক উদ্ধার করা যায়নি। পরে একজন ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ইয়াসিনের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয় এবং রাতেই ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
মামলার বাদী ও নিহতের মেয়ে মরিয়ম আক্তার জানান, ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে পিতা হত্যার বিচার চাই।
মামলা পরিচালনাকারী এডভোকেট মো. আবু তাহের হারুন জানান, নিহতের মেয়ে মরিয়ম আক্তার বাদী হয়ে গত রোববার কটিয়াদী মডেল থানার ওসিসহ পাঁচজনকে আসামী করে আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। আদালত সোমবার ঘটনাটি তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ প্রদান করেন।
কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ( হোসেনপুর সার্কেল) মো. তোফাজ্জল হোসেন জানান, সিএনজি চালক ইয়াসিন মিয়া হত্যাদায়ে কটিয়াদী মডেল থানার ওসিসহ পাঁচ পুলিশের নামে আদালতে মামলা হয়েছে এমন ঘটনা আমার জানা নেই।