টিউলিপ সিদ্দিকের রক্ত শেখ পরিবারের। তাই যুক্তরাজ্যের এমপি হওয়ার পরেও টিউলিপ সিদ্দিকী দুর্নীতিতে জড়িয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, টিউলিপ সিদ্দিক লন্ডনে বড় হয়েছে লেখাপড়া করেছে। ইংল্যান্ডের একজন এমপি দুর্নীতি করবে এটা স্বপ্নেও ভাবা যায় না। কিন্তু তার জিন হচ্ছে বাংলাদেশের শেখ পরিবারের। ওখানে লেখাপড়া করে এমপি হওয়ার পরেও তার জেনেটিকাল যে লাইন সেই লাইন সে ক্রস করতে পারেনি। আর করতে পারেনি বলেই তার বিরুদ্ধে এই অভিযোগগুলো, দুর্নীতির প্রমাণগুলো এখন বেরিয়ে আসছে।
শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) সকালে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক এটিএম খালেদের শাহাদাত বার্ষিকীর আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
টিউলিপের প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি নেতা রিজভী বলেন, ‘রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পে রাশিয়ার সঙ্গে শেখ হাসিনা ও তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ৫০০ কোটি ডলার চুক্তি করেছে। আর সেখান থেকে টিউলিপ ঘুষ নিয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। মালয়েশিয়ার একটি ব্যাংক থেকে সেই টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। এটা একদম সুস্পষ্ট গণমাধ্যমগুলোতে এসেছে।’
গত ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ মুক্তিযোদ্ধাদের সবচেয়ে বেশি অপমাণিত করেছে বলেও অভিযোগ করেন রিজভী। তার মতে, ‘মুক্তিযুদ্ধে আওয়ামী লীগের অবদান তুলনামূলক কম। দলটির ভেতর রাজনৈতিক উন্নয়নের কথা নেই। তারা মনে করতো, তাদের রাজনীতি বাইরে গেলেই সবাই অপরাধী।’
‘আওয়ামী লীগের দুর্নীতির বর্ণনা করে শেষ করা যাবে না। তারা উন্নয়নের নামে টাকা পাচার করেছে।’
এ সময় ভারত কী কারণে শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিয়েছে এমন প্রশ্নও তোলেন রিজভী। বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘আজ শেখ হাসিনা কী স্ট্যাটাসে ভারতে আছে? শেখ হাসিনার দুটি পাসপোর্টই বাতিল হয়েছে। তারপরও ভারত তাকে রাখে কীভাবে? এত বড় একজন দুর্নীতিবাজ, ছাত্র-জনতা হত্যাকারীকে ভারত রাখে কীভাবে?’
শহীদ জননী জাহানারা ইমামের বরাত দিয়ে রিজভী বলেন, ‘আওয়ামী লীগেরই একজন ঘনিষ্ঠ লোক বলেছেন— শেখ মুজিবুর রহমান একজন বড় নেতা ছিলেন। কিন্তু তার পরিবারের প্রতি তিনি দুর্বল ছিলেন। তিনি তার ছেলে-ভাগনেদের কন্ট্রোল করতে পারেনি। জাহানারা ইমাম শেখ হাসিনার কাছের লোক ছিলেন, তিনি এসব বলে গেছেন।’
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে দেশে অনেক উন্নয়ন হয়েছে, দলটির নেতাদের এমন প্রচারণার সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ‘দেশে কিসের উন্নয়ন? সবকিছুতে চাঁদাবাজি করে তাদের আত্মীয়-স্বজনদের প্রতিষ্ঠিত করে গেছে। তারা উন্নয়ন উন্নয়ন করতো, উন্নয়নের মধ্য দিয়েই তো টাকা পাচার করা যায়। উন্নয়ন কী তার বাবার টাকা দিয়ে করেছেন? উন্নয়নের নামে বিদেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা নিয়ে এসে পাচার করেছেন, লুটপাট করেছেন।’
এ টি এম খালেদ হত্যার বিচার দাবি করে তিনি আরও বলেন, ‘এতদিন হয়ে গেলো, তাদের বিচার এখন হয়নি কেন? এ দ্বায় আপনাদের কৃষিবিদদেরও আছে। আমাদের সবার আছে। এরকম একজন প্রখ্যাত ছাত্রনেতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা; তার হত্যার বিচার হলো না— এটা অত্যন্ত কষ্টের বিষয়।’
কৃষিবিদ ড. রাশেদুল হাসান হারুন ও ড. জি কে এম মোস্তাফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় স্মরণ সভায় আরও বক্তব্য দেন- বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক শামীমুর রহমান শামিম, কৃষক দলের যুগ্ম সম্পাদক কৃষিবিদ শাহাদাত হোসেন বিপ্লবসহ নেতারা।