এইমাত্র
  • পুলিশে ‘ছাত্রলীগ’ খুঁজতে ৬ বিসিএসে ফের ভেরিফিকেশন
  • মালয়েশিয়ায় অবৈধ অভিবাসীদের ধরপাকড়: বাথরুমের জানালায় আটকা প্রবাসী
  • রাষ্ট্রপতির অপসারণসহ ৩ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বিএনপির সঙ্গে: হাসনাত
  • রংপুরে জাপার লাঠি মিছিলের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
  • শুধু বদলিই পুলিশের শাস্তি হতে পারে না: সারজিস আলম
  • দেশ পচে গেছে, সংস্কার করতে হবে: মান্না
  • রাষ্ট্রপতি ইস্যুতে দলের ভেতরে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত দেবে বিএনপি
  • শুধু ছাত্রলীগ যুবলীগ নয়, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে
  • ‘ছদ্মবেশে’ বাজার পরিদর্শনে উপদেষ্টা আসিফ
  • দেশের প্রেক্ষাগৃহে আসছে 'পুষ্পা টু'-'ভুলভুলাইয়া থ্রি'
  • আজ রবিবার, ১১ কার্তিক, ১৪৩১ | ২৭ অক্টোবর, ২০২৪
    দেশজুড়ে

    ‘ধর্ম যেমন যার যার, দলও যার যার কিন্তু দেশ আমাদের সবার’

    সাখাওয়াত হোসেন জুম্মা, বগুড়া প্রতিনিধি প্রকাশ: ২৭ অক্টোবর ২০২৪, ১২:৩০ এএম
    সাখাওয়াত হোসেন জুম্মা, বগুড়া প্রতিনিধি প্রকাশ: ২৭ অক্টোবর ২০২৪, ১২:৩০ এএম

    ‘ধর্ম যেমন যার যার, দলও যার যার কিন্তু দেশ আমাদের সবার’

    সাখাওয়াত হোসেন জুম্মা, বগুড়া প্রতিনিধি প্রকাশ: ২৭ অক্টোবর ২০২৪, ১২:৩০ এএম

    জামায়াতে ইসলামী বৈষম্যহীন ও শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ দেখতে চায় উল্লেখ করে দলটির আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘আমরা এমন একটি বাংলাদেশ চাই, যে বাংলাদেশে হিংসা হানাহানি এবং প্রতিশোধের রাজনীতির কবর রচনা হবে।’

    শনিবার (২৬ অক্টোবর) বগুড়ায় জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত এক সুধী সমাবেশে তিনি প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন।

    জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান আওয়ামীলীগের নাম না নিয়ে ওই দলটির আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণের নৈতিক অধিকার নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘লোকেরা বলে এরা নাকি আগামী ইলেকশনে আসতে পারে। আমি বলি ভোট তো চাইবে জনগণের কাছে। কোন জনগণের কাছে? ১৮ কোটি মানুষের বিরুদ্ধে যারা হাতে অস্ত্র নিয়ে গুলি ছুঁড়েছিল সেই জনগণের কাছে ভোট চাওয়ার কোন নৈতিক অধিকার তাদের আছে? তাদের নাম এখন বাংলাদেশের জনগণ শুনতে চায় না। বাংলাদেশের মানুষ যাদের গুলির পরোয়া করেনা সেই দুধর্ষ খুনিদেরকে বাংলাদেশের মানুষ প্রকাশ্যে আসতে দিবে না ইনশাআল্লাহ। আগে তাদের বিচার হবে তারপর দেখা যাবে তাদের কি হয়।’

    শহরের আলতাফুন্নেছা খেলার মাঠে জামায়াতে ইসলামী বগুড়া শহর শাখার আমীর অধ্যক্ষ আবিদুর রহমান সোহেলের সভাপতিত্বে সুধী সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ শাহাবুদ্দিন ও বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সহ-সভাপতি গোলাম রব্বানী।

    অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন, জামায়াতে ইসলামীর জয়পুরহাট জেলা শাখার আমীর ডা. ফজলুর রহমান সাঈদ ও সিরাজগঞ্জ জেলার আমীর শাহনূর আলম।

    জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা.শফিকুর রহমান শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়ার দিকে ইঙ্গিত করে সুধী সমাবেশে বলেন, ‘আপনারা বলতেন আমরা পালাবো না। আপনারা বলতেন ওমুকের মেয়ে পালায় না। আজকে তাহলে কি হলো বলেন? ভাল মানুষ দেশ থেকে পালায় না। কে পালায়? তখন উপস্থিত নেতা-কর্মীরা বলেন, ‘খারাপ মানুষ’। তিনি আরও বলেন, ‘ভাল মানুষের দেশ থেকে পালানোর প্রশ্নই ওঠে না। কারণ দেশ তার সে দেশকে ভালবাসে। যাদের ভালবাসা এবং চোখের কান্না মেকি তারাই দেশ থেকে পালিয়ে যায়।’

    ডা. শফিকুর রহমান জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ পর্যায়ের ১১ নেতার ফাঁসির প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘আমাদের প্রিয় নেতৃবৃন্দের একজনও দেশ থেকে শাস্তির ভয়ে পালানোর চেষ্টা করেননি। এমনকি মীর কাশেম আলী যিনি বিদেশে অবস্থান করছিলেন তিনিও দেশে ফিরে এসেছিলেন। কারণ তারা জানতেন তাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পূর্ণভাবে মিথ্যা। তাদের আত্মবিশ্বাস ছিল যে, তারা আদালতে প্রকাশ্যে বলতে পারবে যে তারা নির্দোষ। তারা ফাঁসির মঞ্চে গিয়েছেন কিন্তু চোখের পানি ফেলেন নি। তারা আহাজারি করেন নি। তারা হাসতে হাসতে ফাসির রশি গলায় পড়েছেন।’

    আওয়ামী লীগের জুলুম-নির্যাতনের বর্ণনা দিতে গিয়ে জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেন,২০০৯ সালে বিডিআর সদর দপ্তর পিলখানায় ৫৭জন চৌকশ দেশপ্রেমী অফিসারকে হত্যার মধ্য দিয়ে দেশে জুলুমের রাজত্ব শুরু হয়েছিল। যার সমাপ্তি হয়েছে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট। তিনি আওয়ামী লীগ শাসনামলে প্রতিটি হত্যাকান্ডের বিচার দাবি করে বলেন, ‘অতীতে আমাদের ওপর যেসব বড় বড় অপরাধ করেছে ফ্যাসিস্ট সরকার, আমাদের নেতৃবৃন্দকে খুন করেছে, কার্যালয়ে তালা দিয়েছে, আমাদের নিবন্ধন কেড়ে নিয়েছে, আমাদের প্রতীক কেড়ে নিয়েছে, আমাদের নিষিদ্ধ করেছে- মোটা দাগে যে অপরাধগুলো করেছে তার জন্য আমরা তাদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিব না। কিন্তু তারা যাদেরকে খুন করেছে, গুম করেছে পঙ্গু করেছে মানুষের টাকা চুরি করে বিদেশে পাচার করেছে তার প্রত্যেকটার বিচার হওয়া উচিত।

    বাংলাদেশের মানুষ এখন মুক্ত বাতাসে শ্বাস নিতে পারছে উল্লেখ করে জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেন, তাদের (আওয়ামী লীগের) জুলুম নির্যাতন থেকে বাংলাদেশের কোন এলাকা কিংবা ব্যক্তি বাদ যাননি। শুধুমাত্র স্বৈরাচার এবং তাদের দোসররা ছাড়া। এরা সংখ্যায় অতি নগন্য। অসংখ্য মায়ের বুক খালি করেছে। অসংখ্য বোনকে বিধবা বানিয়েছে অসংখ্য সন্তানকে এতিম বানিয়ে ছেড়েছে। কাউকে করেছে গুম, কাউকে করেছে খুন কাউকে করেছে পঙ্গু।এইভাবে তারা ১৫ বছর ধারাবাহিক তান্ডব চালিয়েছিল। যখনই জনগণ তাদের ন্যায্য দাবি আদায়ের জন্য ফ্যাসিস্টের বিরুদ্ধে দাঁড়াবার চেস্টা করেছে শক্তির জোরে তারা জনগণের আন্দোলনকে দমন করার চেষ্টা করেছে।

    ডা. শফিকুর রহমান জামায়াতে ইসলামীর লক্ষ্য উদ্দেশ্য বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, আমরা এমন বাংলাদেশ দেখতে চাই যে বাংলাদেশে প্রতিটা শিশু জন্ম নেওয়ার পর থেকে মৃত্যু পর্যন্ত একজন নাগরিকের পূর্ণ অধিকার ভোগ করবে। শিশু সে ধনীর ঘরে জন্ম নিয়েছে নাকি গরীবের ঘরে জন্ম নিয়েছে সেটি প্রশ্ন নয়। সে জন্ম নেওয়ার পর তার ৪টি অধিকার রাষ্ট্রকে দিতেই হবে। এক. তার খাওয়া পরার অধিকার, দুই. তার চিকিৎসার অধিকার তিন. তার শিক্ষার অধিকার চার. তার হাতে কাজ তুলে দেওয়ার বা কাজ পাওয়ার অধিকার। এই ৪টি অধিকার তাকে দিতেই হবে। আমরা চাই না এই জাতিকে কেউ আর বিভক্ত করুক। আমরা মেজরিটি মাইনরিটি শব্দ শুনতে চাই না। বাংলাদেশে যারাই জন্মগ্রহণ করেছে তারা সকলেই মর্যাদাবান গর্বিত নাগরিক। ধর্ম যার যার, দলও যার যার প্রিয় দেশটি আমাদের সবার।

    এমআর

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    সর্বশেষ প্রকাশিত

    Loading…