চলতি মৌসুমে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেওয়া প্রণোদনার পেঁয়াজ বীজ পেয়েছে রাজবাড়ীর ৪ হাজার চাষি। প্রতি কৃষককে দেওয়া হয় এক কেজি করে বীজ। ওই বীজ বীজতলা দেওয়ার পর তা আর গজায়নি। ফলে মোটা অঙ্কের লোকসানের শঙ্কায় চাষিরা। নিম্নমানের বীজ দেওয়ায় এমন হয়েছে বলে অভিযোগ চাষিদের ।
আর কৃষি বিভাগ বলছে, চলতি মৌসুমে সরকারিভাবে সরবরাহ করা প্রণোদনার বীজ থেকে চারা গজায়নি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে।
রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার বাবুপাড়া গ্রামের পেঁয়াজ চাষি শহিদুল ইসলাম জানান এবছর কৃষি বিভাগ থেকে তাঁকে এক কেজি বীজ সহায়তা দিয়েছিল। ভেবেছিলেন পেঁয়াজ বিক্রি করে ভালো আয় হবে। কিন্তু তাঁর সেই আশা শেষ হয়ে গেছে। বীজতলা দেওয়ার পর তা আর গজায়নি। ফলে মোটা অঙ্কের লোকসানের শঙ্কা তার।
কৃষক বাচ্চু খান বলেন, সরকার থেকে এক কেজি বীজ দিয়েছিলো ১২ দিন আগে চারা দিয়েছি কিন্তু একটা বীজও জালায়নি।এখন তো আমার বিশাল ক্ষতি। এখন তো পিঁয়াজের দানাও পাওয়া যাচ্ছে না। এক কেজি দানা কিনতে গেলে টাকা লাগবে ১৫-২০ হাজার টাকা। এখন আমি কি করে পেঁয়াজ লাগাবো? কি দানা দিলো কৃষি অফিসাররা?
কৃষক বাচ্চু খানের মত একই অবস্থা জেলার ৪ হাজার চাষিদের। বিনামূল্যে কৃষকের বীজ পাওয়ার আনন্দ পরিণত হয়েছে নিরানন্দে। এ নিয়ে চাষিরা কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাদেরই দায়ী করছেন।তাদের অভিযোগ,সরকারি যে পেঁয়াজ বীজ দিয়েছে তা ভেজাল। বীজতলা দেওয়ার দুই সপ্তাহ পার হলেও কোন চারা গজায়নি। প্রণোদনার পেঁয়াজ বীজই এখন জেলার হাজার হাজার কৃষকের দুশ্চিন্তার কারণ।
আরেক কৃষক বলেন, একটা পিঁয়াজের বীজও গজায়নি। সরকার কৃষকের দানা দিয়েছে উন্নতিন জন্য না ক্ষতির জন্য। এবছর পেঁয়াজ চাষ করা হলো না। সরকার যে দানা দেছে তাতো একেবারে মাইর।একটা দানাও জ¦ালাই নাই। পেঁয়াজ লাগানোর সময় যদি চারা কিনতে যায় তাহলে নিচে টাকা লাগবে ৪০-৫০ হাজার।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে,এবছর জেলার ৩৫ হাজার হেক্টর জমিতে হালি পেঁয়াজের আবাদ হবে। বিএডিসি থেকে সরবরাহকৃত পেঁয়াজ বীজ কৃষি অফিসের প্রণোদনা কর্মসূচির অংশ হিসাবে চলতি বছর জেলায় ৪ হাজার কৃষকের মাঝে বারি-১,বারি-৪ ও তাহিরপুরী জাতের বীজ দেওয়া হয়। প্রতি কৃষককে এক কেজি করে মোট ৪ হাজার কেজি বীজ দেওয়া হয়েছে। প্রণোদনার বীজে চারা না গজানোয় ৫শত হেক্টর জমির পেয়াজ আবাদ ক্ষতিগ্রস্থ হবে। কেন পেঁয়াজ বীজ থেকে চারা গজায়নি সেটা নিয়ে কাজ করছে কৃষি বিভাগ।
রাজবাড়ীর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক, ড.মোঃ শহিদুল ইসলাম বলেন, প্রণোদনার পেঁয়াজ বীজ সরবরাহ করেছে বিএডিসি।পেঁয়াজের বীজ গজাচ্ছেনা এমন খবরে আমরাও বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখেছি বীজ গজায়নি। এ বিষয়ে আমরা তদন্ত টিম গঠন করেছি। আমাদের উদ্ধর্তন কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করেছি। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করে কর্তৃপক্ষকে পাঠানো হয়েছে। কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী কৃষকদের প্রতি বিবেচনা করা হবে।
এমআর