‘উজান ভাটি’, ‘পুরস্কার’-এর মতো বহু কালজয়ী সিনেমার নির্মাতা সি বি জামান আর নেই। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় গত ১৪ ডিসেম্বর রাজধানীর একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ৩টায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
এই প্রবীণ নির্মাতার মৃত্যুর খবর গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন তার ছেলে সি এফ জামান।
জানা যায়, গত ১৩ ডিসেম্বর বেলা পৌনে ১১টার দিকে বাথরুমে পড়ে যান সি বি জামান। এর পরপরই তার কথাবার্তা অসংলগ্ন হয়ে পড়ে। সেদিন তিনটার দিকে তাকে মহাখালীর একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসকরা তাকে তাৎক্ষণিকভাবে আইসিইউতে নেন। সেসময় চিকিৎসকেরা ধারণা করেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছিলেন সি বি জামান।
পরে সি এফ জামান সামাজিক মাধ্যমে জানান, আব্বু হার্ট অ্যাটাক করেছেন। সেই সাথে তার ক্রনিক কিডনি ডিজিজ থাকায় তার হার্টের চারপাশে পানি জমেছে। ক্রিয়েটিনিন বেড়ে গেছে, হিমোগ্লোবিন কমে গেছে। আপাতত ব্লাড ম্যানেজ করে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়ানোর চেষ্টা চলছে, এরপর অন্য ট্রিটমেন্টে যাবে।
সি এফ জামান গণমাধ্যমকে জানান, তাদের পরিবারের সদস্যদের দাফন সিলেটের শাহ জালাল দরগাহ শরীফের কবরস্থানে হয়। সেভাবেই ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
চিত্রজগতে সি বি জামানের পথচলা শুরু পাকিস্তান আমলে। ১৯৬৬ সালে লাহোর ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে সহকারি পরিচালক হিসেবে কাজ শুরু করেন সি বি জামান।
এরপর ১৯৭৩ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত সরাসরি সিনেমা পরিচালনায় সম্পৃক্ত ছিলেন তিনি। এ সময়ে তিনি নির্মাণ করেন ঝড়ের পাখি (১৯৭৩), উজান ভাটি (১৯৮২), পুরস্কার (১৯৮৩), শুভরাত্রি (১৯৮৫), হাসি (১৯৮৬), লাল গোলাপ (১৯৮৯) ও কুসুম কলির (১৯৯০) মতো কালজয়ী সব সিনেমা।
ব্যবসায়িকভাবে সফলতার পাশাপাশি ‘পুরস্কার’ সিনেমাটি ১৯৮৬ সালে ৬ শাখায় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করে। জাতীয় পুরস্কার পাওয়ার পাশাপাশি ‘পুরস্কার’ চলচ্চিত্রটি আন্তর্জাতিকভাবে ভারতের ‘গোয়া ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’, ‘দিল্লী ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’ ও রাশিয়ার ‘তাশখান্দ ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে’ প্রদর্শিত ও প্রশংসিত হয়।
এসএফ