লালমনিরহাটে দিনের বেলাও মিলছেনা সূর্যের দেখা, ঘন কুয়াশা আর হিমেল বাতাসে বেড়েছে জনজীবনে দুর্ভোগ। দিনের বেলায়। ঘন কুয়াশা ও কনকনে ঠান্ডায় বিপাকে পড়েছে শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষ। সেই সাথে হিমেল হাওয়া ও ঘন কুয়াশার কারণে দুর্ভোগ বেড়েই চলেছে শিশু ও বয়স্কদের। বর্তমানে কুয়াশার চাদরে ঢাকা থাকছে চারদিক। ফলে রাতের পাশাপাশি দিনভর অনুভূত হয় কন কনে ঠান্ডা। এতে ব্যাহত হচ্ছে মানুষের স্বাভাবিক কর্মজীবন। বেশি বিপাকে পড়েছে নদীপাড়ের চরাঞ্চলের মানুষজন।
আজ বুধবার (২২ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় রংপুর বিভাগের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কুয়াশার ঘনত্ব বেশি হওয়ায় দিনের বেলায়ও হেডলাইট জ্বালিয়ে সড়কে ধীর গতিতে চলাচল করছে যানবাহন। কনেকনে ঠান্ডায় শীতবস্ত্রের অভাবে কষ্টে আছেন হতদরিদ্র, ছিন্নমূল ও স্বল্প আয়ের শ্রমজীবি মানুষজন। দেখা গেছে,জরুরি প্রয়োজন ছাড়া লোকজন তেমন বাইরে বের হচ্ছেন না। শীতের দাপটে গ্রামাঞ্চলের অনেকেই খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। ঘন কুয়াশার সঙ্গে হিমেল বাতাসে বেশি কষ্টে পড়েছে মানুষসহ গৃহপালিত পশুপাখিরাও।
সদর উপজেলা পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নে প্রতিবন্ধী স্কুলের প্রধান শিক্ষক বিপ্লব রায় (৩২) বলেন, আজকে কুয়াশার সাথে ঠান্ডা অনেকটাই বেশি পড়েছে। বর্তমানে দিনের বেলা তাপমাত্রা কিছুটা বৃদ্ধি পেলেও সন্ধ্যার পর থেকে তাপমাত্রা ব্যাপক হারে কমতে থাকে। ফলে দিন ও রাতে সমান শীত অনুভূত হয়।
বড়বাড়ী ইউনিয়নের বুদারুর চরের কৃষক আমজাদ হোসেন (৫২) বলেন, ঠান্ডায় সকাল সকাল কাজে যোগ দিতে কষ্ট হচ্ছে। বর্তমানে দিনে ও রাতে একই পরিমাণ শীতের তীব্রতায় কষ্ট হচ্ছে। আজকে সকালে ঘুম থেকে উঠেছি কিন্তু ঠান্ডা কারণে কাজে যেতে পারছি না।
একই এলাকার ভ্যান চালক মফিজ মিয়া (৪০) জানান, কষ্ট হলেও নিজের জীবিকার তাগিদে ভোরেই ভ্যান নিয়ে বের হতে হয়েছে। আজ আগের থেকে অনেকটা বেশি ঠান্ডা পড়েছে। এত বেশি ঠান্ডায় ভ্যানে চড়তে চায় না লোকজন। তবুও বের হয়েছি।
এদিকে,লালমনিরহাট ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের নবজাতক ও শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. তপন কুমার রায় বাসস’কে বলেন, শীতের কারণে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে রোগীর সংখ্যা বেশি হচ্ছে হাসপাতালে। বিশেষ করে বহির্বিভাগে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা কয়েকগুণ বেড়েছে। বর্তমানে যেসব রোগীর অবস্থা খুব ক্রিটিক্যাল আমরা শুধু তাদেরকেই ভর্তি নিচ্ছি। এখানে যারা ভর্তি রয়েছেন তাদের বেশির ভাগই সর্দি-জ্বর, ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত। এছাড়াও অনেকের শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি ও খিচুনি রয়েছে। সতর্কতা অবলম্বন করার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, এ ঠাণ্ডায় যথাসম্ভব গরম পানি পান করাতে হবে। আর অসুস্থ হলে তাজা ফলমূলের রস, শাকসবজি ও পুষ্টিকর খাবার বেশি বেশি করে খেতে হবে।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক এইচএম রকিব হায়দার বলেন, ঠান্ডার কারণে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ছিন্নমূল মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ কর্মসূচি আমাদের চলমান রয়েছে।