তুরস্কের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের বোলু পার্বত্য এলাকায় অগ্নিকাণ্ডের শিকার সেই স্কি রিসোর্ট হোটেলে নিহত বেড়ে পৌঁছেছে ৭৬ জনে। এছাড়া এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৫০ জনেরও বেশি মানুষ; তাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলী ইয়ারলিকায়া মঙ্গলবার রাতে এক বার্তায় জানিয়েছেন এ তথ্য। তিনি আরও বলেন, নিহতদের পরিচয় উদ্ধারের চেষ্টা চলছে, তবে অনেকেই পুড়ে দগ্ধ হয়ে যাওয়ায় তাদের পরিচয় এখনও জানা যায় নি।
ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের শিকার হওয়া সেই হোটেলটির নাম গ্র্যান্ড কারতাল হোটেল। বোলু পার্বত্য এলাকার কারতালকিয়া স্কি রিসোর্টের কাছেই হোটেলটির অবস্থান। এ অঞ্চলটি তুরস্কের শীতকালীন পর্যটন অঞ্চল হিসেবে বেশ জনপ্রিয়।
মঙ্গলবার স্থানীয় সময় বিকেল ৩ টা ৩০ মিনিটে আগুন লাগে গ্র্যান্ড কারতাল হোটেলে। আগুনের সূত্রপাত ঘটেছিল রান্নাঘর থেকে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তার বার্তায় বলেন, পাহাড়ি উঁচু-নিচু পথের কারণে আগুন লাগার পর ফায়ার সার্ভিস বাহিনীর কর্মীদের সেখানে পৌঁছাতে সময় লেগেছিল ৪৫ মিনিট। এই ৪৫ মিনিটেই ভয়াবহ রূপ নেয় আগুন।
১২ তলার গ্র্যান্ড কারতাল হোটেলে কক্ষের সংখ্যা মোট ১৬১টি। আগুন লাগার সময় সেখানে ছিলেন ২৩৮ জন অতিথি। স্কুল ছুটি থাকায় অনেক শিশু ও অভিভাবকও ছিলেন এ অতিথিদের মধ্যে।
হোটেলের বাইরের আবরণ কাঠ দিয়ে তৈরি বলে আগুন লাগার পর তা অত্যন্ত দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। মেভলুত ওজের নামের এক প্রত্যক্ষদর্শী রয়টার্সকে বলেন, “এটা ছিল রীতিমতো একটি মহা বিপর্যয়কর ঘটনা। মাত্র আধ ঘণ্টার মধ্যে আগুন পুরো হোটেলকে গ্রাস করে ফেলেছিল।”
আরেক প্রত্যক্ষদর্শী ওমর সাকরাক বলেন, “আতঙ্কে দিশাহারা লোকজনের অনেকই হোটেলের জানালা থেকে লাফিয়ে পড়েছে। আমি নিজে এক ব্যক্তিকে ১১ তলা থেকে লাফিয়ে পড়তে দেখেছি। জানি না তিনি বেঁচে আছেন কি না।”
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা বার্তায় আলী ইয়ারলিকায়া বলেন, “এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড এবং এত প্রাণহানির ঘটনায় যে কষ্ট আমরা পাচ্ছি, তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়।”
পৃথক এক বিবৃতিতে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান বরেন, “আমি শোকাহত। নিহতদের আত্মীয় পরিজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। আহতের সর্বোচ্চ চিকিৎসার জন্য হাসাপাতাল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে আমি এ ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি।”
এবি