এইমাত্র
  • ইসরায়েলি কারাগার থেকে আজ মুক্তি পাচ্ছেন ১১০ ফিলিস্তিনি
  • করদাতাদের আয়কর রিটার্ন জমার সময় বাড়তে পারে আরও ১৫ দিন
  • আমার উপর এবার একটু রহম করো: পরীমণি
  • ওয়াশিংটনে মাঝ আকাশে হেলিকপ্টারের সঙ্গে যাত্রীবাহী বিমানের সংঘর্ষ, বহু হতাহতের শঙ্কা
  • নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় ও আকিজ রিসোর্সের সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর
  • ষড়যন্ত্র করে বিএনপিকে পরাজিত করা যাবে না: টুকু
  • ৯ মাসের জন্য বন্ধ হচ্ছে সেন্টমার্টিন ভ্রমণ
  • পছন্দের ক্লিনিকে টেস্ট না করায় রিপোর্ট ছুড়ে ফেললেন চিকিৎসক
  • পোশাকসহ বিভিন্ন খাাতে বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান রাষ্ট্রপতির
  • জনগণ যদি সঙ্গে না থাকে, তাহলে আপনি কীসের নেতা: তারেক রহমান
  • আজ বৃহস্পতিবার, ১৭ মাঘ, ১৪৩১ | ৩০ জানুয়ারি, ২০২৫
    দেশজুড়ে

    চিকিৎসকের ভুলে পা হারালেন রোগী, তদন্তে এসে ভুড়িভোজে তদন্ত টিম!

    বিল্লাল হোসেন, যশোর প্রতিনিধি প্রকাশ: ২৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:৩১ পিএম
    বিল্লাল হোসেন, যশোর প্রতিনিধি প্রকাশ: ২৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:৩১ পিএম

    চিকিৎসকের ভুলে পা হারালেন রোগী, তদন্তে এসে ভুড়িভোজে তদন্ত টিম!

    বিল্লাল হোসেন, যশোর প্রতিনিধি প্রকাশ: ২৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:৩১ পিএম

    সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন টুটুল মন্ডল। উন্নত চিকিৎসাসেবার আশায় তাকে এই হাসপাতালে আনা হয়। কিন্তু ভর্তির পর থেকে রোগী ও স্বজনদের নানাভাবে হয়রানির শিকার হতে হয়েছে । শেষ পর্যন্ত চিকিৎসকের ভুলে তার একটি পা কেটে ফেলতে হয়েছে। টুটুল মন্ডল ঝিনাইদহ কালীগঞ্জ উপজেলার মনোহরপুর গ্রামের আব্দুল বারিকের ছেলে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী টুটুল কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।

    মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক মুনজুর মুরশিদের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি টিম অভিযোগের তদন্তে আসেন। অভিযোগ উঠেছে, নাম মাত্র তদন্ত কার্যক্রম শেষ করে অন্তত ৪০ জন চিকিৎসক কর্মচারী নিয়ে সরকারি টাকায় ভুড়িভোজ করা হয়।

    টুটুল মন্ডল অভিযোগ করেছেন, গত ২০২৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর সকালে তিনি সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হন। দুর্ঘটনায় তার বাম পা ক্ষত হয়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। সেখানকার ডাক্তার উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করেন। স্বজনরা তাকে ওই দিন দুপুরে যশোর জেনারেল হাসপাতালের সার্জারী-অর্থোপেডিক বিভাগে ভর্তি করেন। কিছু সময় পর ওয়ার্ডে দায়িত্বরত চিকিৎসক এসে তার ক্ষতস্থান ঠিকমতো দেখভাল না করে ক্ষত স্থান সেলাই পরে দেন। পরে চিকিৎসক তার ক্ষত স্থান আর দেখেননি। পরের দিন ২৬ সেপ্টেম্বর চিকিৎসক তাকে ছাড়পত্র দিয়ে বাড়িতে যাওয়ার নির্দেশ দেন। দুই সপ্তাহ পর এসে সেলাই কেটে যাওয়ার নির্দেশনা দেয় হয়।

    টুটুল অভিযোগে আরও বলেন, ছাড়পত্র নিয়ে বাড়িতে যাওয়ার আগ মুহুর্তে জনৈক এক ব্যক্তি বলেন কালীগঞ্জের একটি ক্লিনিকের চেম্বারে অর্থোপেডিক বিভাগের চিকিৎসক আনম বজলুর রশিদ টুলু দেখেন। সেখানে দেখালে ভালো হবে। তার পরামর্শ অনুযায়ী তিনি ওই ক্লিনিকের চেম্বারে ডা. টুলুর চেম্বারে যান। তিনি রোগীর ক্ষতস্থান দেখে ঢাকায় যাওয়ার পরামর্শ দেন। স্বজনরা তাকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর চিকিৎসক নিশ্চিত হন তার পায়ের শিরা শুকিয়ে গেছে। ফলে পায়ে পচন ধরেছে। যশোর জেনারেল হাসপাতালের অর্থোপেডিক বিভাগের চিকিৎসকদের ভুলে এমনটি হয়েছে। ঢাকার চিকিৎসকরা গত ২ অক্টোবর অপারেশনের মাধ্যমে তার পা টি কেটে ফেলেন। চিকিৎসকের ভুলের কারণে এখন তিনি পঙ্গুত্ব জীবন-যাপন করছেন।

    টুটুল মন্ডল জানিয়েছেন, যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তির পর থেকে চিকিৎসাসেবায় নানা হয়রানির শিকার হয়েছেন। এখানে ভর্তির পর শয্যা খালি থাকলেও তাকে দেয়া হয়নি। পরে ৩শ’ টাকার বিনিময়ে শয্যা মেলে। ট্রলিতে দুই তলায় আনা নেয়া করতে ২০০ টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে। এছাড়া প্রতিবার ড্রেসিং করতে ১শ’ টাকা করে নেয়া হয়। তার মতো কেউ যেন অপচিকিৎসায় পঙ্গু বা জীবন না হারায় এজন্য তিনি যশোর জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ে লিখিত অভিযোগ করেন। মন্ত্রনালয় খুলনা স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক ডা. মনজুরুল মুরশিদকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। মঙ্গলবার ডা. মনজুরুল মুরশিদের নেতৃত্বে ৩ কর্মকর্তা অভিযোগ তদন্ত করতে আসেন। বাকি দুই জন হলেন খুলনা বিভাগের উপপরিচালক ডা. মুজিবুর রহমান ও সহকারী পরিচালক অর্পনা বিশ্বাস।

    অভিযোগ উঠেছে, তদন্তের নামে কমিটি ভুড়িভোজে ব্যস্ত ছিলেন। তারা নামমাত্র তদন্ত করে হাসপাতালের অন্তত ৪০ চিকিৎসক ও কর্মকর্তা-কর্মচারিকে নিয়ে হাসপাতালের সভাকক্ষে সরকারি টাকায় ভুড়িভোজ করেন। যা নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়।

    ভুক্তভোগী রোগী টুটুলের স্বজন আসাদুল ইসলাম জানান, তদন্তের নামে তাদের ডেকে আনা হয়। কিন্তু তদন্তে তারা সন্তোষ্ট হতে পারেননি। নামমাত্র তদন্তের পর তারা খাওয়া দাওয়া নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন।

    এই বিষয়ে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হিমাদ্রী শেখর জানান, এক রোগীর অভিযোগ তদন্তের জন্য খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের নেতৃত্বে একটি টিম হাসপাতালে আসেন। তারা তদন্ত করে চলে গেছেন। চিকিৎসক ও কর্মকর্তা-কর্মচারিদের নিয়ে ভুড়িভোজের বিষয়টি একটু বাড়িয়ে বলা হয়েছে।

    খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. মনজুরুল মুরশিদ জানান, তদন্তে কোন গাফিলতি করা হয়নি। ভুড়িভোজের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে বলেন মেহমান হিসেবে আপ্যায়িত হয়েছেন।

    এফএস

    ট্যাগ :

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    চলতি সপ্তাহে সর্বাধিক পঠিত

    সর্বশেষ প্রকাশিত

    Loading…