ফটিকছড়ি উপজেলার অসহায় মেধাবী শিক্ষার্থী তানজিনা আলমের পাশে দাঁড়িয়েছে উপজেলা প্রশাসন। তাঁর শিক্ষা জীবনে আর্থিক সহায়তা দিয়ে, ভবিষ্যতের প্রতি শঙ্কা দূর করতে সাহায্য করেছে প্রশাসন। ২৮ জানুয়ারি মঙ্গলবার ফটিকছড়ি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী তানজিনার বাড়িতে গিয়ে তাকে আর্থিক অনুদান প্রদান করেন। তানজিনা জানিয়েছেন, এই সহায়তা তাঁর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এখন তাঁর শিক্ষাজীবন নিয়ে কোনো উদ্বেগ নেই।

তানজিনার জন্ম হাটহাজারী উপজেলার সরকারহাট এলাকায় হলেও মাকে হারানোর পর তিনি তাঁর দিনমজুর বাবা আবুল কাশেমের সাথে ফটিকছড়ি উপজেলার দক্ষিণ রাঙ্গামাটিয়া গ্রামের নানার বাড়িতে বসবাস করছেন। তিনি ফটিকছড়ি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং ফটিকছড়ি সরকারি ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। সম্প্রতি, তানজিনা মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় ৪৭০৭তম স্থান অর্জন করে হবিগঞ্জ জেলা মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পান।

তানজিনার নানার বাড়িতে, নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও, তাঁর মামারা সবসময় সহায়তা করেছেন। বিশেষ করে, তানজিনার এক মামা, উপজেলা মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. মুনসুর আলম তাঁকে সবসময় লেখাপড়ায় সাহায্য করেছেন। তাঁর প্রতি সহায়তার কারণে তানজিনা আরো উৎসাহিত হয়েছেন। তানজিনার এই অর্জন নিয়ে তিনি গর্বিত।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ইউএনও মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী তানজিনার বাড়িতে গিয়ে তাঁকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন। এই ঘটনা এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে এবং অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইউএনওকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। অনেকেই মন্তব্য করেছেন, এমন ঘটনা খুবই বিরল, এবং ফটিকছড়ি বাসী গর্বিত যে, তাদের এলাকায় এমন মানবিক ইউএনও আছেন।

ইউএনও মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘‘দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থী তানজিনা কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে মেডিকেলে সুযোগ পেয়েছে। তবে অর্থের অভাবে তাঁর শিক্ষাজীবন নিয়ে শঙ্কা ছিল। বিষয়টি আমাদের নজরে আসায়, আমরা তাঁর ভর্তির জন্য সহায়তা করেছি। ভবিষ্যতে, আমরা সব মেধাবী শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়িয়ে, তাদের শিক্ষাজীবনের প্রতিবন্ধকতা দূর করতে কাজ করবো।’’

তানজিনা আলম বলেন, ‘‘মেডিকেলে পড়া আমার স্বপ্ন ছিল এবং এখন আমি হবিগঞ্জ জেলা মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছি। তবে, অর্থের অভাবে তা চালিয়ে যাওয়া খুবই কঠিন ছিল। কিন্তু উপজেলা প্রশাসন আমাকে আর্থিক সহায়তা করেছে, এবং ভবিষ্যতেও পাশে থাকার কথা জানিয়েছে। আমি তাঁদের কাছে কৃতজ্ঞ। আমি একদিন একজন ভালো চিকিৎসক হয়ে সমাজের সেবা করতে চাই এবং অন্যদের সাহায্য করতে চাই।

এফএস