কক্সবাজারের চকরিয়া থানার ওসিসহ চার পুলিশ কর্মকর্তা এবং চার কনষ্টেবলের বিরুদ্ধে নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু নিবারন আইনে মামলা করা হয়েছে। কক্সবাজার শহরস্থ পত্রিকা অফিস থেকে গভীর রাতে এক সাংবাদিককে অপহরণপূর্বক চকরিয়া থানায় তুলে নিয়ে হত্যাচেষ্টা, মারধর, লুটপাট ও চাঁদাদাবী শেষে সাজানো মামলা দিয়ে কারাগারে প্রেরণের অভিযোগে ২৭ জানুয়ারী (সোমবার) সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত কক্সবাজার এ মামলাটি দায়ের করেন ভিকটিম মনছুর আলম মুন্না।
তিনি ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার।
এ মামলায় চকরিয়া থানার ওসি মনজুর কাদের ভূঁইয়া, দুই এসআই যথাক্রমে ফরহাদ রাব্বি ইশান ও সোহরাব সাকিব, এএসআই পারভেজ এবং চার কনষ্টেবলকে আসামী করা হয়েছে ।
মামলার ফৌজদারী দরখাস্তে বাদী উল্লেখ করেছেন, ওসি মনজুর কাদের ভূঁইয়া চকরিয়া থানায় যোগদানের পর থেকে পেশাদারিত্বের বাইরে গিয়ে আসদাচরণ, ঘুষ-দূর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে জনসাধারণকে জিম্মি ও ব্ল্যাকমেইল করে টাকা আদায় ও হয়রানির অভিযোগ উঠে। এসব ব্যাপারে বিভিন্ন পত্রিকায় তথ্যবহুল সংবাদ প্রকাশিত হলে তার উপর ক্ষেপে গিয়ে অপহরন ও হত্যার হুমকি দেন ওসি মনজুর কাদের ভূঁইয়া।
ভিকটিম মনছুর বলেন, এরপর গত ২৫ ডিসেম্বর গভীর রাতে প্রধান আসামী চকরিয়া থানার ওসির নির্দেশে সুদুর চকরিয়া থেকে কক্সবাজার শহরের কৃষি অফিস সড়কের দৈনিক প্রতিদিনের কাগজের কক্সবাজার অফিসে এসে থেকে তাকে তুলে নিয়ে যায় এসআই ফরহাদ রাব্বি ঈশান, এসআই সোহরাব সাকিব ও এএসআই পারভেজসহ ৪ জন কনস্টেবলসহ চকরিয়া থানার একদল পুলিশ।
এ সময় পত্রিকা অফিসে রক্ষিত ২ টি ল্যাপটপ, ৪ টি পেনড্রাইভ ও অন্যান্য সামগ্রী লুট করে পুলিশ। এরপর তাকে চকরিয়া থানায় নিয়ে হত্যার উদ্যেশ্যে অমানুষিক নির্যাতন করেন আসামীরা। এভাবে ১ দিন আটকে রেখে মিথ্যা মামলা দিয়ে চালান দেন ওসি মনজুর কাদের ভূঁইয়া। প্রায় ২১ দিন পর জামিনে মুক্তি পান মনছুর।
বাদীর নিয়োজিত আইনজীবি সালাহ উদ্দীন আহমদ বলেন, সাজানো এ মামলায় ওসি নিজেই বাদী ও নিজেই রেকর্ডকারী কমকর্তা। তিনি আরো বলেন, উর্ধতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া গভীর রাতে নিজের আঞ্চলিক এখতিয়ার বহির্ভূত এলাকায় গিয়ে একজন সাংবাদিককে ধরে এনে নির্যাতন করা আইনের পরিপন্হী ও মানবাধিকার লংঘন।
অভিযুক্ত ওসি মনজুর কাদের ভূঁইয়া বলেন, মামলার বিষয়টি জেনেছি। নিজে বাদী হয়ে নিজেই মামলা রেকর্ডকারী কর্মকর্তা হওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, রেকর্ডকারী কর্মকর্তার অনুপস্থিতিতে থানার একজন কনস্টেবলও মামলা রেকর্ড করতে পারে। মামলা রেকর্ড হওয়ার সময় তিনি থানার বাইরে ছিলেন বলেও দাবী করেন।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী ওসমান গনি বলেন বিজ্ঞ বিচারক আকতার জাবেদ মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তপূর্বক ৪৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন।
এফএস