আমলাতন্ত্রের লাল ফিতার দৌরাত্ম্য ভেঙে দিতে হবে, আর সেটা সম্ভব হবে জনগণের শক্তির ভেতর দিয়েই বলে মন্তব্য করেছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি।
সাকি বলেন, একটি রক্তাক্ত গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ স্বৈরাচারমুক্ত হয়েছে। কিন্তু স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থা এখনো সমাজের বিভিন্ন স্তরে সক্রিয়। যখনই একটা রাজনৈতিক ব্যবস্থা কতগুলো প্রশাসকের হাতে ছেড়ে দেয়া হয়, তখন সেটা রাজনৈতিক ব্যবস্থা থাকে না। এটা উপনিবেশিক শাসনের ধারাবাহিকতা। এটা ভাঙ্গার জন্যই সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। জনগণের ঐক্য থাকলেই এ ধরনের শাসন ব্যবস্থা ভেঙে দেওয়া সম্ভব। তখনই সংবিধান, প্রশাসক, সমস্ত নির্বাচন ব্যবস্থা ও আইনকানুন সংস্কার হবে। তখন লাল ফিতার দৌরাত্ম্য বন্ধ হবে ও জনগণ তার সংকটের কথা রাষ্ট্রকে বলতে পারবে।’
শনিবার (২১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬ টার দিকে নগরীর টাউনহল প্রাঙ্গণের মুক্তমঞ্চে গণসংহতি আন্দোলন ময়মনসিংহের আয়োজনে রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তরে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠার দাবিতে ‘কেমন বাংলাদেশ চাই’ শিরোনামে এক গণসংলাপে এসব কথা বলেন তিনি।
জোনায়েদ সাকি আরও বলেন, শেখ হাসিনা যে ব্যবস্থার ওপর দাঁড়িয়ে দুঃশাসন কায়েম করেছে সেই ব্যবস্থা এখনো বহাল তবিয়তেই রয়েছে। সংবিধানে লেখা থাকলেও ৫৩ বছরে জনগণ ক্ষমতার কেন্দ্রে থাকতে পারেনি। কারণ বিদ্যমান রাজনৈতিক বন্দোবস্তো ফ্যাসিস্ট, কর্তৃত্ববাদী বন্দোবস্ত। এর মধ্য দিয়ে যারাই ক্ষমতায় যায় তারাই ক্ষমতা ব্যবহার করে ফ্যাসিবাদ-কর্তৃত্ববাদ কায়েম করে। কি কি করা যায় তার সর্বোচ্চটা শেখ হাসিনা দেখিয়ে দিয়ে গেছে। কাজেই সেই ব্যবস্থার বদল ঘটাতে হবে। সেজন্য দরকার গণতান্ত্রিক সংবিধান। যে সংবিধানে ক্ষমতার কাঠামো হবে গণতান্ত্রিক। যে সংবিধান গ্যারান্টি দিবে জনগণ ক্ষমতার মূলকেন্দ্র।
রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যে সাকি বলেন, আজকে যে নতুন বাংলাদেশ, সেই বাংলাদেশে যারা রাজনৈতিক দল হিসেবে আছেন, নেতৃত্ব দিতে চান, তারা নিজেদেরকে জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানের আকাঙ্খা অনুযায়ী গড়ে তুলবেন, এটাই মানুষ প্রত্যাশা করে। যদি তা না করেন, তবে পরিণতি কি হবে তা জুলাই-আগস্ট থেকে শিখে নিয়েন।
এসময় গণসংহতি আন্দোলন ময়মনসিংহ জেলার আহবায়ক মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব এ আর এম মুসাদ্দিক আসিফের সঞ্চালনায় সংলাপে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন- গণসংহতি আন্দোলন রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য শামসুল আলম, সদস্য মনির উদ্দীন পাপ্পু, সদস্য দেওয়ান আব্দুর রশিদ নিলু ও নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেলসহ স্থানীয় বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ প্রমূখ।
এমআর