পশ্চিম ও মধ্য বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার ফলে উপকূলীয় অঞ্চলে বিরূপ আবহাওয়া বিরাজ করছে। শনিবার ২১ ডিসেম্বর সকাল থেকে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি শুরু হয়েছে ও আকাশ মেঘাচ্ছন্ন রয়েছে। এ নিয়ে পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার আলু চাষীরা চরম উদ্বেগের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। এ বছর উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের চাষিরা অধিক লাভের আশায় ৩৫০ হেক্টর জমিতে আলু চাষে করছেন।
চাষিরা জানান, এবার আমন ধান কাটার পর দ্রুত জমি প্রস্তুত করে ডায়মন্ড ও কার্টিনাল জাতের আলু রোপণ করা হয়েছে। এসব জাত ৬০ থেকে ৭০ দিনের মধ্যে উত্তোলনযোগ্য হয় এবং তুলনামূলক কম সময়ে লাভবান হওয়ার সুযোগ দেয়। তবে এবছর বীজ, সার এবং শ্রমিকের খরচ বেড়ে যাওয়ায় চাষের খরচও বৃদ্ধি পেয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে রতনদি, মুরাদনগর, চরখালীসহ বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে আলু চাষী আনিসুর রহমান, মোশারেফ চৌকিদার, মিজানুর রহমানসহ একাধিক চাষীর সাথে কথা হয়। তারা জানান, বীজের দাম প্রতি কেজি ৭০-৮০ টাকা হওয়ায় খরচ বেড়েছে। এছাড়া শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ৫০০-৭০০ টাকা। তবে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে তারা বাম্পার ফলনের আশা করছেন। গত বছর আলুতে ভালো দাম পাওয়ায় এ বছরও তারা চাষে মনোযোগী হয়েছেন। তবে বর্তমানে বিরূপ আবহাওয়া বিরাজ করায় তারা কিছুটা শঙ্কিত। এসময় দেখা যায় চাষিদের কেউ কেউ জমি খড়কুটো দিয়ে ঢাকতে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন। আবার কেউ প্রস্তুতকৃত জমিতে আলুর বীজ রোপণ করেছেন।
সদর ইউনিয়নে আলু চাষ করেছেন মো. জহিরুন্নবী। তিনি জানান, গত বছর ১.৫ বিঘা জমিতে চাষ করে প্রায় ৫০ হাজার টাকা লাভ করেছিলেন। এবার তিনি ১০ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছেন। তবে বীজ ও অন্যান্য উপকরণের খরচ বেশি হওয়ায় এবার ঝুঁকিও বেশি বলে মনে করছেন।
উপজেলা অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. আকরামুজ্জামান জানান, গলাচিপার বেলে ও দোঁ-আশ মাটি আলু চাষের জন্য উপযোগী। এবছর প্রায় ৩৫০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ করা হয়েছে। কৃষি বিভাগ চাষিদের পরামর্শ ও সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চাষিরা ভালো লাভবান হবেন।
এদিকে চাষিরা দাবি জানিয়েছেন, উৎপাদিত আলু সরকার সরাসরি তাদের কাছ থেকে ক্রয় করলে তারা আরও লাভবান হবেন এবং ভবিষ্যতে আলু চাষে আরও আগ্রহী হয়ে উঠবেন।
এফএস