জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার চরআমখাওয়া ইউনিয়নের মৌলভীরচর এলাকার আলহাজ্ব রহমত আলীর ছেলে ইসমাইল (৩৪) শরীয়ত সম্মত ভাবে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয় সানন্দবাড়ির লম্বা পাড়া গ্রামের আব্দুল জলিলের কন্যা মোছাঃ কনিকা আক্তার কনার (৩২) সাথে,১৪ বছর অতিবাহিত হয় ইসমাইল- কনা দম্পতি। মাঝে মাঝে টুকিটাকি ঝগড়া-বিবাদ, পাশাপাশি মান-অভিমান। এভাবেই চলতে থাকে তাদের সংসার জীবন।
বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান ইসমাইল। বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার দু'বছর পরেই গর্ভধারিণী মাকে অকাল হারিয়ে ফেলেন। সংসার জীবনে অভাব অনটন না থাকলেও মায়ের অভাবটা যেন থেকে যায় তার মধ্যে। মায়ের অপূর্ণ ভালোবাসার কারনে উচ্চ শিক্ষা অর্জন থেকে বঞ্চিত হন তিনি। বাবার অসুস্থতা জনিত কারণেই অল্প বয়সে সংসারের হাল ধরতে হয় ইসমাইল কে।
প্রতিবেশীরা জানায়, ইসমাইল সহজ সড়ল প্রকৃতির ছেলে। আমরা কখনো তাকে ঝগড়া-বিবাদে লিপ্ত হতে দেখিনি। লোকমুখে আমরা শুনেছি স্ত্রীকে তালাক দিয়েছে। তবে কেন দিয়েছে এ কথা আমরা বলতে পারব না।
ইসমাইলের ভাষ্য, আমার স্ত্রী একজন দুষ্কৃত প্রকৃতির, বৃদ্ধ বাবাকে দেখভাল করতে নারাজ। একাধিকবার বুজ পরামর্শ ও গ্রাম্য সালিশ বৈঠক হয় আমার বউকে নিয়ে। সে আমার সংসার করতে অপারগতা প্রকাশ করলে আমি তাকে শরীয়ত সম্মতভাবে তালাক দিয়ে দেই।
ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে তালা দেওয়ার বিষয়ে ইসমাইলকে জিজ্ঞেস করলে জানান , আমার দোকানে বিকাশ ও নগদের এজেন্সি থাকায় ড্রয়ারে ২ লক্ষাধিক টাকা ছিল। আমি প্রকৃতির ডাকে দোকানের বাইরে থাকার সুবাদে আমার স্ত্রীর দোকানের ভিতরে ঢুকিয়ে কর্মচারীদের বের করে দিয়ে টাকা পয়সা লুট করে নিয়ে যায় এবং দোকানে তালা মেরে দেয়।
সানন্দবাড়ী বাজারের উভয় পাশের প্রত্যক্ষদর্শী ব্যবসায়ীরা জানান, ইসমাইল দোকানে না থাকায় তার বউ কয়েকজন লোক সহ দোকানে প্রবেশ করতে দেখি।প্রাথমিকভাবে আমরা ভেবেছিলাম সেগুলো দোকানের কাস্টমার , পরবর্তীতে দেখতে পেলাম দোকানের কর্মচারীদেরকে বের করে দিয়ে নতুন করে তালা লাগিয়ে দিচ্ছেন। আমরা কাছাকাছি আসতে তারা দ্রুত শটকে যায়।
কনা ইলেকট্রনিক্সের স্বত্বাধিকারী আবুল কালাম আজাদ অভিযোগ করে বলেন , দীর্ঘদিন ধরে তাদের মধ্যে কলহ বিরহ লেগেই চলছে। প্রতিদিনের ন্যায় আমার ভাগিনা ইসমাইল দোকানের কেনা -বেচা শেষে বাড়িতে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়। স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য সিরাজুল ইসলাম, আব্দুল মান্নান বিপি ও স্কুল শিক্ষক বাবুল আক্তার মীমাংসার জন্য ইসমাইলকে তার শ্বশুর বাড়িতে নিয়ে যায়।
শশুর পক্ষের লোকজন তাকে নতুন করে ৫ লক্ষ টাকা দেনমোহর ধার্য করে বিবাহ করার জন্য চুক্তিপত্র করতে বলেন। এতে ইসমাইল রাজি না হলে তাকে বেধড়ক মারপিট শুরু করে। প্রাণে বাঁচার লক্ষ্যে তিনি বাড়ির পিছনের দরজা ভেঙ্গে বের হয়ে যায়।
এ বিষয়ে দেওয়ানগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ নাজমুল হাসান জানান, অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত অবস্থা গ্রহণ করব।
এমআর