চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার আলীনগর ও রহনপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা দুজন শিক্ষার্থী সদ্য মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য মনোনীত হয়েছে। অর্থাভাবে সুমাইয়া ও হাবিবার মেডিকেলে ভর্তি নিয়ে শঙ্কার খবরটি এলাকায় বিভিন্নভাবে প্রকাশিত হলে গোমস্তাপুর উপজেলা প্রশাসনের নজরে আসে। এরই ধারাবাহিকতায় তাদেরকে ডেকে আর্থিক সহায়তা করেছেন গোমস্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিশাত আনজুম অনন্যা।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সকালে মেধাবী শিক্ষার্থী সুমাইয়া ও হাবিবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে এসে তার সাথে সাক্ষাৎ করে। তাদের সাক্ষাৎ এর বিষয়টি সমন্বয় করেন উপজেলা প্রেসক্লাব, গোমস্তাপুর এর সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লাহ আহমদ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, সুমাইয়া খাতুনের মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রহনপুর জ্ঞানচক্র একাডেমির পরিচালক ও রহনপুর মহিলা কলেজের প্রভাষক সারওয়ার হাবিব, হাবিবা খাতুনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আলীনগর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মোঃ আব্দুল্লাহ, সাংবাদিক নাহিদ , নুর মোহাম্মদ, সামিরুল ইসলাম ও সুমাইয়ার পিতা সাজেমান আলী। সুমাইয়া রহনপুর ইউনিয়নের লক্ষীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক এর গন্ডি পেরিয়ে রহনপুর জ্ঞানচক্র একাডেমী থেকে এসএসসি পাস করে। এরপর রহনপুর ইউসুফ আলী সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হয়ে বাসায় বসে মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করে।
সুমাইয়া জানায়, ভর্তির জন্য সে কোন কোচিংয়ের সাহায্য নেয় নাই। সে বাসায় বসে নিজের চেষ্টায় মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে নওগাঁ মেডিকেল কলেজে চান্স পেয়েছে। তার নম্বর হচ্ছে ৭৫.৭৫ এবং মেধা তালিকায় ¯হান ৩৭৭০। সুমাইয়া আরো বলে, তার গরিব কৃষক পিতা মোহাম্মদ সাজেমান আলী, মাতা মোসাম্মদ হাবিবা বেগম ও তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের উৎসাহে তার এতদূর আসা। সে সকলের নিকট দোয়া কামনা করেছে। অপরদিকে হাবিবা তার লিভার সিরোসিস এ আক্রান্ত পিতা মোঃ মোজাহার বিশ্বাস এর বড় সংসারে থেকেও শুধু লেখাপড়া করে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজে চান্স পেয়েছে। হাবিবা জানায়, আমি শুরু থেকে মেডিকেলে পড়ার স্বপ্ন দেখেছি। প্রথমবার না পারলেও এবার আমি ভর্তির সুযোগ পেয়েছি। গতবার চান্স না পেয়ে অনেকে আমাকে কটু কথা শুনিয়েছে। কিন্তু আমি হতাশ না হয়ে পুনরায় দ্বিগুন উৎসাহে পরিশ্রম করে কৃতকার্য হয়েছি। হাবিবা আলীনগর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও রহনপুর মহিলা কলেজ থেকে এইএসসি পরীক্ষায় কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হয়েছে। তার প্রাপ্ত নম্বর ৮০.২৫ ও মেধাক্রম ২৫৩৭। সে জানায়, আমার সাফল্যে পিতা-মাতা, ভাই-বোন ও শিক্ষকরা সর্বোচ্চ সহযোগিতা করেছেন। এখন স্বপ্ন পূরণে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।
গোমস্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিশাত আনজুম অনন্যা বলেন, শিক্ষার্থী সুমাইয়া ও হাবিবার ফলাফলে গোমস্তাপুর উপজেলাবাসী গর্বিত। দরিদ্র পরিবারে জন্ম নেওয়া এ দুজন শিক্ষার্থীর মেডিকেল এ ভর্তি ফি সহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচের যোগান দিবে গোমস্তাপুর উপজেলা প্রশাসন। তাছাড়া তাদের পাশে সবসময় থাকার বিষয়ে তিনি দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
এফএস