কিশোরগঞ্জের ভৈরব বাজারে মহিলার ভ্যানিটি ব্যাগ খুলে দশ হাজার টাকা চুরি করে নিয়ে যাবার সময় নারগিছ নামে (২৮) কে হাতে নাতে ধরে ফেলেন ভুক্তভোগী জনৈক নারী। আজ দুপুর বারটার সময় ভৈরব বাজারের নিউ পৌরসভার সামনে এ ঘটনা ঘটে। পরে বাজারের লোকজন আটককৃত নারীকে পৌরসভার ভেতরে কিছুক্ষন আটকে রাখেন। খবর পেয়ে ভৈরব বাজার শহর পুলিশ ফাঁড়ির এ টি এস আই সাইফুল ইসলাম এসে ফাঁড়িতে নিয়ে যায়। আটককৃত নারগিছ হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর থানাধিন বিষ্নপুর গ্রামের লিটন মিয়ার স্ত্রী।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অভিযোগকারি নারী বলেন, আজ সকাল এগারটার দিকে কেনা কাটার জন্য আমরা দুই বোন বাজারে আসি। পৌরসভার সামনে পৌছালে হঠাৎ আমার ব্যাগে কেউ হাত দিচ্ছে অনুভব করে চোরের হাত ধরে দেখি সে একজন নারী। ব্যাগের ভেতর থেকে ততক্ষনে দশ হাজার টাকা নিয়ে গেছে। পরে ওই চোরকে ধরে প্রথমে পৌরসভার ভেতর নিয়ে আটকিয়ে পুলিশে খবর দেই। খবর পেয়ে পুলিশ এসে চোরকে থানায় নিয়ে যায়। আটকের পর ফাঁড়িতে চুরির অভিযোগ নিয়ে আরো পাঁছ থেকে সাতজন উপস্থিত হয়ে চুরির অভিযোগ দিতে এসেছিল।
জানা যায়, ভৈরব বাজারে সম্প্রতি চোরি ছিনতাইয়ের ঘটনা বেড়েই চলেছে। বিশেষ করে সপ্তাহের বুধবার হাটের দিন এসকল চুরি ছিনতাইয়ের ঘটনা বেশি ঘটছে। গত ১৮ ডিসেম্ভর রোজ বুধবার বিকালে নিউমার্কেটের সামনে থেকে জনৈক মহিলার ১ ভড়ি ৩ আনা ওজনের স্বর্ণের গলার চেইন চুরি করে নিয়ে যায় চোর চক্রের সদস্যরা। এ দিনই রাত আটটার সময় নদীরপাড় এলাকা থেকে এক সাংবাদিকের মটর সাইকেল চুরি হয়। এর সপ্তাহ খানেক আগে নদীপাড় এলাকার রিভারভিউ হোটেলের সামনে থেকে সকাল বেলায় এক ব্যবসায়ীকে ধারালো অস্ত্র ঠেকিয়ে টাকা ও মোবাইল ছিনিয়ে নেয় ছিনতাইকারিরা।
এমন ঘটনা ভৈরব বাজারে অহরহ ঘটতে থাকলেও তা প্রতিরোধে কার্যকরী তেমন কোন ভুমিকা নিচ্ছেনা শহর ফাঁড়ির পুলিশ এমনটাই বলছেন ভুক্তভোগীসহ অধিকাংশ ক্রেতা বিক্রেতারা। অপরাধী সনাক্ত এবং আটক হলেও যদি বাদী না পাওয়া যায় তাহলেকি থানা থেকে অপরাধিকে ছেড়ে দেওয়া যায় ? বাদীর অভাবে যদি মামলা না হয় অপরাধেিক আইনের আওতায় না আনা যায় তাহলেতো অপরাধ মূলক কর্মকান্ড বাড়তেই থাকবে। আমরা যতটুকু জানি কোন অরাধমূলক কর্মকান্ডের ঘটনায় আটককৃত অপরাধীদেকে আটকের পর যদি বাদী না থাকে সেক্ষেত্রে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা দিয়ে অপরাধীকে আইনের আওতায় নিয়ে যায়। আজ দেখলাম বাদী না পাওয়ায় আটককৃত নারী চোরকে শহর ফঁড়ি থেকে থেকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
আটককৃত নারগিছ বলেন, আমার বাড়ি মাধবপুরে। প্রায় একমাস পূর্বে ভৈরবেরই লোকমান নামে যুবকের সাথে পরিচয় হয়। সেও এ পেশায় জড়িত। আজও সে আমার সাথেই ছিল। ব্যাগের চেইন আমি খুলেছি ঠিকই কিন্তু টাকা ওরা নিয়ে গেছে। ভুক্তভোগী নারীর কাছ থেকে বিকাশ নাম্বার নিয়ে নারগিছের পিতাকে দিলে দশ হাজার টাকা ফেরৎ দেওয়ার আশ্বাস দেয়।
শহর ফঁড়ির এ টি এস আই সাইফুল ইসলাম বলেন, আমরা মামলা নিতে চেয়েছিলাম কিন্তু ওই মহিলা মামলা দিতে রাজী নয়। অভিযোগকারি নারী তার টাকা ফেরৎ পাওয়ার আশ্বাসে অভিযুক্ত নারীকে থানা এক পর্যায়ে জোড় পুর্বকই নিয়ে গেছে। বাদী মামলঅ না দিলে আমরা কি করব। বাজারে চুরি ছিনতাইয়ের ঘটনা বেড়ে গেছে। মাসে এমন দশ থেকে বারটা অভিযোগ পাচ্ছি।
বাজারে চুরি ছিনতাইয়ের ঘটনা বেড়ে যাওয়ার ব্যপারে কথা হলে শহর ফাঁড়ির ইনচার্জ আমিন আল মেহেদী বলেন, আমি এসেছি মাত্র কয়েক দিন হল। দ্রুত সময়ের মধ্যেই চুরি ছিনতাই রোধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। আজকের ঘটনায় অভিযোগকারি মামলা না দেওয়ায় আটককৃত চোরকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
এমআর